চট্টগ্রাম শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

নয় মাসে ২২.২২% প্রবৃদ্ধি

নিজস্ব প্রতিবেদক

৬ এপ্রিল, ২০২২ | ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ

দেশের সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায়কারী শুল্ক স্টেশন চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস চলতি অর্থবছরের (২০২১-২০২২) গত নয় মাসে ২২ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এই সময়ে (জুলাই থেকে মার্চ) চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে রাজস্ব আহরণ হয় ৪২ হাজার ৮১৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এর আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৩৫ হাজার ৩১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ গত অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ৭ হাজার ৭৮৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।

প্রবৃদ্ধি প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম পূর্বকোণকে বলেন, গত অর্থবছরে করোনার কারণে শিল্প-কারখানাগুলো সীমিত পরিসরে তাদের কার্যক্রম চালিয়েছিল। তাই আমদানি কম হয়েছিল। রাজস্ব আদায়ও কম হয়েছিল। কিন্তু চলতি অর্থবছরে আবার দেশের ব্যবসা বাণিজ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমদানি বেড়েছে। রাজস্ব আদায়ও বেড়েছে। তিনি বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়ার আরেক কারণ হলো- আগের তুলনায় আমদানি-রপ্তানিতে অনিয়ম কমে যাওয়া। আগে এক একটি অনিয়মে বিপুল অর্থ জড়িত থাকতো। যার কারণে বড় অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি হতো। কিন্তু এখন অনিয়ম কমে গেছে। তাই গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বেশি রাজস্ব আহরণ হয়েছে।

কমিশনার বলেন, রাজস্ব আয় বাড়াতে কাস্টমসের অনিয়মের দণ্ডবিধিতে পরিবর্তন আনাও ভূমিকা রেখেছে। আগে অনিয়ম করলেও কম শাস্তি হতো। যার কারণে অসাধু ব্যক্তিরা বার বার অনিয়ম করার সাহস পেতো। কিন্তু এখন অনিয়মের কারণে ন্যূনতম দ্বিগুণ জরিমানা করা হয়। যা ক্ষেত্র বিশেষে অনিয়মের মাত্রা হিসেবে সর্বোচ্চ চারগুণ করা হয়। ‘এছাড়া বন্ড ব্যবস্থায় কঠোর অবস্থানের কারণেও রাজস্ব ফাঁকি কমে গেছে। আগে বন্ড সুবিধায় অনেকে কমার্শিয়াল পণ্য আমদানি করে খালাস করতো। এতে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হতো। কড়া নজরদারির কারণে এই সুযোগ আর কেউ পাচ্ছে না। এসব কারণে অপরাধের মাত্রা কমে গিয়ে রাজস্ব আহরণ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।’ যোগ করেন তিনি।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাজস্ব আদায়ের চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে থাকলেও চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের নয় মাসে আশানুরূপ রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়নি। এই সময়ে কাস্টমসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। তবে রাজস্ব আদায় হয়েছে হয় ৪২ হাজার ৮১৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।

এ দিকে সর্বশেষ গত মার্চ মাসে কাস্টমসের রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪.৯৭ শতাংশ। মার্চ মাসে রাজস্ব আদায় হয় ৫ হাজার ৩২৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের মার্চ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছিলো ৫ হাজার ৭৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা। যদিও এই মাসে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ৫ কাজার ৯০৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলো।
প্রসঙ্গত চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৪ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে নয় মাস শেষে আহরণ হয়েছে ৪২ হাজার ৮১৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসকে আগামী ৩ মাসে আরো ২১ হাজার ১৯৯ কোটি ২১ লাখ টাকা আহরণ করতে হবে।

 

পূর্বকোণ/এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট