চট্টগ্রাম সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

বেড়েছে পাসের হার, কমেছে জিপিএ-৫ ­­।

বাংলা, গণিত, বিজ্ঞান, ফিন্যান্স এ- ব্যাংকিং বিষয়ে এ-প্লাস কমায় এবার জিপিএ-৫ কমেছে ­­। পাস ও জিপিএ-৫ এ পিছিয়ে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা ­­। ছেলেরা পাসের হারে এগিয়ে, জিপিএ-৫ এ মেয়েরা ­­। নগরীতে পাসের হার কমেছে, বেড়েছে মফস্বলসহ তিন পার্বত্য জেলায়

ইমরান বিন ছবুর

৭ মে, ২০১৯ | ২:২৮ পূর্বাহ্ণ

এবারের এসএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাসের হার বাড়লেও কমেছে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা। ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে পাসের হার ছিল ৭৫.৫০। এবার ২.৬১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৮.১১। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের এবারের পরীক্ষায় ১ লাখ ৪৯ হাজার ৯৯২ জন অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ হাজার ৩৯৩ জন শিক্ষার্থী। ২০১৮ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৮ হাজার ৯৪ জন শিক্ষার্থী। সে হিসেবে এবার জিপিএ-৫ কমেছে ৭০১টি। বাংলা, গণিত, বিজ্ঞান ও ফিন্যান্স এ- ব্যাংকিং বিষয়ে এ-প্লাস কমে যাওয়ায় এবার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা কমেছে বলে জানান বোর্ডের কর্মকর্তারা। বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে কম সংখ্যক পাসের হার ও জিপিএ-৫ পেয়েছে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মানবিক বিভাগে পাসের হার হচ্ছে ৬৫.৭৯ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৭ জন শিক্ষার্থী। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার হচ্ছে ৮০.৮৫ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪১২ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার এবং জিপিএ-৫ এ এগিয়ে রয়েছে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিজ্ঞান বিভাগের পাসের হার হচ্ছে ৯১.৪৬ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ৯৫৪ জন শিক্ষার্থী। পাসের হারে ছাত্ররা এগিয়ে থাকলে জিপিএ-৫ এ এগিয়ে রয়েছে ছাত্রীরা। ছাত্রদের পাসের হার হচ্ছে ৭৮.৪৩ শতাংশ এবং ছাত্রীদের পাসের হার ৭৭.৮৩ শতাংশ। সে হিসেবে পাসের হারে ছাত্রীদের তুলনায় ০.৬ শতাংশ এগিয়ে রয়েছে ছাত্ররা। জিপিএ-৫ পাওয়া ছাত্রীর সংখ্যা হচ্ছে ৩ হাজার ৭৪১ এবং ছাত্রের সংখ্যা ৩ হাজার ৬৫২। ছাত্রদের তুলনায় ৮৯ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ বেশি পেয়েছে।
তিনটি পার্বত্য জেলার রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান এবং কক্সবাজার জেলার পাসের হার গতবছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। কক্সবাজার জেলায় গতবছর পাসের হার ছিল ৭৪.২৯ শতাংশ এবং তা বেড়ে হয়েছে ৭৮.৪৮ শতাংশ। রাঙামাটি জেলায় গতবছর পাসের হার ছিল ৬২.৭২ শতাংশ, এবার তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৬৮.৭৫ শতাংশ। খাগড়াছড়ি জেলায় এবছর পাসের হার হচ্ছে ৬৫.৪৬ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৫০.৫২ শতাংশ। এছাড়া বান্দরবান জেলায় পাসের হার হচ্ছে ৬৫.৩৬ শতাংশ, গতবছর যা ছিল ৫৭.৯২ শতাংশ।
সামগ্রিকভাবে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার বাড়লেও মহানগরীতে পাসের হার কমেছে। মহানগরীতে এবারের পাসের হার হচ্ছে ৮৪.৩৮ শতাংশ গত বছর যা ছিল ৮৫.২২ শতাংশ। সে হিসেবে গতবছরের তুলনায় মহানগরীতে পাসের হার কমেছে ০.৮৪ শতাংশ। অন্যদিকে মহানগর বাদে চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার হচ্ছে ৭৮.৬০ যা গতবছর ছিল ৭৭.২৬ শতাংশ।
এ সম্পর্কে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. মাহবুব হাসান বলেন- ফলাফল ভালো করার লক্ষ্যে প্রায় ১ হাজার ২০০ স্কুলপ্রধান এবং ২৬০ কলেজ-প্রধানের সাথে আমরা ধারাবাহিকভাবে সভা করেছি। আমরা সেখানে তাদের বলেছি, আপনারা আপনাদের প্রতিষ্ঠানের ফলাফল বিশ্লেষণ করবেন। যে বিষয়গুলোতে ফল খারাপ হচ্ছে, সে বিষয়গুলোর উপর গুরুত্ব দিতে হবে। মহানগর ছাড়া উপজেলা এবং পার্বত্য জেলাগুলো ভালো ভূমিকা রেখেছে। যার ফলে এসব এলাকার শিক্ষার্থীরা রেজাল্ট ভালো করেছে। মহানগরের রেজাল্টও খারাপ বলা যাবে না, গতবছরের তুলনায় মাত্র ০.৮৪ শতাংশ পাশের হার কমেছে। তিনি আরো বলেন- এবার জিপিএ-৫ কমে যাওয়ার পেছনে কারণ হচ্ছে বাংলা, গণিত, বিজ্ঞান ও ফিন্যান্স এ- ব্যাংকিং-এ এ-প্লাস গতবছরের তুলনায় অনেক কমেছে। গত বছর বাংলায় এ-প্লাস পেয়েছে ১০ হাজার ২৩৪ জন শিক্ষার্থী। এবার তা কমে হয়েছে ৬ হাজার ৫৮১ জন। গণিত বিষয়ে গতবছর এ-প্লাস পেয়েছে ১৩ হাজার ৪৮৭ জন শিক্ষার্থী, এবার তা কমে হয়েছে ৮ হাজার ৭১২ জন। বিজ্ঞান বিষয়ে গতবছর এ-প্লাস পেয়েছে ৬ হাজার ২৩০ জন, এবার তা কমে হয়েছে ৪ হাজার ৭৩১ জন। ফিন্যান্স এ- ব্যাংকিং বিষয়ে গতবছর এ-প্লাস পেয়েছে ৩ হাজার ১৭২ জন শিক্ষার্থী, যা এবছর অর্ধেকেরও বেশি কমে হয়েছে ১ হাজার ৫৮৮ জন।
এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ১ হাজার ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জিপিএ-৫ এ শীর্ষে অবস্থান করছে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৪৫৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৪৫৬ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪১১ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম হাইস্কুল। এ স্কুল থেকে ৩৯২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে শতভাগ উত্তীর্ণ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩১২ জন। জিপিএ-৫ এ শীর্ষে রয়েছে নাসিরাবাদ সরকারি (বালক) উচ্চ বিদ্যালয়। এ স্কুল থেকে ৪৬১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৪৫৯ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৯৪ জন শিক্ষার্থী।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট