চট্টগ্রাম শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

কমছে না নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য

থমকে আছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড

মোহাম্মদ আলী

৪ জানুয়ারি, ২০২২ | ১:১৪ অপরাহ্ণ

এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য। শুধুমাত্র রড, পাথর ও বিটুমিনের দাম আগের চাইতে সামান্য কমেছে। ইট ও সিমেন্টের মূল্য আজো অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে থমকে আছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড।
প্রতি টন রডের মূল্য ৭৫ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেড় মাস আগেও টন প্রতি রডের মূল্য ছিল ৮২ হাজার টাকা। টন প্রতি ৪০০ টাকা কমে বর্তমানে পাথর বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার টাকা। আগে বিক্রি হয়েছিল প্রতি টন ৪৪০০ টাকা। বর্তমানে বিটুমিন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ কেজি ওজনের প্রতি ড্রাম ৯ হাজার ৩০০ টাকা। প্রতি বস্তা সিমেন্ট বিক্রি হচ্ছে ৩৯০ থেকে ৪০০ টাকা। ১০ মাসের ব্যবধানে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য না কমায় আন্দোলনের পরবর্তী কৌশল নির্ধারণের জন্য আগামী ৮ জানুয়ারি বৈঠকে বসছে ঠিকাদার সমিতিগুলো।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম এলজিইডি ঠিকাদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান টিটু পূর্বকোণকে বলেন, ‘রড, পাথর ও বিটুমিনের দাম আগের চাইতে সামান্য কমেছে। ইট ও সিমেন্টের মূল্য আজো অপরিবর্তিত রয়েছে। নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। মূল্য না কমায় আন্দোলনের পরবর্তী কৌশল নির্ধারণের জন্য আগামী ৮ জানুয়ারি বৈঠকে বসছে ঠিকাদার সমিতিগুলো।’
আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, ‘চট্টগ্রামে এলজিইডি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, জেলা পরিষদ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে। এতে ঠিকাদার রয়েছেন প্রায় আড়াই হাজার। তারা সবাই সরকারের উন্নয়ন কাজের অংশীদার। কিন্তু হঠাৎ করে গত ১০ মাস ধরে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধির কারণে ঠিকাদাররা সমস্যায় পড়েছেন। একই সময়ে বেড়েছে ইলেকট্রিক, হার্ডওয়্যার, স্যানেটারিসহ বিভিন্ন পণ্যের। বেড়েছে নির্মাণ শ্রমিকের। আগে একজন নির্মাণ শ্রমিকের দিনে মজুরি ছিল ৫০০ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৮০০ টাকা। এতে চলমান প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন নিয়ে সমস্যায় পড়েছি।’
এদিকে, ঠিকাদাররা অভিযোগ করে বলেন, গত ১০ মাসের বিভিন্ন সময়ে নির্মাণ সামগ্রীর দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। প্রতি টন লোহার মূল্য গড়ে ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি ব্যাগ সিমেন্টের মূল্য বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পাথরের প্রতি টনে মূল্য বেড়েছে ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা। সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না দেশীয় উৎপাদিত বিটুমিনের। সমান্তরালে বেড়েছে ইট ও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীরও। এতে নির্মাণ কাজে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় সরকারের চলমান প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে আর্থিক লোকসানের শিকার হচ্ছে ঠিকাদাররা।
ঠিকাদাররা জানান, সরকারের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কিছু কাজ ২০১৪ সালের এবং কিছু প্রকল্প ২০১৮ সালের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। বর্তমানের বাজার মূল্য ওই সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। সবমিলে বর্তমানে গড়ে প্রায় ৩০ শতাংশ নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বেড়েছে। এর মধ্যে প্রকল্পের মূল্য থেকে সরকারকে সাড়ে ১২ শতাংশ ভ্যাট ও ইনকাম ট্যাক্স দিতে হয়। এছাড়াও বেড়েছে মিস্ত্রি খরচও। তাই নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির কারণে ঠিকাদারদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। বিষয়টি আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি।

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট