চট্টগ্রাম বুধবার, ২১ মে, ২০২৫

সর্বশেষ:

নারী অধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদ সৃষ্টির প্রস্তাব ছাত্রশিবিরের
চাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ

চাকসু গঠনতন্ত্র সংস্কার

নারী অধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদ সৃষ্টির প্রস্তাব ছাত্রশিবিরের

চবি সংবাদদাতা

২৯ এপ্রিল, ২০২৫ | ১১:২১ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (চাকসু) নির্বাচন ও গঠনতন্ত্র সংস্কার প্রস্তাবনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে শাখা ছাত্রশিবির। প্রস্তাবনায় নারী অধিকার বিষয়ক সম্পাদক এবং ছাত্র অধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদকসহ নির্বাহী পরিষদে নতুন অনেকগুলো পদ সৃষ্টির প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

 

প্রস্তাবনায় বলা হয়, নারী অধিকার বিষয়ক সম্পাদক নারী শিক্ষার্থীদের মর্যাদা, অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখবেন। অন্যদিকে ছাত্র অধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে যাবতীয় অভিযোগ প্রশাসনের কাছে তুলে ধরবেন।

 

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইসলামি ছাত্রশিবির চবি শাখার সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও চবি শিক্ষার্থী ইব্রাহিম হোসেন রনি, মহানগর উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক খুররাম মুরাদ, অর্থ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলামসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

 

গঠনতন্ত্র সংস্কারে ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে নতুন করে দপ্তর সম্পাদক, গবেষণা ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন সম্পাদক, আবাসন ও পরিবহন সম্পাদক, ক্যাফেটেরিয়া ও ক্যান্টিন বিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, ধর্ম ও সম্প্রীতি বিষয়ক সম্পাদক এবং ৩ টি নির্বাহী সদস্য পদ সৃষ্টির প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। পদাধিকারবলে নির্বাহী পরিষদের সভাপতি উপাচার্য চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র একজন শিক্ষককে সভাপতি মনোনীত করার প্রস্তাব সংস্কারে রাখা হয়। তাছাড়া নির্বাহী পরিষদের কাজের মধ্য বছরে একটি জার্নাল প্রকাশ করা, বাৎসরিক গবেষণা পুরস্কার প্রদান করা, প্রতিমাসে একটি ই-ম্যাগাজিন ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে বুলেটন, তথ্যচিত্র প্রকাশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। ছাত্রশিবিরের প্রস্তাবনায় নির্বাহী পরিষদের মেয়াদকাল ১ বছর হবে এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী নির্বাচন আয়োজন করবেন। তবে এই ৯০ দিন দায়িত্বে কারা থাকবেন এ ব্যাপারে প্রস্তাবনায় কিছু বলা হয়নি। সংবাদ সম্মেলন থেকে চলতি বছরের জুনের মধ্যেই নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে ছাত্রশিবির। পাশাপাশি নির্বাচনে ফ্যাসিবাদ বিরোধী যেকোনো সংগঠনের সাথে প্যানেল করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ছাত্রশিবিরের নেতারা।

 

ছাত্রশিবির চবি শাখার সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, চাকসু নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভূমিকা ঐতিহাসিক এবং গৌরবোজ্জ্বল। ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সুস্থ ছাত্ররাজনীতি, আদর্শিক নেতৃত্ব গঠন এবং শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। চাকসুর ইতিহাসে বরাবরের মতোই ছাত্রশিবিরের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিলো। ১৯৮১ সালের চাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত জোট পূর্ণ প্যানেলে জয়লাভসহ প্রায় সকল নির্বাচনেই চাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করেছিল ছাত্রশিবির। আমরা আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুচিন্তিত ও সাহসী পদক্ষেপের মাধ্যমে দীর্ঘ তিন দশক ধরে অচল থাকা চাকসু দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করবে।

 

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

 

একই সালে ছাত্র ঐক্য নেতা ফারুকুজ্জামান নিহত হওয়ার অযুহাতে বন্ধ করে দেয়া হয় চাকসু নির্বাচন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত অকেজো হয়ে পড়ে আছে ছাত্র-ছাত্রীদের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া চর্চার প্রাণ কেন্দ্রটি।

 

 

পূর্বকোণ/জুনায়েদ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট