চট্টগ্রাম শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

সীতাকুণ্ডে শিব চতুর্দশী মেলায় ভিড়ে অসুস্থ ৪ শতাধিক ভক্ত

সীতাকুণ্ড সংবাদদাতা

১ মার্চ, ২০২২ | ৫:২৮ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ ধামে তিন দিন ব্যাপী শিব চতুর্দশী মেলায় গত দুই দিনে প্রায় ২০ লাখ ভক্তের সমাগম হয়েছে। ফলে মহাতীর্থের অন্তত ৫ কিলোমিটার এলাকায় উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত এসব পুণ্যার্থীরা ব্যাসকুণ্ডে পুণ্যস্নান শেষে তীর্থের বিভিন্ন মঠ-মন্দিরে পূজা করে ফিরে যাচ্ছেন। এদিকে এ মেলায় প্রচণ্ড ভিড়ে দুই দিনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অন্তত ৪৩৬ পুণ্যার্থী। এছাড়া ভিড়ের সুযোগে পকেট কাটাসহ বিভিন্নভাবে টাকা, মোবাইল মূল্যবান সরঞ্জাম খুইয়েছেন বহু পুণ্যার্থী। অনেকেই তাদের স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ ধামে যে তিথিকে কেন্দ্র করে তিন দিনব্যাপী বিশাল মেলা ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। সেই শিব চতুর্দশী শুরু হয়েছে সোমবার রাত ২টা ৫০ মিনিটে। মঙ্গলবার পুরোদিন শেষে রাত ১টা ৭ মিনিট পর্যন্ত এ তিথি ছিলো। এ কারণে শিব চতুর্দশী তিথিতে স্বয়ংম্ভুনাথ (শিব) এর পূজা-অর্চনা করে পুণ্যলাভের জন্য গত দুই দিনে এই তীর্থে ছুটে আসেন ২০ লাখেরও বেশি মানুষ।

সরেজমিনে মঙ্গলবার এই তীর্থভূমি ঘুরে দেখা যায়, সীতাকুণ্ড পৌরসদরের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে আরো দুই কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক শেষে সাড়ে ৩ কি.মি উঁচু পাহাড় চূড়ায় অবস্থিত চন্দ্রনাথ মন্দির পর্যন্ত তীর্থ ক্ষেত্রের সর্বত্র লোকে লোকারণ্য। এছাড়া লাখ লাখ ভক্ত দর্শন করেছেন এই তীর্থের অঙ্গতীর্থ সীতাকুণ্ডের ছোটদারোগারহাট লবণাক্ষ ও বাড়বকুণ্ডে বাড়বানল।

সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথধাম মেলা কমিটির কার্যকরী সভাপতি মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, মেলায় প্রতিবছর ১৫-২০ লাখ ভক্তের আগমন হয়। এবার করোনার প্রভাব কম থাকায় বিপুল ভক্তের সমাগম হয়েছে। পৌরসদর থেকে পাহাড় চূড়া পর্যন্ত কোথাও তিল ঠাঁই নেই। সোমবার ৮-১০ লাখ ভক্তের আগমন হয়। মঙ্গলবার সেই সংখ্যা আরো বেশি। ওই হিসেবে ২০ লক্ষাধিক ভক্তের আগমন হয়েছে। এই ভিড়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়লেও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি।

সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়া ৪৩৬ জন পুণ্যার্থীকে চিকিৎসা দিয়েছেন তারা। এছাড়া প্রতিনিয়তই কেউ না কেউ চিকিৎসা নিতে আসছে।

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এত বিশাল একটি মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করাটা কঠিন হলেও আমাদের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতায় আমাদের চার শতাধিক পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী মিলে সেই কঠিন কাজটি আমরা করে যাচ্ছি। চার জন পকেটমার আটক করেছি।

সীতাকুণ্ড মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পলাশ চৌধুরী বলেন, সরকারের প্রতিটি দপ্তর মেলাকে সহযোগিতা করছেন বলেই ২০ লক্ষাধিক মানুষের মেলাটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের পথে। বুধবার মেলার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হবে।

 

পূর্বকোণ/পিআর/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট