চট্টগ্রাম শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

তিন সড়ক বন্ধে দুর্ভোগ

মিটু বিভাস

২২ অক্টোবর, ২০২২ | ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ

উন্নয়নের চরম ভোগান্তিতে পড়েছে নগরীর দক্ষিণ কাট্টলী এলাকায় বসবাসকারী অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। জলাবদ্ধতা প্রকল্পের অধীনে চলমান সংস্কার কাজের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ এলাকার প্রধান তিনটি সড়ক। ফলে স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়াও নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এই সড়কগুলো দিয়ে চলাচলকারী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিল্প কারখানা শ্রমিক কর্মচারীসহ অসংখ্য মানুষ। উন্নয়ন কাজের ধীরগতি এবং সমন্বয়হীনতার কারণে এ ধরনের ভোগান্তি ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।

 

নগরীর হালিশহর নয়াবাজার সড়কের সাথে সংযোগকারী দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের তিনটি প্রধান সড়ক, ছদু চৌধুরী রোড, কলেজ রোড এবং জেলেপাড়া সড়কের প্রবেশ পথ বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন। মহেশ খালের উন্নয়ন কাজ শুরুর পর থেকে কলেজ রোড এবং জেলেপাড়া সড়কে চলাচল পুরোপুরি বন্ধ কয়েকবছর। গয়না খালের উপর কালভার্ট নির্মাণের জন্য কয়েকমাস আগের ছদু চৌধুরী রোডের প্রবেশ পথও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে গাড়ি চলাচলের পথ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে দক্ষিণ কাট্টলী এলাকার বিশাল এক জনগোষ্ঠি। নিত্যব্যবহার্য বাজার, পণ্য আনা-নেওয়া বা জরুরি কোন প্রয়োজনে পাহাড়তলী লোহারপুল, সাগরিকা বিটাক হয়ে কয়েকমাইল ঘুরে চলাচল করতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিত্য কষ্টের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা। কলেজ রোডের প্রবেশ পথে দীর্ঘদিন ধরে মুদি ব্যবসা করে আসছেন আলী পারভেজ। একসময় জমজমাট বেচাকেনা ছিল। কিন্তু গত আড়াই বছরে পুঁজি হারিয়ে প্রায় নিঃস্ব।

 

পূর্বকোণকে তিনি বলেন, ২০২০ সালের নভেম্বরে উন্নয়ন কাজের জন্য দোকানের সামনের এ সড়কে চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর থেকে দোকানে বিক্রি নেই বললেই চলে। খালের উপর কালভার্ট নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর কয়েকমাস আগে চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হলে ভেবেছিলাম আবারও ব্যবসা করতে পারব। কিন্তু দশদিনের মধ্যে ২০ গজ দূরে আবার শুরু হয় ড্রেনের উপর স্ল্যাব নির্মাণের কাজ। ফলে আবারও বন্ধ হয়ে যায় সড়ক। অথচ দুইবছর বন্ধ থাকার সময় এই উন্নয়ন কাজ শুরু করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাদের সমন্বয়হীনতায় কষ্ট পাচ্ছি আমরা। এদিকে আগামী ৬ নম্বর থেকে ফজলুল হাজেরা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে শুরু হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা। কলেজ রোডের প্রবেশ পথ বন্ধ থাকায় পরীক্ষার্থীদের চলাচলে চরম ভোগান্তি পেতে হবে।

 

প্রাণহরি আমীন একাডেমি পরিচালনা পর্ষদের শিক্ষানুরাগী সদস্য রূপন কান্তি সেনগুপ্ত বলেন, এ কেন্দ্রে প্রায় ১৪শ পরীক্ষার্থী রয়েছে। প্রধান সড়ক তিনটি বন্ধ থাকায় পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ বেগ পেতে হবে। গতবছর পরীক্ষা চলাকালে সড়ক বন্ধ থাকায় ছোটখাট কয়েকটি দুর্ঘটনাও ঘটেছে। ড্রেনে পড়ে আহত হয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। এবারও ঝুঁকি নিয়ে তাদের চলাচল করতে হবে।

এছাড়া অপরপাশে বিটাকের সাথে সংযোগ সড়কের অবস্থাও ভাল নয়। ফলে শুধু পরীক্ষার্থী নয়, প্রশ্ন ও উত্তরপত্র আনা নেওয়া, বোর্ডের ভিজিলেন্স টিম এবং প্রশাসনের লোকজনের চলাচলে সমস্যায় পড়তে হবে।

 

স্থানীয় ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অধ্যাপক মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, সিডিএ জলাবদ্ধতা উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে চলাচলের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে এলাকার মানুষ। জনসাধারলের চলাচলের সুবিধার্থে কিছু কিছু কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শেষ করা প্রয়োজন। ছদু চৌধুরী সড়কের মুখে কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে কয়েকমাস আগে। তবে কলেজ রোডে খালের উপর কালভার্ট নির্মাণ কাজ শেষ। সড়কের শেষ মাথায় ড্রেনের উপর স্ল্যাব নির্মাণের কাজও শেষ। আগামী এইসএসসি পরীক্ষার আগে এ সড়কটি চলাচলের জন্য যাতে খুলে দেয়া যায় সে চেষ্টা করছি।

 

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট