চট্টগ্রাম শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

যেসব কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে

২৮ অক্টোবর, ২০২২ | ৪:৪০ অপরাহ্ণ

বিশ্বব্যাপী খুবই কমন একটি সমস্যা বা রোগের নাম স্ট্রোক। অনেকেরই ধারণা- স্ট্রোক হচ্ছে হৃদযন্ত্রের কোন সমস্যা, তবে এটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে স্ট্রোক মস্তিষ্কের একটি রোগ। তাই একে বিশেষত ব্রেইন স্ট্রোক বলা হয়। এটি সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে; একটি ‘হ্যামারেজিক’ এবং অন্যটি ‘ইস্কিমিক’।

হ্যামারেজিক স্ট্রোক ব্রেন হ্যামারেজ, সাব-অ্যারাকোনয়েড হ্যামারেজ বা ইনট্রাসেরিব্রাল হ্যামারেজ হিসেবেও পরিচিত। এর ফলে সাধারণত মস্তিষ্কের রক্ত চলাচলের নালি ছিঁড়ে যায়, যা মুহূর্তেই মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। অন্যদিকে, ইস্কিমিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কের ভেতরে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সহজভাবে বলতে গেলে যখন মস্তিষ্কের কোন অংশে রক্ত সরবরাহ ব‌ন্ধ হয়ে মস্তিষ্কের কোষগুলো মরে যায়, তখন এটি ঘটে।

 

আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট যাচাই করে একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে স্ট্রোকের হার প্রতি হাজারে ৭-১৮ জন এবং প্রায় ৮ শতাংশ মানুষ স্ট্রোকের ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে কী কারণে স্ট্রোক হয় বা হতে পারে? চলুন জেনে নেওয়া যাক।

অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ-রক্তচাপ স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারণ। যেসব রক্তচাপের রোগী নিয়মিত ওষুধ সেবন করে না, অথবা একটু সুস্থ অনুভব করলে ওষুধ বন্ধ করে দেয়, তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এর আরেকটি কারণ হলো- ধূমপান, তামাক, গুল, জর্দা, মাদক ইত্যাদি সেবন। শরীরে অসংখ্য রোগের মতো এসবের ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

এছাড়া অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে। এর ফলে অনেকে বিভিন্ন ওষুধ সেবন করে এবং সেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, রক্তে অতিরিক্ত চর্বি বা অতিমাত্রায় কোলেস্টেরলের উপস্থিতি, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, স্থূলতা বা অতিরিক্ত মোটা হওয়া, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া ইত্যাদি কারণেও স্ট্রোক হতে পারে।

 

কিছু কিছু ওষুধ আছে যা রক্তজমাট বাঁধার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। উদাহরণস্বরূপ- অ্যাসপিরিন, ক্লোপিডগ্রেল ইত্যাদি ওষুধ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়ায়। আবার যেসব রোগী পূর্বে বিভিন্ন হৃদরোগ যেমন- ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ, হার্টের ভাল্বে সমস্যা, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, ইতোপূর্বে মিনি স্ট্রোক ইত্যাদি সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন তাদের বড় ধরনের স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। অনেকের বংশগত ইতিহাস থাকার কারণেও স্ট্রোক হতে পারে।

এই কারণগুলো সম্পর্কে অবগত থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়ানো সহজ হয়ে যায়। সুতরাং, আমাদের সকলের উচিৎ স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে মনোযোগী হয়ে স্ট্রোকের মতো জটিল রোগ প্রতিহত করা।

লেখক : সহযোগী কনসালটেন্ট, নিউরোলজি বিভাগ, এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম

 

পূর্বকোণ/এএস

শেয়ার করুন