চট্টগ্রাম সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পাওয়া নাজমার জিপিএ-৫ অর্জন

নিজস্ব সংবাদদাতা হ রাঙ্গুনিয়া

৭ মে, ২০১৯ | ২:২৮ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়ার হোছনাবাদ-লালানগর উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমা আক্তার। বিদ্যালয়ের সহ শিক্ষাকার্যক্রমসহ লেখাপড়ায় স্কুলের সবার সেরা সে। শুধু স্কুলে নয়, উপজেলা পর্যায়েও সে বিভিন্ন খেলাধুলা, নাচ-গানে সবাইকে ছাড়িয়ে বেশ কয়েকবার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে। ২০১৮ সালে নাজমা যখন দশম শ্রেণিতে পড়ে তখন একদিন নাজমার মা-বাবা তার অমতেই বিয়ের আয়োজন করে বসেন। এমনকি বিয়ের দিনক্ষণ পর্যন্ত অনেকটা ঠিক করে ফেলেছিল তার পরিবার। কিন্তু পড়ালেখার প্রতি তার তীব্র ইচ্ছাশক্তি এবং স্বপ্ন দেখা নাজমা বাল্যবিয়ের কাছে দমে যাওয়ার পাত্রী নন। তার বাল্যবিয়ের আয়োজনের কথা জানতে পেরে বান্ধবীদের সহযোগিতায় তা বন্ধ করতে লিখিত আবেদন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবরে। পরবর্তীতে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ সভাপতি ও চার শিক্ষক নাজমার বাড়িতে যান এবং বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে তার মা-বাবাকে বুঝিয়ে বলে নাজমাকে অকালে ঝড়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেন। বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পাওয়া নাজমা ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। গতকাল (সোমবার) সকাল থেকে সবাই যখন মুঠোফোনে এসএসসির ফলাফল দেখা নিয়ে ব্যস্ত তখন বেশ খোশ মেজাজেই ছিলো নাজমা। শেষ পর্যন্ত সেই স্কুলের একমাত্র শিক্ষার্থী, যে স্কুলের হয়ে একমাত্র জিপিএ-৫ পেয়েছে।
নাজমা জানায়, ‘আমি পড়ালেখা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। এজন্য আমি সবার সহযোগিতা কামনা করি’।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ সভাপতি সিরাজুল করিম বিপ্লব বলেন, নাজমা বিদ্যালয়ের প্রতিটি সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিয়ে সবসময় সবার সেরা নির্বাচিত হয় এবং ফলাফলের দিক থেকেও সবাইকে ছাড়িয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। সাহসি নাজমা বাল্যবিয়ের কথা লিখিতভাবে আমাদের জানালে আমরা গিয়ে তা বন্ধ করি এবং তার পড়ালেখার যাবতীয় খরচ আমি নিজে বহন করি। ভবিষ্যতেও তার পড়ালেখায় আমার সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট