চট্টগ্রাম রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

ভারীপণ্য ওঠানামায় নতুন জেটি বানাবে চট্টগ্রাম বন্দর

সারোয়ার আহমদ

৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ | ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ

অনেক আগে থেকেই চাহিদা থাকলেও চট্টগ্রাম বন্দরে সম্প্রতি উল্লেখযোগ্য হারে ভারী কার্গো পণ্য আমদানি বেড়েছে। ফলে ভারী পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের জন্য বিশেষ জেটি নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। আর সেই চাহিদা পূরণে এবার চট্টগ্রাম বন্দর নির্মাণ করবে পশ্চাদ সুবিধাসহ হেভি লিফট কার্গো জেটি।

চট্টগ্রাম বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থের (জিসিবি) ১৩ নম্বর জেটির পর এবং চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) ১ নম্বর জেটির আগে অবস্থিত মহেশ খালের আগ পর্যন্ত জায়গায় এই বিশেষ জেটি নির্মাণ করা হবে। জেটির প্রশস্ত হবে ১২৫ মিটার। এছাড়া মহেশ খালের আগ পর্যন্ত জায়গাটিতে হেভি লোড কার্গো রাখার ইয়ার্ড নির্মাণ করা হবে। সবমিলিয়ে এ কাজে বন্দরের ব্যয় হতে পরে ১৭৪ কোটি টাকা।

উল্লেখ্য, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে ভারী পণ্য খালাসের জন্য নির্দিষ্ট কোনো জেটি নেই। অথচ বর্তমানে দেশের অবকাঠামাগত উন্নয়নে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। পাশাপাশি বেসরকারি খাতের ভারী শিল্পও এগিয়েছে। ফলে অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি হওয়া হেভি ওয়েট কার্গো (ভারী পণ্য) খালাসের পরিমাণ বেড়েছে বহুগুন।

ফলে বন্দরের বিদ্যমান জেটিতে ভারী মালামাল হ্যান্ডলিং, স্টোরেজ, বোঝাই এমনকি পরিবহন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। একই সঙ্গে ব্যয়বহুলও। এমন অবস্থায় সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে এর কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটলে যে কোনো সময় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।

বর্তমানে হেভি ওয়েট কার্গো পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি জেটিতে খালাস হলেও সেখানে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ ব্যাপক হারে বেড়েছে। তাছাড়া পানগাঁওগামী কনটেইনার জাহাজ এবং কোস্টাল শিপ বেড়ে যাওয়ায় এনসিটিতে সব সময় বার্থ খালিও পাওয়া যায় না। ফলে ভারী পণ্য খালাসের কাজে বিঘ্ন ঘটে।

এছাড়া এনসিটি বার্থ মূলত কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য ডিজাইন ও নির্মাণ করা হয়। ওই বার্থের বা জেটির ভার বহনক্ষমতা প্রতি বর্গমিটারে তিন টন। ফলে এখন ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মেকানিক্যাল ডিভাইস ব্যবহার করে লোড ডিস্ট্রিবিউশনের মাধ্যমে জাহাজের ক্রেনের সাহোয্যে ভারী কার্গো ল্যান্ডিংয়ের কাজ করা হচ্ছে। তাতে যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটাসহ জেটি ক্র্যাক হওয়ার আশঙ্কার বিষয়টি খোদ বন্দর কর্তৃপক্ষেরই নিজস্ব একটি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে।

এদিকে হেভি লিফট কার্গো জেটি নির্মাণ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক পূর্বকোণকে বলেন, সময়ের সাথে সাথে বন্দরে ভারী পণ্য আসার পরিমাণ বেড়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সেই চিন্তা মাথায় রেখে একটি বিশেষ জেটি নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এটি আরো আগেই পরিকল্পনা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় এই কাজের অনুমোদনে ইতিবাচক সারা পাওয়া গেছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার সাথে সাথে আমরা জেটি নির্মাণের সিভিল ওয়ার্ক শুরু করে দিতে পারবো।

তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে বড় তিনটি জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেগুলোও হেভি কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে সক্ষম। তবে যাতায়াতের সুবিধার্থে ও ভারী পণ্য সংরক্ষণের কথা মাথায় রেখে বন্দর কর্তৃপক্ষ পশ্চাদ সুবিধাসহ হেভি লিফট কার্গো জেটি নির্মাণ করবে।

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট