বিশ্ব নৃত্য দিবস উপলক্ষে সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো নৃত্যসুধা পর্ব-৫। বিশ্বছন্দের আনন্দে এই শিরোনামে নৃত্যানুষ্ঠানটি ছিল ছন্দ ও সুরের এক বিস্ময়কর সমন্বয়। নৃত্যশিল্পী ও সংগঠক তামান্না রহমানের পরিকল্পনায় দর্শকরা উপভোগ করলেন এক ভিন্নধর্মী সৃষ্টিসন্ধ্যা।
বিশেষ চমক হিসেবে ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র গায়াগুমের সুরে ওড়িশী নৃত্যের অভিনব সমন্বয়। কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী হুয়াং বোয়ং কির সুরারোপিত ‘চান সৌল’(বসন্তের তুষার) পরিবেশনায় জি এরি ও কিম উংসিকের ছন্দ মঞ্চজুড়ে ছড়িয়ে দেয় অপূর্ব আবেশ। ওড়িশী অ্যান্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টার, চট্টগ্রাম এর পরিবেশনায় দুই ভিন্ন সংস্কৃতির এই হৃদয়ছোঁয়া মেলবন্ধন দর্শকদের মন জয় করে নেয়।
অনুষ্ঠানের আরেক আকর্ষণ ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় ‘বুচাইচুম’ ঐতিহ্যবাহী পাখা নৃত্য, যা পরিবেশিত হয় বিটিএসের বিশ্ববিখ্যাত ‘আরিরাং’ সংস্করণে। কিম বেক-বং এর প্রবর্তিত এই নৃত্যের নরম ভঙ্গিমা আর আবেগঘন সুরে দর্শকদের আবিষ্ট করে তোলে ওটিডিএমসির জ্যেষ্ঠ নৃত্যশিল্পী ময়ূখ সরকার, দিয়া দাশ গুপ্তা, অর্জিতা সেন চৌধুরী ও ঈষিকা দাস।
শুধু কোরিয়ান পরিবেশনাই নয়, সন্ধ্যার বিভিন্ন পর্বে উঠে আসে ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের অপূর্ব সব রূপ। প্রমা অবন্তীর পরিবেশনায় পরিবেশিত হয় ‘মেঘ পল্লবী’।
এছাড়াও নৃত্যানুষ্ঠানে অংশ নেন দেশের খ্যাতনামা নৃত্যশিল্পীরা বেলায়েত হোসেন খান ও তার দল, মুনমুন আহমেদ ও তার দল, কবিরুল ইসলাম রতন ও তার দল, প্রমা অবন্তী ও তার দল, তামান্না রহমান ও তার দল এবং চীনের ইয়্যাং হুই ও তার দল। শাস্ত্রীয় নৃত্যের ধারা মনিপুরী, ওড়িশী, ভরতনাট্যম ও কথক ছাড়াও দর্শকরা উপভোগ করেন দেশীয় নৃত্যের ওপর বিশেষ বিদেশি বাদ্যযন্ত্রের কম্পোজিশন।
বিশ্ব সংস্কৃতির বৈচিত্র্য তুলে ধরতে মঞ্চে আরও পরিবেশিত হয় কোরিয়ার পাখা নৃত্য, জার্মানির লোকনৃত্য, জাপানের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য, হাওয়াইয়ের হুলা নৃত্য এবং নেপালের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য। এছাড়া ইয়্যাং হুই-এর পরিচালনায় চীনা ঐতিহ্যবাহী ও সমকালীন নৃত্যের পরিবেশনা দর্শকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে বলে জানান ওটিডিএমসির মিডিয়া পর্ষদ প্রধান অভ্র বড়ুয়া।
নৃত্যসুধার এই সন্ধ্যা ঢাকার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে দেয় এক অন্যরকম ছন্দের বার্তা যেখানে সুর, ছন্দ ও মনের উচ্ছ্বাস একত্রে গেঁথে সৃষ্টি করে বিশ্বসংস্কৃতির মালা।
পূর্বকোণ/পিআর