চট্টগ্রাম রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

ওয়েভার সনদ জটিলতার অবসানে ৪ দফা সুপারিশ

সারোয়ার আহমদ 

৩১ আগস্ট, ২০২১ | ১২:৪৭ অপরাহ্ণ

পণ্য পরিবহনে দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজকে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য ১৫দিন আগে শিপিং এজেন্টদের ওয়েভার সনদ নেয়ার আবেদন করার বিধানটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশন। এছাড়াও এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সনদ নিতে জাহাজ মালিক সমিতির অনাপত্তি গ্রহণের বাধ্যবাধকতাও প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে এ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে ৪ দফা সুপারিশ করে শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন।

গত রবিবার নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর এ দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের (বিএসএএ) সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘দেশি পতাকাবাহী জাহাজ স্বার্থরক্ষা আইন’ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নিয়ম অনুযায়ী শিপিং এজেন্টদের ওয়েভার সনদ পেতে জাহাজে পণ্য বোঝাই করার ন্যূনতম ১৫ কার্যদিবস পূর্বে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করার বিধি রাখা হয়েছে। যা বাস্তবায়নে শিপিং এজেন্টগণ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

সমস্যার বিভিন্ন কারণ তুলে ধরে বলেন, পণ্য আমদানির শুরু থেকে এলসি ওপেনিং, কার্গো ফিক্সিং, ভেসেল চার্টারিং ইত্যাদি সম্পূর্ণরূপে আমদানিকরকের দায়িত্ব এবং সার্বিক বিষয়টি শুধুমাত্র আমদানিকারকই অবগত থাকে। সাধারণত, জাহাজে পণ্য বোঝাই করার পরে শিপিং এজেন্ট আমদানিকারকের চাহিদা মোতাবেক পোর্ট ডিসচার্জে এ জাহাজের প্রতিনিধিত্ব করেন। উপমহাদেশীয়/পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের বন্দর এবং বাংলাদেশের বন্দরের মধ্যে স্বল্পতম সময়ে জাহাজ গমনাগমন করে। যার ভয়েজ টাইম কখনোই ৫ থেকে ১ দিনের বেশি হয় না। অধিকাংশ সময় পণ্য বোঝাই করার ২/৩ দিন পূর্বে জাহাজ মালিক এবং চার্টারার  এর সাথে ফিক্সার নোট সম্পাদিত হয়। পণ্য বোঝাই এর পূর্বে জাহাজ মালিক এবং চার্টারার এর বিভিন্ন বাধ্যবাধকতার কারণে প্রায় সময় জাহাজের নাম পরিবর্তন হয়। ফলে বাস্তবতার নিরিখে কোনোমতেই পণ্য বোঝাইয়ের ১৫ কার্যদিবস পূর্বে প্রত্যেক জাহাজের জন্য ওয়েভার আবেদন করা সম্ভবপর নয়।

এছাড়া, নৌবাণিজ্য দপ্তরের ওয়েবার এপ্লিকেশন ওয়েবসাইটে ওয়েবার সনদ গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সমুদ্রগামী জাহাজ মালিক সমিতি’র অনাপত্তি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছেন শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশন।

এ প্রসঙ্গে শিপিং এসোসিয়েশনের দাবি, ওয়েভার সনদের আবেদন জাহাজ মালিক সমিতির অনাপত্তি গ্রহণের কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণও নেই। কিন্তু নৌ বাণিজ্য দপ্তরের আইনে এর বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। ফলে শিপিং এজেন্টদের ওয়েভার সনদ পেতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। এই অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণের ফলে দেশের শিল্প কারখানার কাঁচামাল পেতে বিলম্ব হয় যা উৎপাদন ও রপ্তানি প্রক্রিয়ায় গিয়ে প্রভাব ফেলে। একই সাথে দেশে পণ্যের দ্রব্যমূল্যের ওপরেও বিরূপ প্রভাব পড়ে।

এসব সমস্যার সমাধানে ৪টি প্রস্তাবনাও সুপারিশ করেন শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশন। সুপারিশগুলো হলো- পণ্য আমদানি এবং জাহাজ নির্ধারণ সম্পূর্ণরূপে আমদানিকারকের এখতিয়ারাধীন বিধায় ওয়েবার আবেদন আমদানিকারক কর্তৃক করাই যুক্তিযুক্ত। বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের মালিকাধীন সব জাহাজ বিদেশি সংস্থার কাছে দীর্ঘ মেয়াদে ভাড়া দেয়া হয় বিধায় শিপিং কর্পোরেশনের ঘোষণাপত্র প্রদান করা বাঞ্ছনীয়। তাই ওয়েভার অনাপত্তির জন্য বিএসসি’র আবেদন করা প্রয়োজন নেই। তাতে সময় ও শ্রমের সাশ্রয় হবে। এছাড়া ওয়েভার সনদ পেতে বাংলাদেশ সমুদ্রগামী জাহাজ মালিক সমিতি’র অনাপত্তি গ্রহণ প্রত্যাহার করা হলে নৌবাণিজ্য দপ্তরের ওয়েভার সনদ ইস্যু করা অত্যন্ত সহজ হবে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট