চট্টগ্রাম রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ভবনে বসবাস চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের

ইমাম হোসাইন রাজু

৩ আগস্ট, ২০২২ | ১:৩৯ অপরাহ্ণ

প্রবাদ আছে ‘বাইরে ফিটফাট, ভেতরে সদরঘাট’। এ প্রবাদের ব্যতিক্রম নয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টারগুলো। কোয়ার্টারে প্রবেশ করতেই ভবনের সামনের অংশ ঝকঝকে আর তকতকে মনে হলেও ভেতরের অবস্থা পুরোটাই বিপরীত। কোথাও খসে পড়ছে ভবনের পলেস্তরাঁ, ভেঙে পড়ছে দরজা-জানালা। আবার কোনো কোনো ভবনের ফ্লোর দেবে যাচ্ছে। তবুও জরাজীর্ণ এসব ভবনেই মনবেতর দিনাতিপাত করে যাচ্ছেন চমেক ও হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বলা চলে ঝুঁকি নিয়েই বসবাস করে যাচ্ছেন বৃহৎ এ হাসপাতাল ও কলেজের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৫৫ সালে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার আগেই চিকিৎসক-নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ শুরু করা হয়। যেখানে বর্তমানে ২১টি ভবন রয়েছে। পদভেদে এসব ভবনে প্রায় দেড়শ’ চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিবার বসবাস করছে। কিন্তু বেশিরভাগ ভবনই এখন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে ওঠেছে। কিছুদিন পরপর মেরামত করা হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। এ কারণে প্রায়ই অভিযোগ থাকে বসবাসকারীদের। এদিকে সম্প্রতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসন সমস্যার বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। যাদের আবাসন উন্নয়ন করার বিষয়ে মতামত প্রদান করতে বলা হয়। কমিটিও কর্তৃপক্ষকে নতুন করে ভবন নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করে।

এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. রাজিব পালিত বলেন, আমরা সরেজমিনে দেখে নতুন করে কোন ভবন করা যায় কি-না, সে বিষয়েও মতামত প্রদান করেছি। মূলত সম্ভাব্যতা যাচাই করে একটা প্রতিবেদন প্রদান করা হয়। আমরা বলেছি যে জায়গা আছে, তাতে বহুতল ভবন নতুন করে নির্মাণ করা উত্তম হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্টাফ কোয়ার্টারের বেশিরভাগ ভবনই বসবাসের ‘অনুপযোগী’। ভবনের বাইরে রঙে চিকমিক করলেও ভেতরে পলেস্তরাঁ খসে পড়ছে। জানালার গ্রিল মরিচায় নষ্ট হয়ে গেছে। সঙ্গে কাঠের ফ্রেমগুলোও পঁচে ভেঙে আছে। পানি নিঃস্কাশনের ব্যবস্থা নেই বললে চলে। ড্রেন থাকলেও দুর্গন্ধ আর অপরিচ্ছন্ন পড়ে আছে।

কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ‘মাঝেমাঝে প্লাস্টার যেভাবে ভেঙে পড়ে তাতে এক প্রকার আতংকে থাকতে হয়। ছোট ছোট কক্ষের মধ্যে থাকাটাও খুব কষ্টের। তারমধ্যে একটি মাত্র ওয়াশরুম। এছাড়া তৃতীয় তলায় যারা থাকি, বর্ষার সময় পানি চুইয়ে পড়ে। তবুও সরকারি চাকুরি আর কম বেতনের কারণে কষ্ট হলেও থাকতে হচ্ছে আমাদের। এসব ভবন বহু পুরনো। থাকার উপযুক্ত নয়। আশা করছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করবে।’

চমেক হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জাহেদুন নবী চৌধুরী বলেন, কিছুদিন পরপরই বাসা মেরামতের জন্য বাসিন্দারা আমাদের কাছে আসেন। আমরাও বাসাগুলো মেরামত করে দিচ্ছি। তবে ভাল হয় নতুন করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা।

এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমা বলেন, ‘চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারীদের আবাসন সমস্যা দীর্ঘদিনের। বিষয়টি নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করবো।’

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট