চট্টগ্রাম শনিবার, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

চসিকের মাধ্যমিক বিদ্যালয় : প্রধান শিক্ষকের ৪৮ পদের ২১টিই শূন্য

ইমরান বিন ছবুর

২ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:১১ পূর্বাহ্ণ

নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত পূর্ব বাকলিয়া সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ; প্রায় ১০ বছর ধরে সেখানে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। ১০ বছর ধরে কখনও সহকারী প্রধান শিক্ষক, কখনও সহকারী শিক্ষক এবং কখনও কখনও কলেজের অধ্যক্ষও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।

 

মোট দেড় হাজার শিক্ষার্থীর এই প্রতিষ্ঠানে বিদ্যালয়ে রয়েছে এক হাজার ১০০ শিক্ষার্থী। কলেজটির অধ্যক্ষ জিন্নাত পারভীন ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) পরিচালিত ৪৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২১টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। যা মোট বিদ্যালয়ের ৪৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

 

এসব বিদ্যালয়ের কোনটিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক, কোনটিতে সহকারী শিক্ষক এবং কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কলেজের প্রভাষকরাই বিদ্যালয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় একদিকে যেমন পাঠদানে সমস্যা হয়, অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করলে বিদ্যালয়ের দীর্ঘ পরিকল্পনা প্রণয়ন, প্রশাসনিক ও মানোন্নয়ন যথাযথভাবে হয় না বলে মনে করছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।

 

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন বিদ্যালয় ও শিক্ষা শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, নগরীতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৮টি। এর মধ্যে ডাবল শিফট রয়েছে ৫টি বিদ্যালয়ে। এই ৪৮টি বিদ্যালয়ে ৪৮টি প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে। তার মধ্যে বর্তমানে কর্মরত প্রধান শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ২৭ জন। বাকি ২১টি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।

 

এসব শূন্য পদের বিপরীতে ১২ জন সহকারী প্রধান শিক্ষক বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। ৩টি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। ৬টি কলেজের অধ্যক্ষ বিদ্যালয়ের প্রধানের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া প্রধান শিক্ষকের পদের বাইরে সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকের অনেকগুলো পদও শূন্য রয়েছে।

 

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের একাধিক প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক না থাকলে একটি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হতে হয়। এতে একদিকে যেমন পাঠদানে সমস্যা হয়, অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য কোন সিদ্ধান্তেও একাধিক মত দেখা দেয়। এছাড়া ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি পরিকল্পনা প্রণয়ন, বিদ্যালয়ের মানোন্নয়ন নিয়ে ভাবার সুযোগ পান না। রুটিন ওয়ার্ক করেই তাকে দিন পার করতে হয়। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষককে সবাই যেভাবে মেনে নেয়, ভারপ্রাপ্তকে সবাই মেনে নিতে পারে না। তখন স্বাভাবিকভাবেই চেইন অব কমান্ডের প্রশ্ন দেখা দেয়।

 

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, আমি সম্প্রতি প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে যোগ দিয়েছি। এতগুলো প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য, বিষয়টি আমি জানতাম না। মেয়র মহোদয়ের সাথে আলাপ করে এ বিষয়ে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট