চট্টগ্রাম রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

নষ্ট রোধ করে রপ্তানি হবে আম

নিজস্ব প্রতিবেদক 

২১ মার্চ, ২০২২ | ৮:৪৭ অপরাহ্ণ

দেশে মানসম্মত আম উৎপাদন হওয়ার পরও প্রতি বছরই প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ নষ্ট হয়ে থাকে। সঠিক ব্যবস্থাপনায় সংরক্ষণ করতে না পারায় এবং নানান কারণে আম নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষাসহ বিদেশে রপ্তানি বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও পাঁচ শতাংশ আমের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয় এক প্রকল্পের আওতায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে আম নষ্ট রোধ হওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি পূর্বের চেয়ে রপ্তানিও বাড়বে দ্বিগুণ। এছাড়া কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগের সঙ্গে সঙ্গে প্রান্তিক কৃষকরাও যেমন উপকারভোগী হবে তেমনি রপ্তানি আয় বাড়বে ও গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, বছরে দেশে এক লাখ ৭৯ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়। এর মধ্যে নষ্ট হয় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। মূলত এসব আম নষ্ট  হওয়া থেকে রক্ষাসহ বিদেশে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন বাড়াতে প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৪৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এদিকে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ১ হাজার ৬২৩ মেট্রিক টন আম বিদেশে রপ্তানি করা হয়। ইংল্যান্ড, ইতালি, নেদারল্যান্ডস ও হংকংয়ে এসব এমন রপ্তানি করা হয়। কিন্তু রপ্তানির সুযোগ থাকা সত্ত্বেও পরিবহন, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণসহ নানান কারণে প্রতিবছর আম নষ্ট হচ্ছে।

জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় অধিক আম উৎপাদন হয় এমন জেলার উপকারভোগী কৃষক হিসেবে বাছাই করে কাজে লাগানো হবে। এরমধ্যে চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানসহ দেশের আরও ১৫ জেলাকে প্রকল্পের আওতায় যুক্ত করা হয়েছে। ১৫ জেলার ৪৬টি উপজেলা চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব উপজেলার যেসব কৃষকের ৫০ শতকের বেশি কৃষিজমিতে আমবাগান আছে, তাদের উপকারভোগী কৃষক হিসেবে বাছাই করে প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।

প্রকল্পের ফোকাল পারসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরিফুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, বিশ্বে আম উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। বাংলাদেশে প্রায় ৭২ জাতের ৭৯ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে অনেক আম নষ্ট হয়ে থাকে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আমের উৎপাদন আরও বাড়বে। প্যাকেজিং, আম ব্র্যান্ডিং, ওয়াশিংসহ সব ধরনের সুবিধা পাবেন কৃষক। আমাদের মূল লক্ষ্য আম নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করে বিদেশে রপ্তানি বাড়ানো। সামগ্রিক বিবেচনায় পুষ্টিকর, সুস্বাদু আম আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিরাপদ ও উচ্চ মানসম্মত আম উৎপাদন করা সম্ভব হলে দেশের রপ্তানি আয় বাড়বে। পাশাপাশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

যে ১৫ জেলা প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত: পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি সদর, দিঘীনালা, রাঙামাটি সদর, নানিয়ারচর, বরকল, বান্দরবান সদর, দিঘীনালা উপজেলা, রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট, পুঠিয়া, তানোর, মোহনপুর, নওগাঁর বদলগাছি, সাপাহার, পোরসা, মান্দা, নাটোর সদর, বড়াইগ্রাম, বাগাতিপাড়া, লালপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর, শিবগঞ্জ, নাচোল, ভোলাহাট, গোমস্তাপুর, রংপুরের সদর, পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও সদর, পীরগঞ্জ, যশোরের সদর, মনিরামপুর, শার্শা, সাতক্ষীরার কলারোয়া, দেবহাটা, কুষ্টিয়ার মিরপুর, দৌলতপুর, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা ও মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগরে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট