চট্টগ্রাম বুধবার, ২২ মে, ২০২৪

কোরবানির পশুর হাট : ভিড় বাড়লেও বেচাকেনা নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ জুলাই, ২০২১ | ১০:৫৩ পূর্বাহ্ণ

ঘনিয়ে আসছে মুসলমানদের অন্যতম ধর্ম  উৎসব ঈদুল আজহা। আজকের দিন ছাড়া আর সময় রয়েছে মাত্র চারদিন। এরিমধ্যে হাট-বাজারে ধর্মীয় পশুর সরবরাহ বাড়ছে। বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়ও। তবে এখনো বেচাকেনা হচ্ছে না। দেখাদেখিতেই সময় পার করছেন ক্রেতারা।
কোরবানির পশুর হাটের দেশের দ্বিতীয় বড় গরুর বাজার সাগরিকা। বাজার ইজারাদার আবুল কালাম আজাদ বাবুল পূর্বকোণকে বলেন, গতকাল বাজারে মানুষের ভিড় বেশি ছিল। তবে সেই তুলনায় বেচাকেনা হয়নি। সীমিত বেচাকেনা হয়েছে। গত দুদিন ধরে বাজারে বেশি ট্রাক ঢুকেছে। পথে যানজট থাকায় গরুবাহী ট্রাক আসতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, শহর ও গ্রামে গরু রাখার মতো জায়গার অভাব রয়েছে। আগ থেকে গরু কিনে রাখলে তা রাখা, দেখাশোনা করা, খাবার খাওয়ানো ও পরিচর্যা করার মতো পরিস্থিতি সবার থাকে না। মূলত কোরবানির দু-তিন দিন আগে থেকে বেচাকেনা পুরোদমে শুরু হবে।
দেশের সীমান্তবর্তী উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে চট্টগ্রামে আসছে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক। মৌসুমী ব্যবসায়ী ছাড়াও গরু বেপারীরা কোরবানির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঈদুল আজহা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে পশুর সরবরাহও বাড়ছে। তবে নগরী ও জেলার হাটগুলোতে এখনো বেচাকেনা নেই।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দেশের লকডাউন থাকায় মৌসুমী ব্যবসায়ীরা অনেকটা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিল। তবে ঈদুল আজহা ঘনিয়ে আসার পর থেকে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা গরু ব্যবসায় নেমেছেন। চাঁদ উঠার পর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ী ও খামারিরা হাট-বাজারে গরু আনতে শুরু করে। মৌসুমী ব্যবসায়ীরাও উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে গরু আনা শুরু করেছেন। কোরবানির দিন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে গরু সরবরাহও বাড়ছে।
গতকাল নগরীর দুটি বড় বাজার সাগরিকা ও বিবির হাট গরুর বাজার ছাড়াও অস্থায়ী বাজারগুলোতে প্রচুর গরু এসেছে।
কর্ণফুলী গরুর বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আবদুর রহিম পূর্বকোণকে বলেন, বিভিন্ন জেলা ছাড়াও অভ্যন্তরীণ উপজেলা থেকে প্রচুর গরু এসেছে। বাজারে ইতিমধ্যেই ৪-৫ হাজার গরু এসেছে। দু-একদিনের মধ্যে আরও কয়েক হাজার গরু পৌঁছবে। তবে এখনো বেচাকেনা তেমন হচ্ছে না।
গরুর বাজারে বিভিন্ন জেলার বেপারীরা গরুর খাবারের রান্নার জন্য ডেক্সি, পাতিল, বালতি, চাল, ভূষি, খড়-খুটোসহ কয়েকদিনের রান্নাবান্নার সরঞ্জামাদি নিয়ে আসছেন। চলছে গরুর খাইন তৈরি ও গরু রাখার প্রস্তুতি। চলছে গো-খাবার আয়োজন। বিভিন্ন জেলার বেপারী ও খামারিরা কয়েকদিন আগে থেকে বাজারে গরু নিয়ে আসেন।
মইজ্জ্যারটেক গরু বাজারের ইজারাদার সাইফুল হুদা জাহাঙ্গীর বলেন, দু-তিন দিন ধরে গরুবাহী ট্রাক বেশি এসেছে। বাজারে এখন পর্যন্ত ৪-৫ হাজার গরু এসেছে। যানজটের কারণে অনেক ট্রাক আটকে রয়েছে।
মৌসুমী গরু ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, লকডাউনের কারণে ট্রাকের ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ গুণতে হচ্ছে। সাগরিকা বাজারে সিরাজগঞ্জের মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, তিনি এবার ১০টি গরু এনেছেন। সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা দামের গরু আছে। তিনি বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ৬০টি গরু নিয়ে আসছেন বেপারী রহমত আলী। তারা যৌথভাবে খাইন প্রস্তুত করে রেখেছেন।
রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সাতক্ষ্মীরা, পটুয়াখালী, কুষ্টিয়াসহ উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে চট্টগ্রামের প্রতি বছর প্রচুর গরু আনা হয়। এবারও গরুবাহী ট্রাক নিয়ে আসছেন বেপারিরা। ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বেপারী ও খামারিরা গরুর সংখ্যা বাড়বে বলে জানান বেপারীরা।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট