চট্টগ্রাম বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

কাতরাচ্ছেন বুলেটবিদ্ধরা

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ আগস্ট, ২০২৪ | ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ

মোমিনুল ইসলাম। বয়স সবেমাত্র ১৩। সাদা ব্যান্ডেজে মোড়ানো এ শিশুর কোমরের নিচের অংশের দু’পা। হাতে লাগানো স্যালাইন। যে বয়সে খেলাধুলা করার কথা, সেই শিশুই ছটফট করছে হাসপাতালের শয্যায়। মাথার পাশে বসে সন্তানের যন্ত্রণা ভুলানোর চেষ্টা তারই গর্ভধারিণীর। কিন্তু বুলেটের ক্ষতের যন্ত্রণা মোমিনুলের সয় না।

চমেক হাসপাতালের ক্যাজুয়েলিটি ওয়ার্ডের শয্যায় শুয়ে থাকা শিশু মোমিনুল ইসলামের মা মোহসেনা বেগম জানান, তাদের বাসা নগরীর মনছুরাবাদ ঈদগাঁ এলাকায়। গত সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে উৎসুক জনতার মিছিল-উল্লাস দেখতে বাসা থেকে বের হয় সন্তান। ওই সময় মনছুরাবাদ পুলিশ লাইন্সে হামলাকে কেন্দ্র করে পুলিশের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয় মোমিনুল। তার দু’পায়ে একাধিক বুলেটের আঘাত যন্ত্রণায় ছটফট করছে। যা খুবই কষ্টদায়ক। মা হিসেবে এ কষ্ট আমারও সহ্য হয় না। কিন্তু চোখের পানি ছাড়া আর কিছুই করার নেই। অর্থ নেই যে তার উন্নত চিকিৎসা করানোর।

তার পাশের শয্যায় শুয়ে আছে সুলতান মাহমুদ রাকিব (২০) নামে এক তরুণ। রাকিব কোতোয়ালীর সোবহানীয়া আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি বুকে, ফুসফুসে, পেটে, পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। মারাত্মক গুলিবিদ্ধ হওয়ায় অস্ত্রোপচারও হয়েছে। তবে বুলেট বের হয়নি পুরোপুরি। শয্যার পাশে বসে থাকা রাকিবের ফুফাতো ভাই মোহাম্মদ করিম বলেন, এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়নি রাকিব। তার শরীরের ভেতরে বুলেট রয়ে গেছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। এই মুহূর্তে তার উন্নত চিকিৎসার খুবই প্রয়োজন।

খবর নিয়ে জানা গেছে, কোটা আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ ও সরকার পতন পরবর্তী সহিংসতায় শিশু মোমিনুল ও তরুণ রাকিবের মতো চমেক হাসপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭৩ জন শিক্ষার্থী-জনতা। যাদেরমধ্যে সিংহভাগই গুলিবিদ্ধ। এদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। ভর্তি থাকাদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন বলেন, গুলিবিদ্ধসহ ভর্তি আহতদের চিকিৎসায় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তাদের নিয়মিত তদারকির পাশাপাশি সুস্থ করে তুলতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ওষুধ থেকে শুরু করে যাবতীয় চিকিৎসা সরঞ্জামও সরকারিভাবে প্রদান করা হচ্ছে।

এদিকে, সব ধরনের ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাওয়া গেলেও উন্নত চিকিৎসা পাওয়ার দাবি করেছেন আহতদের পরিবার। গতকাল চমেক হাসপাতালে ভর্তি থাকা আহত পরিবারের একাধিক সদস্যদের সঙ্গে প্রতিবেদকের আলাপকালে তারা এ দাবি করেন।

পূর্বকোণ/এসএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট