চট্টগ্রাম বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে নামছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

১ ডিসেম্বর, ২০১৮ | ১০:০৫ পূর্বাহ্ণ

৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী ও দাগি আসামিদের গ্রেফতার অভিযানের পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে নজর দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স নবায়ন করতে সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। চট্টগ্রাম সেনানিবাস, মহানগর ও উপজেলায় বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স নবায়ন করতে আগামীকাল ২ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।-বাংলানিউজ
বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স নবায়নে চট্টগ্রাম সেনানিবাস, মহানগর ও উপজেলাগুলোকে ৯টি বিভাগে ভাগ করে ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের নিয়মিত অভিযান চললেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ অভিযান জোরদার করতে পুলিশের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের মাসিক কল্যাণ ও অপরাধ সভায়ও থানার ওসিদের এ ব্যাপারে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে বিভিন্ন প্রকারের মোট ১২০টি অবৈধ অস্ত্র, ১৩টি ম্যাগজিন, ৯৭ রাউন্ড গুলি ও ২৬৭ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া অবৈধ অস্ত্রের মধ্যে আছে-রিভলবার, বিদেশি পিস্তল, দেশি পিস্তল, ফ্লেয়ার গান, এলজি, পাইপগান, একনলা বন্দুক, ওয়ান শুটার গান, শর্ট গান, দোনলা বন্দুক, কাটা বন্দুক, দেশীয় তৈরি বন্দুক। এসব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে মোট ৫৪২ আসামি।
এছাড়া গত ২ নভেম্বর সন্দ্বীপের মঘধরা থেকে ৫টি অস্ত্রসহ শিমুল মেম্বারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ১৩ জুন বাঁশখালীর সরল এলাকা থেকে ৭টি অস্ত্র এবং গত ৬ অক্টোবর রাঙ্গুনিয়া থেকে ১০টি অস্ত্রসহ সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আসন্ন নির্বাচনে চট্টগ্রাম নগর ও পার্শ্ববর্তী ৬টি আসনসহ ১৬ আসনের সবগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাড়ানো হচ্ছে ফোর্স।
চট্টগ্রাম রেঞ্জে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রায় ২ হাজার অতিরিক্ত ফোর্স যুক্ত হচ্ছে বলে বাংলানিউজকে জানান চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক।
তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও গোষ্ঠী অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য প্রস্তুতি আছে পুলিশের।
ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, নির্বাচনে সব প্রার্থী আমাদের কাছে সমান। কে আওয়ামী লীগ, কে বিএনপি-সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সচেষ্ট রয়েছি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও অবৈধ অস্ত্রধারীরা যাতে কোনও অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য থানার ওসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের নিয়মিত চেকপোস্ট বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, নগরের গুরুত্বপূর্ণ ২০টি পয়েন্টে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। একই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে মোবাইল ডিউটি।
গুরুত্বপূর্ণ ২০টি পয়েন্টের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর, চট্টগ্রাম রেলস্টেশন (নতুন ও পুরাতন), সিজিএস-পাহাড়তলী মেইন গেট, চট্টগ্রাম পোর্ট ইয়ার্ড-হালিশহর, পাহাড়তলী রেলস্টেশন, ষোলশহর রেলস্টেশন, ইস্পাহানি মোড় রেলক্রসিং, সিআরবি এলাকা, সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম-সিআরবি ও পাহাড়তলী পাওয়ার স্টেশন।
নগরের পাশাপাশি উপজেলাগুলোতেও বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সীতাকু- ও সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালীর মতো সম্ভাব্য নাশকতার পয়েন্টগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জেলার ১৬ থানা ও মহাসড়কে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত ২ হাজার পুলিশ সদস্য।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট