কিডনি কিন্তু একদিনে নষ্ট হয় না। এটি ধীরে ধীরে নষ্ট হওয়ার দিকে এগিয়ে যায়। এমনকী ভুক্তভোগী অনেক সময় নিজেও জানেন না যে তার কিডনি নষ্ট হতে চলেছে।
তবে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায় শরীরে। সেসব লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখলে বোঝা সম্ভব হয়। আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের একটি হলো কিডনি। এটি ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। আমাদের অনেক ক্ষতিকর অভ্যাস এটি নষ্ট করতে পারে। কিছু খাদ্য ও পানীয়ের মধ্যে থাকা ক্ষতিকারক জিনিস থাকে, যা কিডনি সম্পূর্ণরূপে ফিল্টার করতে পারে না। যে কারণে কিডনি নষ্ট হতে শুরু করে।
পা ফোলা: কোনো কারণ ছাড়া মাাঝে মাঝেই পায়ে ফোলাভাব হলে সতর্ক হোন। হতে পারে তা কিডনি নষ্ট হওয়ার লক্ষণ। কারণ কিডনি ফেইলিওরের ফলে হিমোগ্লোবিনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, এর প্রভাব পড়ে পায়ে। তাই পায়ে ফোলাভাব দেখা দিলে তা অবহেলা করবেন না। এমনটা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ক্ষুধা কমে যাওয়া: ক্ষুধা কমে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে নানা কারণে। তবে অনেক সময় এটি হতে পারে কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার লক্ষণ। কারণ পেটের ভেতরের বর্জ্য পদার্থ বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থে পূর্ণ থাকে। এরকম অবস্থায় বমি হতে পারে এবং ক্ষুধার অনুভূতি কমে যায়। সেইসঙ্গে হতে পারে পেটে ব্যথাও।
হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া: কিডনিতে সমস্যা হলে সে কারণে টক্সিন জমতে পারে মস্তিষ্কে। এরকম পরিস্থিতিতে কাজের প্রতি একাগ্রতা কমতে থাকে। কখনও কখনও হঠাৎ করেই অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিলে সতর্ক হওয়া জরুরি। এটি হতে পারে কিডনি অকেজো হয়ে যাওয়ার লক্ষণ।
শ্বাসকষ্ট: কেবল হার্টের সমস্যা থাকলেই শ্বাসকষ্ট হয় তা নয়, আপনার কিডনি যদি সঠিকভাবে বর্জ্য অপসারণ করতে না পারে তাহলে তা ফুসফুসেও প্রবেশ করতে পারে। সেসব বর্জ্য পদার্থ ফুসফুসে জমতে শুরু করলে ফুসফুস ফুলে ওঠে এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ত্বকের নিচে বর্জ্য পদার্থ জমতে শুরু করলে ত্বকে ফুসকুড়ি, জ্বালা এবং চুলকানি দেখা দেয়। ত্বকেও প্রভাব ফেলে কিডনির সমস্যা।
প্রস্রাবে সমস্যা: কিডনির সমস্যার অন্যতম লক্ষণ হতে পারে প্রস্রাবের সমস্যা। কিডনি সরাসরি প্রস্রাবের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রস্রাবের মাধ্যমে কিডনি শরীর থেকে সব ধরনের বর্জ্য পদার্থ দূর করে। কিন্তু কিডনি নষ্ট হতে শুরু করলে প্রস্রাবের পরিমাণ, রং ও গন্ধে পরিবর্তন আসে। কিডনির সমস্যা দেখা দিলে সব প্রোটিন প্রস্রাব থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করে। যে কারণে প্রস্রাবে ফেনা তৈরি হতে শুরু করে। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে তাই সতর্ক হোন। দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ