চট্টগ্রাম শনিবার, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

পলিথিন বন্ধের সিদ্ধান্ত কাগজে-কলমেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

২ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পালাবদলের পর বাজারে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের ঘোষণা দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। অক্টোবরে সুপারশপ এবং নভেম্বর থেকে বাজারে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে বাস্তবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি।

 

তবে গত নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন বাজারে পলিথিন বিরোধী অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী- গত ১ নভেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচটি পলিথিন বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে ২৩২ কেজি অবৈধ পলিথিন উদ্ধার করা হয়। কিন্তু কোনো পলিথিন কারখানা বন্ধ বা উচ্ছেদ করা হয়েছে এমনটি দেখা যায়নি।

 

আকবরশাহ থানার বিশ্বকলোনী কাঁচাবাজার এলাকার বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, গত ৪ নভেম্বর কাঁচা বাজারের জামালের গোডাউন সংলগ্ন একটি পলিথিন কারখানার বিদ্যুৎ এবং পানিসহ বিভিন্ন সেবার লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়। অভিযানের খবর পেয়ে কারখানার মালিক সোহাগ ও মাসুদ পালিয়ে যায়।

 

পরিবেশ অধিদপ্তর এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাফিল জাহানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। রহস্যজনক বিষয় হচ্ছে অভিযানের আগের দিন রাতে সেখান থেকে পলিথিন তৈরির যন্ত্রপাতিগুলো হারবাতলি এলাকায় নিয়ে স্থাপন করা হয়। সেখানে বর্তমানে পলিথিন উৎপাদন করা হচ্ছে। পুলিশ ওই পলিথিন কারখানা থেকে নিয়মিত মাসোহারা নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময় (২০০১-২০০৬) পরিবেশমন্ত্রী শাজাহান সিরাজ বাজারগুলোকে পলিথিনমুক্ত করেছিলেন। দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের পর তিনি যখন পলিথিন থেকে মুক্তির ঠিক কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন তখন তার সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছরও বাজারে তেমন পলিথিন দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের শুরুর দিকেও পলিথিন ব্যবসায়ীরা বাজারে প্রবেশ করতে পারেনি।

 

পরে ধীরে ধীরে বিগত সরকারের শিথিল নীতির কারণে পলিথিনে সয়লাব হয়ে ওঠে বাজার। পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান দায়িত্ব নেওয়ার পর পলিথিন ব্যবহার বন্ধে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন। এর মধ্যে গত ১ অক্টোবর থেকে সুপার শপে পলিথিন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইভাবে ১ নভেম্বর থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বাজারে পলিথিনের ব্যবহার।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ না হওয়ার প্রধান কারণ সহজলভ্যতা এবং ব্যবহারে সুবিধা। সাধারণত একটি চটের ব্যাগের দাম পড়ে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। সেখানে ৫০ থেকে ৭০ পয়সার একটি পলিথিনে সমপরিমাণ পণ্য পরিবহন করা যায়। পলিথিন সিঙ্গেল ইউজ পণ্য। একবার ব্যবহার করেই মানুষ এটি ফেলে দেয়। এছাড়া দাম কম হওয়ায় বাজারে বিক্রেতাই পলিথিন সরবরাহ করে।

 

জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব-চট্টগ্রাম মহানগর) সোনিয়া সুলতানা জানান, পলিথিন বিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বিগত দুই মাসে অংশীজনদের নিয়ে আমরা চারটি সচেতনতামূলক মতবিনিয় সভা করেছি।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট