চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

জীর্ণশীর্ণ বেইলি ব্রিজে ৩৯ বছর পার

স্থায়ী পাকা ব্রিজের আশ্বাস বাস্তবায়ন হয়নি 

মো. দেলোয়ার হোসেন, চন্দনাইশ

১৫ জুলাই, ২০২১ | ৭:১৯ অপরাহ্ণ

চন্দনাইশ পৌরসভায় স্থায়ী পাকা ব্রিজের আশ্বাসে দেড় বছরের জন্য আবদুল বারীহাট বেইলি ব্রিজ স্থাপন করা হয়। ৩৯ বছর পার হলেও স্থায়ী ব্রিজ হয়নি। বর্তমানে বেইলি ব্রিজের অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। এতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, পৌরসভার আবদুল বারীহাট বেইলি ব্রিজটি ১৯৮২ সালে সরকারের সড়ক ও জনপথ বিভাগ এলাকাবাসী চলাচলের সুবিধার জন্য অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করে। অদ্যাবধি আর পূর্ণাঙ্গ ব্রিজে রূপ নেয়নি। বেইলি ব্রিজের পাটাতনগুলো জং ধরে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পরপর দু’বার মেরামত করলেও পুনরায় জং ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সেইসাথে ব্রিজের নিচে পিলারের পাশ থেকে মাটি সরে যায়, ব্রিজের পশ্চিম পাশে কার্পেটিংসহ ইট সরে গিয়ে বেইলি ব্রিজটি সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘ ৩৯ বছর পূর্বে নির্মিত আবদুল বারীহাট বেইলি ব্রিজটি পূর্ণাঙ্গ ব্রিজে রূপ নেয়নি যথাযথ কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে।

দীর্ঘসময় ধরে বেইলি ব্রিজটি অস্থায়ীই থেকে যায়। কি এক অজানা কারণে ব্রিজটি আর পূর্ণাঙ্গ ব্রিজে রূপ দেওয়া হয়নি। তাছাড়া বেইলি ব্রিজটি নির্মাণের পর গত ২০০৮ সালে দৈনিক পূর্বকোণে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের জেরে সামান্য সংস্কার করা হয়। ব্রিজের ভেঙে যাওয়া লোহার পাটাতন ও স্প্যানগুলো মেরামত করা হয়। বেইলি ব্রিজটির দৈর্ঘ্য বেশি না হলেও তিনভাগে স্প্যানগুলো স্থাপন করা হয়েছে। মেরামতকৃত স্প্যানগুলো মরিচায় অনেকাংশে পুনরায় ভেঙে গেছে। তাছাড়া, ব্রিজের নিচের অংশের বালি উত্তোলনের কারণে ব্রিজের মধ্যের পিলারটিও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পশ্চিম পাশে ব্রিজ ঘেঁষে সড়কের কার্পেটিংসহ ইট উঠে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যেকোন সময় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারে বলে অভিজ্ঞমহল মতপ্রকাশ করেন।

ভারী যানবাহন চলাচলের সময় স্প্যানগুলো ভেঙে যাওয়ার আতঙ্কে থাকেন চালকরা। এ ব্রিজের সাথে সংযুক্ত হয়েছে গাছবাড়িয়া-আবদুল বারীহাট সড়ক, বাগিচাহাট-উপজেলা সড়ক, ভগবান চৌধুরীহাট-আবদুল বারীহাট সড়ক। চারটি সড়কের মিলনকেন্দ্রে অবস্থিত ব্রিজটি জরুরিভাবে পূর্ণাঙ্গ ব্রিজে রূপ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতনমহল। এ সড়কে হাশিমপুর, সাতবাড়িয়া, বৈলতলীর অধিকাংশ লোকজন বিভিন্ন প্রশাসনিক ও ব্যক্তিগত কাজে চন্দনাইশ সদরে আসেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অবহেলার কারণে ব্রিজটি পূর্ণাঙ্গ ব্রিজে রূপ দেওয়া হচ্ছে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

এ ব্যাপারে পৌর মেয়র মাহবুবুল আলম খোকা বলেন, সড়কটি বিগত বিএনপির শাসনামলে সড়ক ও জনপথ বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগ অভ্যন্তরীণ সড়কের সেতুটি নির্মাণ করেনি। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর জেলা পর্যায়ের সভায় একাধিকবার সড়ক সেতুটির প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বক্তব্য দেন। ফলে বিদায়ী জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিনের হস্তক্ষেপে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলীদের যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ফলে ৯৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সড়কটি মেরামতের কাজ হলেও আবদুল বারীহাট বেইলি ব্রিজটি এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি সংসদ সদস্য আলহাজ নজরুল ইসলামের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ ধরনের বেইলি ব্রিজগুলো সাধারণত এক থেকে দেড় বছরের জন্য অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হয়ে থাকে। পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ ব্রিজ নির্মাণের মধ্য দিয়ে বেইলি ব্রিজগুলোর কাজ সমাপ্ত হয়। এ বেইলি ব্রিজ দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়ে থাকে। দীর্ঘ ৩৯ বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজ দিয়ে যানবাহন চলাচল করলেও সম্পূর্ণ উদাসীন রয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

পূর্বকোণ/সাফা/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট