ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে পাইকারি মোকাম চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে অন্তত ৫শ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি গতকাল (বৃহস্পতিবার) নিজস্ব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। ঘূর্ণিঝড় চিত্রাংয়ের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে ক্ষয়ক্ষতি এবং চলমান বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন সমিতির নেতৃবৃন্দ।
সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ৯০ শতাংশ দোকান ও গুদামে পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চাল, ডাল ও মসলাজাতীয় পণ্যসহ বিভিন্ন ধরনের ভোগ্যপণ্য পচে নষ্ট হয়ে গেছে। ৩৫-৩৬শ টাকার ডালের বস্তা এখন মাছের খাদ্য হিসেবে বিক্রি হচ্ছে শ-দেড়শ টাকায়। এছাড়াও কাঁচাপণ্যসহ অনেক পণ্য পচে যাওয়ায় ফেলে দিতে হয়েছে। মিরসরাই বারৈয়ারহাট ও দাউদকান্দির ওজন স্কেল ব্যবসায়ীদের গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে-বললেন সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম আগমন উপলক্ষে আমরা বড় কর্মসূচি দেব না। ডিসেম্বরের মধ্যে ওজন স্কেল তুলে না নিলে জানুয়ারিতে অনশন কর্মসূচি, অবস্থান ধর্মধটের মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে ব্যবসায়ীরা।’
সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, চাক্তাই-রাজাখালী খালের স্লুইস গেটের নির্মাণ কাজ তিন বছর আগে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনো শেষ হয়নি। এর প্রভাবে এবার বেশি ক্ষয়ক্ষতি গুণতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। তিনি দাবি করেন, অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক না করেই স্লুইস গেট নির্মাণ করা হচ্ছে। নৌ-বাণিজ্যের উপযোগী ও পরিকল্পিতভাবে তা নির্মাণ করা হয়নি। তাই ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট জলোচ্ছ¡াসের পানি এবার দীর্ঘ স্থায়ী ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি কর্মকাণ্ডে জিডিপিতে চট্টগ্রামের অবদান ১২ শতাংশ। আর আমদানি-রপ্তানিতে ৮৫ শতাংশ হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে। কিন্তু চট্টগ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্যে নানামুখী সমস্যা লেগে রয়েছে। বারৈয়ারহাট ওজন স্কেল বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, মেয়রসহ বিভিন্ন দপ্তরে তা প্রত্যাহার করার জন্য স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রত্যাহার করা হয়নি। ডিসেম্বরের মধ্যে তা প্রত্যাহার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি দেন ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সাবেক সভাপতি সোলায়মান বাদশা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এহসান উল্লাহ জাহেদী, সমিতির সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম, ফারুক আহমদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. আলম, হারাধন চৌধুরী, দেবাশীষ দাশগুপ্ত, হারুনুর রশিদ, বেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
পূর্বকোণ/আর