চট্টগ্রাম সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

কীর্তিমান চট্টলমানস মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী

৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ | ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘প্রার্থনা’ কবিতার কয়েকটি পংক্তি উপস্থাপনে কৃতিমানব চট্টলদরদী পরিশুদ্ধ কর্মবীর মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতির প্রতি অন্তহীন শ্রদ্ধা নিবেদন করতে চাই। ‘চিত্ত যেথা ভয়শূণ্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর/আপন প্রাঙ্গণতলে দিবস শর্বরী/বসুধারে রাখে নাই খন্ড ক্ষুদ্র করি, যেথা বাক্য হৃদয়ের উৎসমুখ হতে উচ্ছ্বসিয়া উঠে, যেথা নির্বারিত স্রোতে দেশে দেশে দিশে দিশে কর্মধারা ধায়/অজস্র সহস্রবিধ চরিতার্থতায়।’ অজস্র পাঠকের মতো আমারও দৃঢ়বিশ্বাস; সাংবাদিকতা-ব্যবসা-সমাজসেবা-সমাজ সংস্কার ইত্যাদি যুগান্তকারী কর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে তিনি দেশবাসীর হৃদয়-গভীরে কর্ম-প্রেরণার অতুলনীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে জাগরুক রয়েছেন এবং চিরকাল থাকবেন।

এটি প্রতিষ্ঠিত সত্য যে, স্রষ্টার অখণ্ড বিধান অনুসারে জন্মেই মানুষের জীবনাবসানের দিনপঞ্জি নির্ধারিত থাকে। ধরিত্রীর বুকে ইহ-পরকালের নিগূঢ় বন্ধনকে পরিপূর্ণ উপলব্ধিতে নিয়ে পারাপারের অমূল্য সময়কালকে অকৃত্রিম নিষ্ঠা-ভালোবাসা-শ্রমের মর্যাদায় যাঁরা মহিমান্বিত করতে পেরেছেন; তাঁরাই ইতিহাসের অধ্যায়ে সফল ও সার্থক অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন।

বিবেক-আবেগের অপূর্ব সম্মিলনে যথার্থ অর্থে কার্যকর ভূমিকা পালন এবং দৃশ্যমান কর্মপ্রবচনীয় চিত্রপট না ফেরার দেশে ফিরে যাওয়া অমরত্বকে সমধিক সদাদীপ্ত অক্ষয় জ্যোতির মতো সমাজের গভীরে প্রোথিত রাখে। তেমনই এক মহান ব্যক্তিত্ব মুজিববর্ষে দেশসেরা আঞ্চলিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত পত্রিকা দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ইউসুফ চৌধুরী। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টা ও নিরন্তর পরীক্ষণ-সমীক্ষণ এই পত্রিকাকে সামগ্রিক আঙ্গিকে বিপুল সমাদৃত করার বিষয়টি দেশবাসীর কাছে অতিশয় প্রশংসনীয়।

সৃজন-মননশীল মহান এই ব্যক্তি পত্রিকার মাধ্যমে অবহেলিত ও বঞ্চিত চট্টগ্রামকে উঁচুমাত্রায় প্রতিষ্ঠিত কারার ক্ষেত্রে দুর্জ্ঞেয় উপমা রচনা করেছেন। পত্রিকার প্রকাশনা, প্রচার-প্রসারে বিধেয় কর্তুকাম সম্পন্নে তিনি নিরলস পরিশ্রম, মেধা-প্রজ্ঞার সমীকরণে বীর চট্টলাকে শুধু দেশে নয়; আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চট্টলার প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্য-কৃষ্টি, বাণিজ্য-শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি-বিনোদন ইত্যাদির অবারিত জানালার উন্মুক্তকরণে অনবদ্য ভূমিকায় মর্যাদাসীন করেছেন। চট্টলা হয়েছে গৌরবদীপ্ত, তেজস্বী ও সর্বত্র জ্যোতির্ময়।

১৯২১ সালের ১৯ সেপ্টম্বর চট্টগ্রামের বিখ্যাত রাউজানের ঢেউয়া হাজিপাড়া নামক অজপাড়াগাঁয়ে পিতা আলহাজ দুলামিয়া এবং মাতা আজিজা খাতুনের ঘরে জন্ম নেয়া এই মহান ব্যক্তিটি অবিচল নিষ্ঠা-অক্লান্ত পরিশ্রম-সময়ানুবর্তিতা ও নিবিড় অধ্যাবসায়ের বীজাঙ্কুর চেতনায় নিজের অবস্থানকে দীপ্তিময় আলোবর্তিকায় সমাসীন করতে পেরেছিলেন।

১৯৪৩ সালে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষে উচ্চ-মাধ্যমিকে অধ্যয়নরত ইউসুফ চাচা জীবনে প্রথম কর্মবীর হতে পেরেছেন রাউজানের ফকিরহাটে ‘ছাত্রবন্ধু লাইব্রেরি’র মাধ্যমে বইয়ের ব্যবসা শুরু করে। সেই ব্যবসায় সফল না হয়ে চট্টগ্রাম নগরের জুবলী রোডে ‘অরিয়েন্ট স্টোর’ নামে স্টেশনারি দোকান প্রতিষ্ঠা করেন। সমবায় সমিতি ভবনের পাশে এই দোকান তাঁর জীবনে মোড় ঘুরানোর মাইলফলক স্বরূপ রাজসিক স্থাপনা।

১৯৪৯ সালের শেষপর্যায়ে ‘ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব পাকিস্তান’র এজেন্সি গ্রহণ এবং সংবাদপত্র ও বই বিপণন ব্যবসায় মনোযোগী হন। পরবর্তীতে তিনি ‘নিউজ উইক’, ‘রিডার্স ডাইজেস্ট’, ‘উইকলি টাইম্স’, ‘দ্য ডেইলি ডন’ পত্রিকাসমূহের এজেন্সি প্রাপ্ত হন। ‘নিউজফ্রন্ট’ নামক পুস্তক-প্রতিষ্ঠান, ১৯৬১ সালে প্যাকেজিং শিল্পের উদ্যোগ, ১৯৮৪ সালে সিগনেটবক্স স্থাপনের আরাধ্য অভিজ্ঞতায় ১৯৮৬ সালে আধুনিক সংবাদপত্র দৈনিক পূর্বকোণ প্রকাশনা ছিল তাঁর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণের বিজয়বাহন।

অত্যধিক তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়; তিনি ‘নিউজফ্রন্ট’ থেকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘জীবন-নির্ভর’ নাটক এবং অধ্যাপক আবুল ফজলের ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ বই প্রকাশ করেন। চট্টগ্রাম তথা দেশের কৃষি-সংস্কৃতি সৃজনেও তাঁর কার্যকর অবদান সর্বত্রই গ্রহণযোগ্য। দৃশ্যমান কর্মযজ্ঞের প্রতিস্থাপন তাঁকে প্রতিদিনই চট্টগ্রামবাসীর প্রাণস্পন্দনে অত্যুজ্জ্বল করে তোলে।

অনুপম অনুপ্রেরণা ও তেজোদীপ্ত মহিমায় আত্মপ্রত্যয়ী-আত্মসংযমী-আত্মত্যাগী হওয়ার অপার সম্ভাবনার দ্বার-উম্মোচক সকলের সর্বাধিক প্রিয় চাচা ইউসুফ চৌধুরী। খ্যাতিশীর্ষ দেশ ও বিশ্বের মহামানবদের পরিপূর্ণ অনুসরণে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন এক অনুকরণীয় প্রতিষ্ঠানে। উপমহাদেশের ইতিহাসে খ্যাতিমান বুদ্ধিজীবী-শিক্ষাবিদ-সাংবাদিক-সুশীল ও সাধারণ মানুষের হৃদয় জয় করার মোহময় শক্তিময়তায় ঋদ্ধ ইউসুফ চাচা পূর্ণাঙ্গ সার্থক হয়েছিলেন স্বকীয় সত্ত্বার নিগূঢ় অবগাহনে।

বিশ্বে যাঁরা অতুলনীয় বিস্ময়কর অবস্থানে মর্যাদাসীন হয়েছেন; ধারাবাহিকতায় মাটি ও মানুষের প্রতি প্রগাঢ় মমত্ব-দায়িত্ববোধ জন্ম-জন্মান্তরে সময়-কালের পরিক্রমায় নতুন ধারার স্রষ্টা হিসেবে বাংলাদেশে প্রয়াত ইউসুফ চৌধুরী উঁচুমার্গে সমুজ্জ্বল হয়ে আছেন। সর্বজনশ্রদ্ধেয় ইউসুফ চাচার সফল ও স্বার্থক স্মারক হচ্ছে; বিবেক-আবেগ-দেশপ্রেমের চন্দ্রাতপ আচ্ছাদনে অকৃত্রিম নিষ্ঠা-মেধা-শ্রমের পরিচর্যায় নিজের আবক্ষ অপরূপ শৈলীতে নিজেই তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। উঁচুমাত্রিকতায় গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজের প্রণিধি অভিভাবক ও অফুরন্ত উদ্ভাবনী দীপনে কৃতাহ্নিক দেশ উন্নয়ন প্রকৌশলী হিসেবে প্রয়াত মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরীর দীপ্যমান প্রকাশ গৌরবদীপ্ত মহিমায় পুরো বাঙালি জাতিরাষ্ট্রকে করেছে পরিলক্ষিত আলোকোজ্জ্বল।

১৯৯২ সাল থেকে ডেইরী ও পোল্ট্রি শিল্প আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে চট্টগ্রামের প্রায় চারশত খামার এবং প্রথম গবাদি পশুর মেলার প্রধান উদ্যোক্তা খ্যাতিতে চির ভাস্বর হয়ে আছেন। ডেইরি শিল্পের বিকাশে চট্টগ্রামে প্রথম তাঁর নেতৃত্বে রুগ্ন গরু নিয়ে মিছিল করা হয়। তিনি ছিলেন ডেইরি ও পোলট্রি ফার্ম এসোসিয়েশনের আমৃত্যু সভাপতি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘ইউনাইটেড ক্যামিকেলস’ নামক প্রতিষ্ঠানটি দেশীয় ঔষধশিল্পে এখনও অকল্পনীয় ভূমিকা রেখে চলেছে। কবি নজরুলের আগমনস্থল নিজ বাড়িতে নজরুল মেলার আয়োজন ও নজরুল পাঠাগার স্থাপন করে নজরুল স্মৃতি রক্ষার জন্য কর্মযোগী মানুষ হিসেবে পরিখ্যাত অধ্যায় নির্মাণ করেছেন। চট্টগ্রামের বিআইটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর, ভেটেরিনারী কলেজ স্থাপন এবং তা বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের আন্দোলন-সংগ্রামে তাঁর নিরলস জোরালো ভূমিকা পালনের জন্য ‘চট্টলদরদী’ উপাধিতে ভূষিত হন।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি হিসেবে চট্টগ্রামবাসীর সার্বিক দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কার, পানি সঙ্কটসহ নানা সমস্যা চিহ্নিতকরণে তিনি ছিলেন অগ্রগন্য। এসব সমস্যা থেকে উত্তরণে কর্মোদ্যোগ গ্রহণ, হালদা নদীতে মৎস্য প্রজননের উপযোগী সংস্কার এবং উন্নয়ন, কর্ণফুলী নদীকে দখল-পরিবেশ দূষণ মুক্ত করে পরিকল্পিত নগরী প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে জনগণকে সচেতন ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং যুগোপযোগী কর্মকৌশল আধুনিকায়নে উচ্চকিত কণ্ঠস্বর ছিলেন।

২০০১ সালে তিনি হালদা নদী নিয়ে দৈনিক পূর্বকোণে সিরিজ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। ২০০২ সালে হালদা নদীর সোনাইচর বাঁক কাটার প্রেক্ষিতে হালদার পরিবেশ রক্ষায় পূর্বকোণ পত্রিকার মাধ্যমে প্রথম প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী।

চট্টগ্রামের জনদুর্ভোগ সৃষ্টিতে দৃশ্যমান সঙ্কটগুলোকে সুস্পষ্টভাবে জনসম্মুখে প্রতিস্থাপন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণে দৈনিক পূর্বকোণের অনবদ্য ভূমিকা ও এর গ্রহণযোগ্যতা চট্টগ্রামবাসীর হৃদয়ে প্রীয়মাণ হতে সহায়ক হয়েছে। সমস্যার স্বরূপ উম্মোচন ও সমাধানের কার্যকর কর্মকৌশল গ্রহণে দৈনিক পূর্বকোণের লেখনি-প্রতিবেদন যুগান্তকারী অবদান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।

দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকার উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে; সমসাময়িক আন্তর্জাতিক ও জাতীয় বিষয়গুলোকে চকমপ্রদ প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ ও জনগণকে সম্যক অবহিতকরণে প্রোজ্জ্বল অনুপ্রেরণা। প্রাসঙ্গিকতায় চলমান পরিস্থিতিতেও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও স্বাভাবিক জীবন-জীবিকার সচলতায় প্রণোদিত সম্পাদকীয়-উপসম্পাদকীয় দৈনিক পূর্বকোণের প্রচার-প্রসারতা সর্বত্রই ভাবান্তরিত হয়েছে।

সভ্যতার প্রণিধানযোগ্য অবদান হচ্ছে মানবসৃষ্ট মানবিক সৃজনশীলতা। জ্ঞানাঙ্কুর মনন পরিচর্যার সার্থক রূপায়ন কৃষ্টি-ঐতিহ্য-সংস্কৃতির চন্দ্রোদয় অবগাহনে পরিপুষ্ট। বৃদ্ধিবৃত্তিক সমাজের পরিশীলিত গবেষণায় প্রাপ্ত নবতর আবিষ্কার ও অভিজ্ঞতার চারণভূমি আধুনিক এই ধরিত্রী।

জীবন প্রবাহের নৈর্ব্যত্তিক গতিশীলতা ও জনমুখী আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক-অসাম্প্রদায়িক বিকাশমানতায় গণমাধ্যমের চিরায়ত ভূমিকা নিরন্তর প্রশংসিত ও সমাদৃত। এটি সর্বজনবিদিত, সংস্কৃতির বস্তু ও অবস্তুগত প্রবাহের জটিল মিথস্ক্রিয়ায় সততা-নৈতিকতা-সত্যবাদিতা-শুদ্ধাচার আপেক্ষিক সমাজে প্রতিনিয়ত ক্ষত-বিক্ষত। অশঙ্ক পরিকল্পনায় একদিকে নির্মিত হয়েছে আগ্রাসনবৃত্ত, অন্যদিকে পর্যুদস্ত ঐতিহ্য-কৃষ্টির ভৈরবী।

বৃহত্তর সমাজের বৈষম্যের বিরাজিত যুগপৎ সংকট জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অর্থনৈতিক আধিপত্যবাদকেই পক্ষান্তরে উম্মোচিত করেছে নির্ভরশীলতার নতুন কদর্য দিগন্ত। দৃশ্যমান কর্মযজ্ঞের প্রতিস্থাপন তাঁকে প্রতিদিনই চট্টগ্রামবাসীর প্রাণস্পন্দনে অবিস্মরণীয় করে তুলে। ত্রৈকালিক অভিযাত্রায় প্রণিধানযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহের সমন্বয় ঘটিয়ে রচনা করেছেন জীবন-দর্শনের তৌর্যত্রিক পাণ্ডুলিপি। বহুধা গুনে গুনান্বিত এই প্রবাদপুরুষ নিজের পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামবাসীকে দেশীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনন্য উচ্চতায় সমাসীন করেছেন।

গণমাধ্যম্যের গুনগত উৎকর্ষতা, বস্তুনিষ্ঠ-সত্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনা, সাহিত্য-শিল্পকলা, ঐতিহ্য-কৃষ্টি-সংস্কৃতির সার্বিক বিষয়ে সমসাময়িক পদচারণায় আকর্ষণীয় আঙ্গিক ও কলবরে ব্যাপৃত দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট শিল্পপতি, মাটি ও মানুষের প্রতি গভীর মমত্ববোধ, অসাম্প্রদায়িক মানবিক ও দেশপ্রেমিক ইউসুফ চাচার জীবনের আড়ালে বহু ঘটনা এখনোও অনাবিষ্কৃত। ক্ষণজন্মা এই ব্যক্তিত্বের জীবন ও সমাজ দর্শন চট্টগ্রামের তরুণ প্রজন্মকে নতুন পথের সন্ধান দিবে- এটিই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

বিশুদ্ধ চট্টলমানস ইউসুফ চৌধুরী ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পবিত্র মক্কা নগরীতে ওমরাহ পালনকালে অন্তিমযাত্রার সারথি হয়ে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের মতে আল্লাহর নৈকট্য লাভে পুণ্যতার মার্গশীর্ষে নিজেকে অধিষ্ঠিত করতে পেরেছেন।

নিবন্ধের শেষে জাতীয় কবি নজরুলের ‘তুমি কি গিয়াছ ভুলে’ কবিতার কয়েকটি চরণ নিবেদনে আজকের দিনে এই কৃতিমানবের পূত-পবিত্র স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি ‘তুমি কি গিয়াছ ভুলে?/ তোমার চরণ-স্মরণ-চিহ্ন আজো মোর নদীকূলে/ মুছিল না প্রিয়, মুছিল না তার বুকে যে লিখিলে লেখা,/ মাঝে বহে স্রোত, দু’কূল জুড়িয়া চরণ-স্মরণ-রেখা !/ বন্যার ঢল, জোয়ার, উজান আসে যায় ফিরে ফিরে/ ও চরণরেখা মুছিল না মোর বালুচরে নদীতীরে !/ উর্ধ্বে ধূসর সান্ধ্য আকাশে ক্ষীণ চন্দ্রের লেখা,/ নিম্নে আমার শূন্য বালুচরে তোমার চরণরেখা।’

প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী শিক্ষাবিদ,

সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট