মধ্যপ্রচ্যের অন্যতম তেল সমৃদ্ধ ধনী দেশ কুয়েত। দেশটিতে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকুরি, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পেশার প্রায় তিন লক্ষ বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছেন। নানা কারণে কর্মব্যস্ততার কারণে প্রতি বছর দেশে যাওয়া হয় না বেশিরভাগ প্রবাসীর। পরিবার-পরিজন ছাড়াই কটে বেশির ভাগ সময়। কিসের ঈদ? কিসের কি? শুধু কাজের পেছনে ছুটতে হয়। শুক্রবার ও শনিবার সরকরি ছুটি হওয়াতে অবসর মেলে কিছু সময়। দেশের মত প্রবাসেও বন্ধুরা মিলে ছুটে যায় শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করতে। যদি বিদেশের মাটিতে নিজ ভাষা বাংলায় জুমার নামাজের খুতবা পড়া হয় তাহলেতো আনন্দিত হওয়ারই কথা। দুই যুগের বেশি হবে কুয়েতে বাঙালী অধ্যুষিত এলাকায় একাধিক মসজিদে বাংলা খুতবা পড়ার অনুমোতি দেয় কুয়েতের ধর্ম মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি গত ৭ ডিসেম্বর থেকে কুয়েতের রুমাইছিয়াহ আব্দুল্লাহ বিন ওমর নতুন একটি মসজিদে প্রথম জুমার নামাজ ও বাংলা খুতবা পাঠ করার অনুমোতি দেয় কুয়েতের ধর্ম মন্ত্রণালয়। এটিসহ বর্তমানে ৯টি মসজিদে বাংলায় খুতবা চালু রয়েছে। মসজিদগুলো হল কুয়েত সিটির সালেহ আল ফাদালা মসজিদ, আব্বাসিয়া এলাকায় খারেজা বিন যায়েদ মসজিদ, ফরওয়ানিয়া এলাকায় ওমর বিন খাত্তাব (রা.) মসজিদ, কাবাদ (চেবদী) এলাকায় নাদী ফুরুসিয়া মসজিদ, জাহারা নাদী ফুরুসিয়া এলাকায় নাসের বেদাইন মসজিদ, আমগারা এলাকায় ওসমান বিন আফ্ফান মসজিদ, জাহারা গানাম বাজার এলাকায় সালেহ আন নামাশ মসজিদ ও সুলাইবিয়া এলাকায় আতিকী মসজিদ। কুয়েতে বাংলাদেশ কোরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্যোগে মসজিদগুলোতে জুমার নামাজ ও ঈদের নামাজে বাংলায় খুতবা পড়া হয়। কুয়েতে বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলায় খুতবা শোনতে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি সেখানে নামাজ আদায় করতে আসেন।
নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লি মনিরুল ইসলাম গর্বের সাথে বলেন, ‘প্রবাসে বিদেশের মাটিতে নিজের মাতৃভাষায় জুমার নামাজ আদায় করতে এসে আমার কাছে ঈদের মত মনে হচ্ছে, খুব খুশি লাগছে’।
খতীব হাফেজ মাওলানা নুরুল আলম বলেন, ‘আমাদেরকে কুয়েতে নিজেদের ভাষা বাংলাতে আল্লাহ জুমার নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করেছেন। এই মসজিদটিসহ কুয়েতের একাধিক মসজিদে বাংলা খুতবা পড়ার সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন কুয়েতের স্থানীয় নাগরিক ইঞ্জিনিয়ার ইব্রাহীম আব্দুল্লাহ আল খাজী’। তিনি আরো বলেন, ‘এটি যেন চালু থাকে সেজন্য মুসল্লিাদের সহযোগিতা প্রয়োজন’।