চট্টগ্রাম বুধবার, ২২ মে, ২০২৪

আমাদের প্রাণঢালা অভিনন্দন টাইগারদের ঐতিহাসিক জয়

৫ নভেম্বর, ২০১৯ | ২:৩০ পূর্বাহ্ণ

ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে পরপর আটটি ম্যাচে হেরে গেলেও সব জল্পনা-কল্পনা উড়িয়ে দিয়ে নবম ম্যাচে দুর্দান্ত জয় পেলো লাল-সবুজের বাংলাদেশ। নিজেদের মাঠে সবসময়ই অপরাজেয় ভারত। সেই ভারতকে সাকিব-তামিম ছাড়াই দিল্লির অরুণ জেটলি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারাল বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে লিড নিল টাইগাররা। বিশ^সেরা দুই ক্রিকেটার সাকিব-তামিম বিহীন বাংলাদেশ দল এবার শুরু থেকেই জয়ের জন্যে প্রাণান্ত চেষ্টা করেছে। শেষে তাদের অদম্য মনোভাবের কাছে ধরা দিয়েছে কাক্সিক্ষত জয়। নিশ্চয়ই এ জয় বাংলাদেশ ক্রিকেটদলের সাফল্যের বহরকে প্রশস্ত করার পাশাপাশি সিরিজ জয়ে প্রেরণা যোগাবে। একইসঙ্গে আগামির পথও মসৃণ করে দেবে। সাবাশ বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এই অবিস্মরণীয় জয় ও সাফল্যের জন্য আমাদের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

শনিবার বিকেলের বৃষ্টির পর দূষণের কারণে দিল্লির আকাশ ছিল ধোঁয়াশায় ঢাকা। রবিবার ম্যাচের ভেন্যুর বাইরের ধোঁয়াশার ছবি ভাইরাল হয়। এই পরিস্থিতিতে অনেকেরই ধারণা ছিল দূষিত পরিবেশের সাথে অনভ্যস্থ টাইগাররা পুরো শক্তি নিয়ে খেলতে পারবে না। এ সুযোগ নেবে প্রতিপক্ষ। কিন্তু অদম্য টাইগাররা তা হতে দেয়নি। তারা দৃঢ় মনোবলে জয়ের জন্যে মাঠে নিজেদের সব শক্তি-সামর্থ্য উজাড় করে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত এক দুর্দান্ত জয় টাইগারদের হাতের মুটোয় এসে ধরা দেয়। বিশে^র ক্রিকেট ইতিহাসে এ জয় স্মরণীয় হয়ে থাকবে। উল্লেখ্য, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি ১০০০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ঐতিহাসিক এই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ১৪৮ রান তোলে ভারত। সে হিসেবে ম্যাচ জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৪৯ রান। কিন্তু টাইগাররা ম্যাচের তিন বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয়। সিরিজে তামিম-শাকিবরা নেই, তারপরও দারুণ খেলে ভারতকে হারানো চাট্টিখানি কথা নয়। একমাত্র দৃঢ় মনোবলের কারণেই এই অসম্ভব সম্ভব হয়েছে। প্রসঙ্গত, এক জন বোলার কম নিয়ে খেলেও ভারতকে ১৪৮ রানে থামিয়ে মূল কাজটা করেছিলেন বোলাররা। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের শরীরী ভাষায়ও ছিল বারুদ। রান বাঁচাতে বলের পেছনে ছুটছিলেন দুই-তিন কখনো চার ফিল্ডার। ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের বিপক্ষে এক বোলার কম নিয়ে খেলে বড় ঝুঁকি নিয়েছিল বাংলাদেশ।

তবে আস্থা ছিল মাহমুদউলস্নাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, সৌম্য সরকার ও আফিফ হোসেনের ওপর। তারা আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন।
ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে কখনো জেতেনি বাংলাদেশ। প্রথম ৮ ম্যাচের আটটিতেই হার। শেষ বলের সমীকরণ মেটানো হয়নি দুইবার। ওদিকে ভারতের মাটিতে কোনো সংস্করণেই কোনো জয় নেই বাংলাদেশের। এমন এক পরিস্থিতিতে ভারতে সিরিজ খেলতে গিয়েছে ভগ্ন হৃদয় নিয়ে। পারিবারিক কারণে তামিম ইকবাল যোগ নেই এ সফরে। আর আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় ছিটকে গেছেন অধিনায়ক সাকিব। আবার সেখানকার বায়ুও টাইগারদের উপযোগী নয়। সব মিলিয়ে এক প্রতিকূলতার মধ্যেই ছিল তারা। তবে জেতার নেশার কাছে সব প্রতিকূলতাই হার মেনেছে শেষ পর্যন্ত। ধরা দিয়েছে কাক্সিক্ষত সোনার হরিণ। সংগতকারণে এই ম্যাচ আগামিতে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। আমরা মনে করি, এ জয় আগামির আরো দাপুটে জয়ের বার্তা। দুর্দান্ত এই জয়ে আগামিতে আরো ভাল করার মন্ত্র পেয়ে গেছে টিম বাংলাদেশ। তাই এ জয়ের আনন্দে আত্মহারা না হয়ে সিরিজ জয়সহ আগামির সব সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর দৃঢ় সংকল্প নিতে হবে টাইগারদের।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট