চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের উচ্ছেদ এবং অবৈধ স্থাপনার পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়। পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সর্বশেষ ২৯তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। অথচ ২০১২ সালে দশম সভায়ও একই সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
২০০৭ সালের ১১ জুন স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ পাহাড় ধসে চট্টগ্রামে মারা যান ১২৭ জন। এ পাহাড়ধসের পর পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়। পদাধিকার বলে কমিটির আহ্বায়ক বিভাগীয় কমিশনার। সদস্য সচিব অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)। কমিটিতে জেলা প্রশাসক, সিটি করপোরেশন, সিডিএ, পুলিশ, র্যাব, ওয়াসা, বিদ্যুৎ, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিসহ বিভিন্ন সংস্থাকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০০৭ সালে পাহাড়ধসের পর গঠিত এই কমিটির প্রায় প্রতিটি সভায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০১২ সালের ২ জুলাই অনুষ্ঠিত দশম সভায় একই ধরনের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু অবৈধ স্থাপনা যেমন উচ্ছেদ হয় না, তেমনি বিভিন্ন সেবা সংস্থার সংযোগও বহাল থাকে। এরমধ্যে আজ বৃহস্পতিবার পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৯তম সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি বিষয়ে পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
২০১২ থেকে অনুষ্ঠিত দশম সভা এবং ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ১২ সভার কার্যবিবরণী পর্যালোচনা করা হয়। প্রতিটি সভায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং সেবা সংস্থার বিভিন্ন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ ২৯তম সভায়ও একই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সভার সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেছিলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীদের অবৈধ বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা তথা মামলা দায়ের করতে হবে।’
ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী সভায় বলেছিলেন, ‘ওয়াসা থেকে কখনো পানির কোনো সংযোগ দেওয়া হয়নি। একইভাবে পাহাড়ে অবৈধ গ্যাসের সংযোগ নেই বলে জানান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রতিনিধি।
তবে একই সভায় জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি বলেছিলেন, আকবরশাহ এলাকার ফিরোজ শাহ কলোনিতে গৃহায়ণের জায়গায় অবৈধ দখলদারদের পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও পুনরায় দখল করে নেয়। বিভিন্ন সেবা সংস্থার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে উচ্ছেদ সহজ হবে।’
পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির তথ্যমতে, ২৬ পাহাড়ে ৬ হাজার ৫৫৮ পরিবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। এরমধ্যে ১৬টি সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মালিকাধীন পাহাড় আর ১০টি ব্যক্তি মালিকাধীন।
পূর্বকোণ/পিআর