চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

এইচ এস কোডের অনিচ্ছাকৃত ভুলে জরিমানা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হোক

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ মে, ২০২৩ | ১২:১১ অপরাহ্ণ

চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেছেন, বর্তমানে কাস্টমস শুল্ক সংক্রান্ত প্রধানতম সমস্যা হলো এইচ এস কোড জটিলতা। এর কারণে বিভিন্ন রকম শুল্ক জরিমানা আরোপ এবং সময়ক্ষেপণের ফলে আমদানিকারকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।  বিশ্বব্যাপী ৬ ডিজিটের এইচ এস কোড একই রকম। পরের ২ ডিজিট বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে হয়। দেশে প্রত্যেক অর্থবছরে বাজেটে অর্থায়নে কিছু কিছু এইচ এস কোড নতুনভাবে তৈরি করা হয়, যা পরে ট্যারিফ বুকে সংযোজন করা হয়। এটি সম্পূর্ণ ম্যানুয়েল হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে সঠিক এইচ এস কোড নির্ণয় করা জটিল হয়ে পড়ে। এতে ভুলভ্রান্তি এবং তৎপরবর্তী জরিমানার প্রসঙ্গ চলে আসে। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের কারণে জরিমানা আরোপ সম্পূর্ণরূপে রহিত করতে হবে। এমন ভুল হলে শুল্কায়ন কর্মকর্তা সংশোধন করে দিয়ে শুল্কায়ন করতে পারেন। তাহলে কর ফাঁকির অভিযোগ থেকে আমদানিকারকরা রক্ষা পাবেন। এছাড় এইচ এস কোডের জটিলতা নিরসনকল্পে একটি সমন্বিত ন্যাশনাল অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা যেতে পারে। যার মাধ্যমে পণ্যের সঠিক বর্ণনা দেয়ার সাথে সাথে অটো সিস্টেমের মাধ্যমে তার সঠিক এইচ এস কোড চিহ্নিত হবে।

 

পূর্বকোণ প্রতিনিধির সাথে আসন্ন বাজেট (২০২৩-২৪) প্রসঙ্গে আলাপকালে ‘বাজেট ভাবনা’য় মাহবুবুল আলম এসব কথা বলেন।

 

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাসায়নিক পরীক্ষাগারে ল্যাব এক্সপার্ট ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কাস্টমসের নানা বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য অল্টারনেটিভ ডিসপিউট রিসলুয়েশন (এডিআর) পদ্ধতি কার্যকর করার ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া আমদানি সহজীকরণের মাধ্যমে দেশের শিল্পোন্নয়নে বাধা দূরীকরণে সাফটা সার্টিফিকেট সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করা উচিত। বন্দরের কনটেইনার স্টোর রেন্ট দ্বিগুণ করা হয়েছে। সেটি পূর্বের চার্জে আদায়ের ব্যবস্থা করা উচিত। নিয়ম অনুযায়ী সিপিসি ভুল হলে তা কাস্টমস কর্মকর্তা সংশোধন করে দিবেন এমন ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এছাড়া চট্টগ্রামে অবস্থিত শিল্প কারখানার ক্ষেত্রে চুয়েটের সনদপত্র গ্রহণ করা এবং শুল্ক মূল্যায়ন বিধিমালা-২০০০ এর প্রতিপালন হওয়ার ব্যবস্থা বাজেটে রাখা চাই। কাস্টমস শুল্ক সংক্রান্ত ৯০টি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে।

 

একটি ব্যবসা বান্ধব জাতীয় বাজেট প্রণয়নে কাস্টমস শুল্ক সংক্রান্ত ৯০টি, ভ্যাট সংক্রন্ত ৩৬টি, আয়কর সংক্রান্ত ৫৪টি এবং অন্যান্য আরো ৯টি প্রস্তাবনা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পাঠানো হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম।

 

ওইসব প্রস্তাবনায় ব্যক্তিকর অব্যাহতি সীমা ৩ লাখ টাকা হতে ৫ লাখ টাকায় উন্নীত করে নতুন শ্রেণি বিন্যাশের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া আয়করের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের মোট লাভ নির্ধারণ প্রক্রিয়া কল্পনাপ্রসূত না করে রাজস্বভিত্তিক করা প্রয়োজন। এসব ক্ষেত্রে করদাতার আয়-ব্যয়ের নিজস্ব হিসাব পরীক্ষার ক্ষেত্রে নমনীয় ও সহজ পদ্ধতির বিধান করা প্রস্তাব করা হয়েছে। যাতে করদাতা হয়রানির শিকার না হন এবং কর প্রদানে উদ্বুদ্ধ হন। এছাড়া প্রতিবছরেই অগ্রিম যে আয়কর কর্তন করা হয় তা পরে সমন্বয় করা হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই অগ্রিম কর্তন করা আয়কর চূড়ান্ত আয়করের চেয়ে বেশি হয়। কিন্তু বিধান অনুযায়ী সেটি আর পরবর্তী অর্থবছরের সাথে সমন্বয়ের সুযোগ থাকে না। এটি সংশোধন করা প্রয়োজন। এছাড়া কল-কারখানাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সরবরাহের জন্য বাজেটে একটি ভালো বরাদ্দ রেখে এসব সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন। যাতে কারখানার উৎপাদন বাধাগ্রস্ত না হয়।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট