চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪

জটিলতা এড়াতে নিয়ন্ত্রণ করুন ইউরিক এসিডের মাত্রা

অনলাইন ডেস্ক

২৭ জুলাই, ২০২৩ | ১২:১৫ পূর্বাহ্ণ

ইউরিক এসিড আমাদের রক্তের এক ধরনের বর্জ্য। আমাদের দেহে হিমোগ্লোবিন, রক্তের যাবতীয় উপাদানের যেমন নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে, ঠিক তেমনি ইউরিক এসিডও থাকে নির্দিষ্ট পরিমাণে।

ইউরিক এসিডকে কিডনি যখন মূত্রের মাধ্যমে সঠিকভাবে বের করতে পারে না, তখন রক্তে ইউরিক এসিড জমতে থাকে। দেহ যদি নির্দিষ্ট মাত্রার তুলনায় অতিরিক্ত হারে ইউরিক এসিড তৈরি করে এবং সঠিকভাবে নির্গমন হতে না পারে, তখন রক্তে বাড়তে থাকে ইউরিক এসিডের মাত্রা।

আমাদের রক্তের ইউরিক এসিডের মাত্রা হলো ৩.৫ থেকে ৭.২ মিলিগ্রাম পার ডেসিলিটার (মিলি/ডিএল)। ৭.২-এর বেশি হয়ে গেলে আমরা ধরে নিই, ইউরিক এসিড বেড়ে গেছে। বৃদ্ধি পাওয়া ইউরিক এসিড রক্তে তৈরি করে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা।

কারণ:

১) দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভোগা
২) রক্তে পিউরিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়া
৩) হঠাৎ অতিমাত্রায় খাবার নিয়ন্ত্রণ করা
৪) কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
৫) পারিবারিক ইতিহাস
৬) পানি খুব কম পরিমাণে খাওয়া
৭) ফ্যাটি লিভারের সমস্যা থাকা।

এ ছাড়া ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের দেহে ইউরিক এসিড বৃদ্ধি পেতে পারে।

লক্ষণ:
১) প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোনো লক্ষণ ধরা পড়ে না। তবে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে হাড়ের বিভিন্ন জয়েন্টে জমে যেতে পারে। তখন জয়েন্টের চারপাশে ব্যথা, শক্ত লালচে হয়ে ফুলে যেতে পারে।
২) হাঁটা-চলাতে কষ্ট হয়।
৩) জয়েন্টের চারপাশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে জ্বর জ্বর ভাব থাকে।

সচেতনতা:
১) রেডমিট, অতিমাত্রায় ফাস্ট ফুড, সামুদ্রিক খাবার, অ্যালকোহল, অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় বাদ দিতে হবে।
২) ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির অসুখ, কোনো হরমোনজনিত অসুখ থাকলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৩) ইউরিক এসিড বৃদ্ধি পেলে টমেটোর রস, ফুলকপি, মাশরুম, সামুদ্রিক শৈবাল, সামুদ্রিক মাছ, অতিমাত্রায় লালচে ও গ্রিল মাংস বাদ দিতে হবে।
৪) কোমল পানীয় বাদ দিয়ে নিয়মিত দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করা উচিত, তবে কিডনির অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তিরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া পানি পান করবেন না।
৫) বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তবে হঠাৎ অতিমাত্রায় খাবার নিয়ন্ত্রণ অনুচিত। আত্মীয়স্বজন কারো বাতের ব্যথা বা ইউরিক এসিড বেড়ে যাওয়ার ইতিহাস থাকলে আপনাকে খাদ্যাভাস, জীবন যাপনের প্রতি যথেষ্ট মনোযোগী হতে হবে।
৬) হাত-পা বা দেহের কোথাও মাংসপেশি বা কোনো জয়েন্টে লালচে হয়ে ফুলে গেলে অথবা শক্ত অনুভূত হলে, অবহেলা করা অনুচিত।
৭) নিজের উচ্চতা ওজন, শারীরিক সক্ষমতা বুঝে স্থূলতার রোগীদের তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। হঠাৎ অতিমাত্রায় খাবার নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে আস্তে আস্তে খাবার নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।

পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. ফরহানা মোবিন, মেডিক্যাল অফিসার, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল, ঢাকা।

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট