চট্টগ্রাম রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

চীনের ঐতিহ্যবাহী অ্যাক্রোবেটিক শো

ডা. মোহাম্মদ ওমর ফারুক

২৪ নভেম্বর, ২০১৯ | ২:৩৭ পূর্বাহ্ণ

চীন সফরের সবচে’ বড় সার্থকতা হচ্ছে চীনের ঐতিহ্যবাহী অপৎড়নধঃরপ ংযড়ি প্রদর্শনী, যেটি দেখার জন্য উন্মুক্ত হয়ে আছে আমাদের পর্যটকবৃন্দ। অবশেষে এল সে মাহেন্দ্রক্ষণ। এটি চাইনিজ তরুণ-তরুণীদের অভাবনীয় ও অকল্পনীয় একটি শারীরিক কসরত ঞযব ঈরৎপঁং ড়িৎষফ ড়ভ নবরলরহম ঈযধড়ুধহম ঃযবধঃৎব এর অবস্থান বেইজিংয়ের ঈযধড়ুধহম ফরংঃৎরপঃ এ ঐঁলরধষড়ঁ ংঁনধিু ংঃধঃরড়হ এর নিকটে পূর্ব ৩ৎফ ৎরহম ৎড়ধফ-এ।

ওখানে যেতে ডাউন টাউন থেকে ২৫ আরএমবি খরচ লাগে। অপৎড়নধঃরপ ংযড়ি কিং রাজবংশ কাল থেকেই শুরু হয়ে আসছে। এটি চীনের অতি প্রাচীন একটি খেলা এবং বিখ্যাত শো এবং জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে। এখানে নেই কোন ভাষা ও সংস্কৃতির বৈষম্য। র‌্যাংকিংয়ে অপৎড়নধঃরপ ংযড়ি শিল্পীটি পৃথিবীর মধ্যে সবচে’ জনপ্রিয় ও উন্নত শিল্পকলা হিসেবে স্থান পেয়েছে। এটি দু’হাজারের বেশি পুরোনো একটি খেলা। চলমান শতাব্দির মাঝামাঝি সময় থেকে এটি নতুন জীবনের মাত্রা পেয়েছে। অত্যন্ত সুনিপুণভাবে খেলোয়াড়বৃন্দ তাদের পারফরমেন্স প্রদর্শন করে এবং তাদের শরীরের ব্যালেন্স ধরে রাখার অপূর্ব ক্রীড়া নৈপুণ্য দেখিয়ে দর্শকদের বিমোহিত করে। একজন সুনিপুণ ও যোগ্য এক্রোবেট হওয়ার জন্য চাই কঠিন অধ্যবসায়, কাজে লাগাতে হবে তার মেধা ও মনন এবং এটি শুরু করতে হয় শিশু-কিশোর বয়স থেকে (৬-৭বছর)। কারণ এদের ভয়ংকর শারীরিক কসরত প্রদর্শন অত্যন্ত কঠিন এবং ঝুঁকিপূর্ণ। চাইনিজ এক্রোবেটিক-এটি এমন একটি শিল্প যেটি পরিবারে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে স্থানান্তরিত হয়, পূর্ণযোগ্য এক্রোবেট থেকে শিক্ষানবীশ এক্রোবেট। চীনের কিছু এলাকায় তাদেরকে ফুলেল সংবর্ধনায় সংবর্ধিত করা হয়। এটি সাধারণত শরীরময় কসরত প্রদর্শন, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-ভঙ্গিমা দ্বারা দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ, সাইকেল-মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন এর সাহায্যে ভয়ংকর কিছু ব্যতিক্রমি ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন। খেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে খরড়হ উধহপব, ঋষুরহম ঞৎরফবহঃ, ঝঢ়ৎরহম-ইড়ধৎফ ঝঃঁহঃং ইধষধহপব ড়হ ঈযধরৎং, ঔধৎ ঞৎরপশং, ঐড়ড়ঢ় উরারহম। যারা চীন ভ্রমণে যান অথচ অপৎড়নধঃরপ ংযড়ি পারফর্ম করেন না তাদের ভ্রমণ সম্পূর্ণ হয় না। যখন আপনি অপৎড়নধঃরপ ংযড়ি ধিঃপয করতে যাবেন আপনাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে যথেষ্ট সক্ষম থাকতে হবে। এটি একটি সন্দেহাতীতভাবে অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা, যা জীবনে সুযোগটি আরেকবার পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। এখানে পাকিস্তানি রেস্টুরেন্টের কদর বেশী। ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট খুবই কম। ১৫ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় রুম চেক আউট করে আমরা সবাই গাড়িতে উঠে পড়ি। আজ দীর্ঘ ৮ দিনের সফরনামার শেষদিন-নিজ ভূমে যাওয়ার ব্যস্ততা ও আপনজনের সাথে মিলিত হওয়ার আকাক্সক্ষা সবাইকে যেন পেয়ে বসেছে। তাইওয়ান ও চীন সফরের স্মৃতিগুলো আপন মনে রোমন্থন করি, অলক্ষে পেয়ে বসে নষ্টালজিয়া। গোটা পৃথিবী ঘুরে-আমার মধ্যে আমি নেই, একজোড়া সারস ধরপড় করে উঠে বুকের ভেতর। স্বাপ্নিক দেখা তিয়েনমান স্কয়ার দেখার সাধন যেন মিটল না। আমাদের গাইড মি. হ্যারিস আমাদেরকে আবারও নিয়ে গেলেন স্কয়ারে। চীনা নেতা মাও সেতুং যে ভবনে শায়িত রয়েছেন তা আমাদেরকে দেখানো হল। কিন্তু পুলিশ অফিসারকে দেখলাম-যারা টাই মূর্তির মতন দাঁড়িয়ে। গাইড থেকে জানা গেল-দু’ঘণ্টা পর পর ওরা নড়াচড়া করে এবং অন্য অফিসার দ্বারা ৎবঢ়ষধপবসবহঃ হয়। আমাদের পর্যটক দলের অন্যতম সদস্য প্রফেসর মঞ্জুরুল আলমকে দেখা যাচ্ছে না। অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর আমরা সবাই গাড়িতে উঠে পড়ি। প্রফেসর কামরুল স্যারের ছেলে নাকবি তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বের করে ফেল্ল স্যারকে। পথিমধ্যে ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে আমাদের লাঞ্চের আয়োজন। লাঞ্চ শেষে সরাসারি এয়ারপোর্ট। বোডিং/ইমিগ্রেশন শেষে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ৫ ঘন্টায় ব্যাংকক পৌঁছি।

২ ঘণ্টা যাত্রাবিরতি শেষে আবারও ওড়াল দিল ফ্লাইটটি। আড়াই ঘন্টায় ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে স্পর্শ করল থাই এয়ারওয়েজ। রাতটা হোটেল মেরিনোতে অবস্থান করি। পরদিন রিজেন্ট এয়ারওয়েজযোগে নিজ জন্মভূমি চট্টগ্রামে চলে আসি। স্বপ্ন বোনা শেষ। স্বপ্নের ভেতর দেখেছি চীন, তাইওয়ান। ছোটবেলায় চাইনিজ ঐতিহ্যের কথা শুনতাম। আজ তা রূপান্তর হল বাস্তবে। কঠোর পরিশ্রমী মানুষেরা যেন আমাদের অনুকরণ ও অনুসরণযোগ্য হয়-সে প্রত্যাশাই রাখি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট