চট্টগ্রাম শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

২০টি বিধি প্রণয়নের সুযোগ থাকলেও করা হয়নি একটিও

ইফতেখারুল ইসলাম 

২৭ ডিসেম্বর, ২০২১ | ১:০০ অপরাহ্ণ

স্থানীয় সরকার আইনে সিটি কর্পোরেশনকে ২০টি বিধি প্রণয়নের সুযোগ দিয়েছে। যা প্রণয়ন করলে অনেক ধরনের অনিয়ম সহজে আর করতে পারবে না। কেউ করে থাকলেও এই আইনি উপকরণের জালে আটকে যাবে। কিন্তু দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একটি বিধিও প্রণয়ন করতে পারেনি। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীও স্বীকার করেছেন বিধিসমূহ প্রণয়ন করা গেলে কাজে অনেক শৃঙ্খলা আসতো। সেবার মান বাড়তো।

স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৯ এ ২০ বিধি প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরদের দায়িত্ব, কার্যাবলী ও সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত। মেয়র এবং কাউন্সিলর নির্বাচনের উদ্দেশ্যে ওয়ার্ডসমূহের এলাকা নির্ধারণ। মেয়র এবং কাউন্সিলর অপসারণের জন্য বিশেষ সভা আহবানের পদ্ধতি। কর্পোরেশনের কার্য কি প্রকার এবং কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিষ্পন্ন হবে তা নির্ধারণ। পূর্তকাজ সম্পাদনের পদ্ধতি, সম্পাদন করার জন্য প্রদেয় টাকার হারের তফসিল। বাৎসরিক পূর্তকাজের কর্মসূচি এবং তার মঞ্জুরি ও বাস্তবায়ন। পূর্তকাজ পরিদর্শন এবং পরিদর্শন কর্মকর্তাদের ক্ষমতা সংক্রান্ত বিধি করা যাবে। চুক্তি সম্পাদন, নিবন্ধন ও বলবৎ করার পদ্ধতি, ঠিকাদারদের নিবন্ধন ফিস, ঠিকাদার কর্তৃক প্রদেয় জামানত এবং জামানত বাজেয়াপ্তের শর্তাদি সংক্রান্ত বিধি প্রণয়ন। রক্ষণাবেক্ষণযোগ্য রেকর্ডসমূহ, কি কি রিপোর্ট এবং রিটার্ন প্রস্তুত করতে হবে তা নিরূপণ এবং তার প্রকাশনা পদ্ধতি, অপ্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্রের হেফাজতকরণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও ধংসকরণ। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার উপর কি কি ক্ষমতা ন্যস্ত হবে এবং তা কিভাবে নির্বাহ হবে তা নির্ধারণ। কর্পোরেশনের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত পদ্ধতি। কর্পোরেশনের তহবিলের হেফাজত, বিনিয়োগ, পরিচালনা, প্রয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ এবং ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ ফান্ড ও অন্যন্যা তহবিল স্থাপন। বাজেটের ফরম ও প্রণয়ন পদ্ধতি, কর্পোরেশনের নিকট বাজেট পেশ এবং তা বিবেচনা ও অনুমোদনের পদ্ধতি, কর্পোরেশনের বাজেট সভা আহ্বান ও বাজেট সংশোধন পদ্ধতি সংক্রান্ত বিধি করা যাবে। হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি, মাসিক ও বার্ষিক হিসাব প্রণয়ন, পরীক্ষা, প্রত্যয়ন ও প্রকাশনা। কি কি উদ্দেশ্যে এবং কিভাবে ঋণ সংগ্রহ করা যাবে তা নির্ধারণ, ঋণের সর্বোচ্চ পরিমাণ নির্দিষ্টকরণ। কর্পোরেশনের সম্পদ তহবিল অবচয় বা অপ্রয়োগকারি ব্যক্তির দায়িত্ব নির্ধারণ পদ্ধতি। সম্পত্তি নিবন্ধিকরণ ও প্রতিপাদন এবং তার হিসাবরক্ষণ। কর, উপকর, রেইট, টোল, ফিস ও অন্যান্য দাবি নির্ধারণ, উসুল ও নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি এবং এ সম্পর্কে করদাতাদের দায়িত্ব। অকট্রয় ফাঁকি বন্ধকরণ, অকট্রয় আদায়যোগ্য মালের তল্লাশি ও অকট্রয় আদায়ের জন্য পরিচালিত অভিযান দাবি সংক্রান্ত বিধি করা যাবে। কর এবং অন্যান্য দাবির বিল ও নোটিশ জারি পদ্ধতি, ক্রোক ও বিক্রয়পূর্বক কর এবং অন্যান্য দাবি আদায় পদ্ধতি, অনাদায়যোগ্য দাবি খারিজ সংক্রান্ত বিধি করা যাবে।

জানতে চাইলে সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, প্রবিধান, উপ-আইন, বিধি এসব করতে পারলে চসিকের কাজের শৃঙ্খলা আসবে। সেবার মান বাড়বে। দুটি উপ-আইন করা হয়েছে। বিধি, প্রবিধান, উপ-আইনসহ যেসব আইনি উপকরণ প্রণয়নের সুযোগ রয়েছে ধীরে ধীরে তা করা হবে। অতীতে এসব কার্যক্রম না করার কারণে কিছু বিষয়ে বিশৃঙ্খলা রয়ে গেছে। বিশেষ করে ভূ-সম্পত্তি, দোকানসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাড়া কিংবা বরাদ্দ দেয়ার ক্ষেত্রে চসিকের স্বার্থটা পুরোপুরি রক্ষা হয়নি।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট