চট্টগ্রাম সোমবার, ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

সংবাদ সম্মেলনে দাবি

দুবাইয়ে অবস্থান সময়ে চট্টগ্রামে মামলার আসামি শাহাদাত হোসেন!

অনলাইন ডেস্ক

২ জানুয়ারি, ২০২৫ | ২:৫৭ অপরাহ্ণ

গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ৯ ডিসেম্বর দায়ের করা এই মামলার বাদি জাহিদুল হাসান ওরফে ফাহিম নামের একব্যক্তি। ওই মামলায় ৩০ নম্বর আসামি করা হয় হাটহাজারীর মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেনকে। অথচ তিনি ঘটনার দিন শারজায় ছিলেন। ৮ আগস্ট তিনি দেশে ফিরেন। ১৩ আগস্ট তিনি শারজায় ফিরে যান। বিদেশে অবস্থান করা অবস্থায় দেশের ঘটনায় মামলার আসামি হওয়া নিয়ে তিনি হতভম্ব। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সমিতি শারজার সাবেক সভাপতি ও সংযুক্ত আবর আমিরাত বিএনপির সভাপতি শরফত আলী লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে প্রবাসে থাকায় প্রবাসী ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন কখনও রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তিনি একদল দুর্বৃত্তের হাতে বারবার হয়রানির মুখে পড়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন। দুর্বৃত্তরা রাজনৈতিক পরিচয়ে কখনও তাকে মামলায় জড়ানোর ভয়, কখনও চাঁদা দাবি সবই করে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী শাহাদাত ডিভিও কলে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, এর মধ্যে আমি জাপানে থাকাকালে দেশে থাকা পরিবার-পরিজনের কাছ থেকে জানতে পারি- পুলিশ আমাকে বাড়িতে খুঁজতে গিয়ে জানিয়েছে, কোতোয়ালী থানায় আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে আমাকে তারা খুঁজতে এসেছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি মামলার বাদি মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান নামে এক লোক। ৯ নভেম্বর দায়ের করা মামলাটির নম্বর ১২। ওই মামলায় ঘটনার তারিখ লেখা হয় ৪ আগস্ট। অথচ তখন আমি আরব আমিরাতের বাড়িতে। আমার মনে হয় না মামলার বাদি আমাকে চেনেন এবং বাদিকেও আমি চিনি। তাছাড়া আমি যেহেতু রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই, আমার কোন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ থাকারও কথা না।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের তিনদিন পর ৮ আগস্ট আরব আমিরাত থেকে চট্টগ্রামের নিজ বাড়িতে আসি। ওইদিন সন্ধ্যায় আমি হাটহাজারীতে ছাত্র-আন্দোলনে জড়িত বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে বৈঠকও করি। পরে ১২ আগস্ট আরব আমিরাতে ফিরে যায়।
তিনি বলেন, এর কিছুদিন আমি হঠাৎ খবর পাই, হাটহাজারীতে আমার গ্রামে গিয়ে মোদাচ্ছের শাহ নামে একব্যক্তি আমার খোঁজখবর নিচ্ছেন। শারজায় বাংলাদেশ কমিউনিটি ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা চালানো এই মোদাচ্ছের শাহ মূলত নানা প্রভাব খাটিয়ে কোতোয়ালী থানায় ৯ ডিসেম্বর দায়ের করা মামলায় আমাকে ফাসিয়ে দেয়।
শাহাদাত হোসেন প্রায় ৩২ বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজার ব্যবসায়ী। শারজা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়ায় তার একাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছেন। গত ১৮ বছর ধরে তিনি একইসঙ্গে জাপানেও ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। ৮ বছর ধরে তিনি শারজা ইউজড কার অ্যান্ড স্পেয়ার পার্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সমিতি শারজার অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, ‘এই গায়েবি মামলার কারণে শাহদাত হোসেন চরমভাবে অপমাণিত বোধ করছেন। এভাবে হয়রানির কারণে প্রবাসে তার ব্যবসায়িক কাজে মন বসাতে পারছে না। তার পরিবারও এই অবস্থার কারণে মানসিকভাবে অস্থিরতায় ভুগছে।’
আরব আমিরাতের বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতা আলম আব্দুল গফুর বলেন, ‘প্রবাসে আমরা যারা একটু ভালো অবস্থানে আছি, এদের বেছে বেছে দেশে মামলায় নাম ঢুকিয়ে মামলা-বাণিজ্য করছে রাজনৈতিক নেতা নামধারী কিছু লোক। আমরা দেশের জন্য প্রবাসে রাতদিন কষ্ট করছি, আবার নামধারী কিছু দলীয় লোক দেশ থেকে আমাদের হয়রানি করছে। আমরা অনেক ব্যথিত।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংযুক্ত আবর আমিরাত বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শরাফত আলী, মোহাম্মদ লোকমান, জাহেদুল আলম, মাসুদুর রহমান প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে শাহাদাত হোসেনের মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট