চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪

পাঁচ বছরে আয় প্রায় সাড়ে ৪শ কোটি টাকা

সারোয়ার আহমদ

১০ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে অখালাসকৃত পণ্য নিলামে বিক্রি করে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস গত পাঁচ বছরে আয় করেছে ৪৪৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকার বেশি। এই পাঁচ বছরে বন্দরে বাজেয়াপ্ত পণ্যগুলো নিয়ে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে ১১০টি। যার মধ্যে ৯ হাজার ৮৭ লট পণ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। ওইসব পণ্য থেকে অনুমোদিত পণ্য নিলামে বিক্রি করে ৪৪৯ কোটি ৭৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা আয় করে দেশের সিংহভাগ রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।

 

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের নিলাম শাখার তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ গতবছর (২০২২ সালে) চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে নিলাম অনুষ্ঠিত হয় ৪২টি। যেখানে মোট ১ হাজার ৩৮১টি লট পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এগুলো থেকে অনুমোদিত লটের পণ্য বিক্রি করে আয় হয় ১৩০ কোটি ৩৭ লাখ ৬১৪ হাজার টাকা।

 

এর আগে করোনার মধ্যেও ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২৪টি নিলাম। যেখানে পণ্যের লট সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল ১ হাজার ৮১৪টি এবং অনুমোদিত লটের পণ্য বিক্রি করে সে বছর আয় হয়েছিল ১১৫ কোটি ৬৪ লাখ ৬০ হাজার ১১৪ টাকা।

 

করোনার মাহামারী তীব্র ছিল ২০২০ সালে। সে বছরও থেমে থাকেনি চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম কার্যক্রম। সে বছর চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৩টি। যেখানে অন্তর্ভুক্ত ছিল ১ হাজার ৬৬২ লট পণ্য। এর মধ্য থেকে নিলামে অনুমোদিত পণ্য বিক্রি করে আয় হয় ৬৫ কোটি ৩০ লাখ ৪৪ হাজার ২৯৮ টাকা। ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ১১টি নিলামে ১ হাজার ৯৮৫ লট পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। সে বছর অনুমোদিত পণ্য বিক্রি করে আয় হয় ৭০ কোটি ৫৪ লাখ ৫৫ হাজার ৭৬ টাকা।

 

এছাড়া ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত ২০টি নিলামে অন্তর্ভুক্ত করা ২ হাজার ২৪৫ লট পণ্য থেকে অনুমোদিত পণ্য বিক্রি করে ওই বছর আয় হয় ৬৭ কোটি ৮৯ লাখ ২৬ হাজার ৭৯ টাকা। সব মিলিয়ে গত ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে চট্টগ্রাম কাস্টমস আয় করে ৪৯৯ কোটি ৭৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৯৯ টাকা।

 

নিলামে রাজস্ব আয় প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান পূর্বকোণকে বলেন, গত কয়েক বছরে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে নিলাম কাজের মহাযজ্ঞ চলেছে। এতো পরিমাণে কাজ কাস্টমসের ইতিহাসে হয়নি। শুধুমাত্র ২০২২ সালেই এক বছরে ৪২টি নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। যা একটি রেকর্ড। এর আগে কোন বছর এতো সংখ্যক নিলাম অনুষ্ঠিত হয়নি।

 

তিনি আরো বলেন, আমরা মেনুয়্যাল নিলামের পাশাপাশি অনলাইন-ই-অকশনও চালু রেখেছি। যার কারণে চট্টগ্রাম ঢাকার পাশাপাশি সারা বাংলাদেশ থেকে অনেকেই নিলামে অংশগ্রহণ করতে পেরেছে। তাছাড়া, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিলাস বহুল কর্নেট গাড়ির ক্লিয়ার পারমিট পাওয়ায় নিলামে দামি গাড়ি বিক্রি করা গেছে। সব মিলিয়ে সরকার নিলাম থেকে ভাল রাজস্ব পেয়েছে।

 

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম পরিচালনায় লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে সহায়তা করে সরকারি নিলাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কে এম কর্পোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মোরশেদ পূর্বকোণকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ও বিভিন্ন অফডকে প্রচুর নিলামযোগ্য কনটেইনার রয়েছে। কাস্টমস কমিশনার ও নিলাম শাখার কমিশনারগণ এগুলো দ্রুত খালি করে বন্দরের কাজে গতি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেন। সে মোতাবেক আমরা এক বছরেই ৪২টি পর্যন্ত নিলামের আয়োজন করেছি। পাশাপাশি বন্দর ও অফডক থেকে প্রচুর নষ্ট ও পচে গলে যাওয়া পণ্য ধ্বংসও করেছি। সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিকতায় চট্টগ্রাম কাস্টমসে এতো সংখ্যক কাজ করা সম্ভব হয়েছে। সরকারও লাভবান হয়েছে।

 

পূর্বকোণ/আরএ

 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট