চট্টগ্রাম শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম অর্ধেক, প্রভাব নেই দেশে

ইফতেখারুল ইসলাম

১২ জুন, ২০২৩ | ১:৩৫ অপরাহ্ণ

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম প্রায় অর্ধেক কমে গেলেও দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমানো হয়েছে লিটারে মাত্র ১০ টাকা। পাম অয়েলের দাম কমানো হয়েছে লিটার প্রতি মাত্র ২ টাকা। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে দর বৃদ্ধির কথা শুনলেই দেশীয় বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যায়।

 

বিশ্বব্যাংকের সংস্থা ইনডেক্স মুন্ডির তথ্যমতে, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস হতে সয়াবিন তেলের দাম প্রতি টন হাজার ডলার পার হয়। এরপর ক্রমান্বয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়তে থাকে। দেশীয় বাজারেও একই হারে দাম বাড়ে। ২০২২ সালের মার্চ মাস হতে মে পর্যন্ত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে তেলের দাম। সেসময় ১৯৫০ থেকে ১৯৬২ ডলার পর্যন্ত প্রতিটন সয়াবিন তেল বিক্রি হয়। কিন্তু এরপর আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম ক্রমান্বয়ে কমতে থাকে। বর্তমানে তা হাজার ডলারে ফিরে এসেছে। কিন্তু দেশীয় বাজারে সয়াবিন তেলের দাম আর কমেনি।

 

খাতুনগঞ্জের একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে আলাপকালে তারা জানান, মালয়েশিয়ান পাম অয়েলের দাম এখন ৩৪০০ রিংগিটে নেমে এসেছে। যা ছিল ৭৫০০ রিংগিট। সে হিসেবে সমস্ত খরচ যোগ করেও পাম তেল প্রতি মণ ৩৮০০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। এতে প্রতি লিটারের দাম পড়ে ৯৫ টাকা। কিন্তু পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ৪৬০০ টাকায়। আর খোলা পাম তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে লিটার ১৩৫ টাকা। যা প্রতি এছাড়া ইন্দোনেশিয়া পাম তেল বিক্রি বাড়ানোর জন্য কর ছাড় দিয়েছে। তবুও দেশীয় বাজারে  দাম কমেনি।

 

একইভাবে সয়াবিন তেল আমদানি ব্যয় পড়ছে প্রতি লিটার প্রায় ১৩০ টাকা। বর্তমানে ভোক্তার কাছে সয়াবিন তেল যাচ্ছে ১৮৯ টাকায়।

 

কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব) কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন পূর্বকোণকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কোন পণ্যের দাম বাড়ার খবর শুনলেই দেশের বাজারে দাম বেড়ে যায়। কিন্তু এক বছরের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সয়াবিন তেলের দাম কমিয়েছে লিটারে মাত্র ১০ টাকা। যা কোনভাবেই যৌক্তিক হতে পারে না।

 

গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকের তথ্যানুসারে, ২০২২ সালের ৮ জুনের তুলনায় ২০২৩ সালের ৮ জুন বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দর ৪৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ কমেছে। পাম তেলের দাম ৪৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ কমেছে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। বৈঠকে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১০ টাকা কমিয়ে ১৮৯ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল কেজিতে ১০ টাকা কমিয়ে ১৬৭ টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়। খোলা পাম তেল প্রতি লিটার ১৩৫ টাকা থেকে ২ টাকা কমিয়ে ১৩৩ টাকা এবং বোতলজাত সুপার পাম তেল লিটারে ১৬৭ টাকা থেকে ২ টাকা কমিয়ে ১৬৫ টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, কয়েকটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য যেমন ভোজ্যতেল, আটা, ময়দা ও পেঁয়াজের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে যে হারে মূল্য হ্রাস পেয়েছে স্থানীয় বাজারে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট