চট্টগ্রাম রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

অনুমোদন ছাড়াই ৩৬টি দোকান লালখানবাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

৪ জুলাই, ২০২১ | ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ

নগরীর লালখানবাজার হাই লেভেল রোড এলাকায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অনুমোদন ছাড়া দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। লালখানবাজার জামে মসজিদের বর্তমান কমিটির সভাপতি ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিদ্দিক আহমেদের নেতৃত্বে সেখানে ৩৬টি দোকান নির্মাণ হয়েছে বলে জানা যায়। প্রতিটি দোকানের বরাদ্দ বাবদ পাঁচ থেকে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালে একই জায়গায়, সাবেক কাউন্সিলর আবুল ফজল কবির আহমেদ মানিক দোকান নির্মাণ করতে গেলে এলাবাসী এবং বর্তমান কাউন্সিলর আবুল হাসনাত বেলালের অনুসারীরা দোকান নির্মাণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। যার ফলে সেসময় আর দোকান নির্মাণ সম্পন্ন করতে পারেননি। তবে সম্পূর্ণ নিয়ম মেনে এবং মসজিদের উন্নয়নের জন্য এসব দোকান নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানান মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিদ্দিক আহমেদ। গতকাল শনিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, লালখানবাজারের হাই লেভেল সড়ক ঘেঁষে দোতলা মার্কেট নির্মিত হচ্ছে। যেখানে নিচতলা ও দোতলায় ১৮টি করে মোট ৩৬টি দোকান নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব দোকানের মধ্যে বেশ কয়েকটি দোকানের শাটারও দেয়া হয়েছে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, লকডাউনের মধ্যেই দোকান নির্মাণের কাজ দ্রুত চলছে। যেখানে রাতদিন ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক কাজ করছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয়রা।
জানতে চাইলে ওই মার্কেটের এক দোকানদার জানান, মসজিদের উন্নয়নের জন্য দোকানগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। দোকান বিক্রি ও ভাড়া বাবদ অর্থ মসজিদের উন্নয়নের জন্য ব্যয় হবে। সিডিএ’র অনুমোদন রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের সিডিএ’র অনুমোদনের কোন কাগজ দেননি।
এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে লালখানবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল হাসনাত বেলাল বলেন, ‘আমি তো এই মসজিদ কমিটির কেউ না। তবে এর আগের কমিটি এবং সাবেক কাউন্সিলর ২০১৮ সালেও দোকান নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল। তখন আমি নিজে সিডিএতে অভিযোগ দিয়েছি এবং আমাদের প্রতিবাদের মুখে দোকান নির্মাণ সম্পন্ন করতে পারেনি। তবে সাবেক কাউন্সিলর আবুল ফজল কবির আহমেদ মানিক প্রথম চারটি দোকান থেকে ৩২ লাখ টাকাসহ সব মিলে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মত নিয়েছেন যা মসজিদ ফান্ডে জমা দেননি।
জানতে চাইলে লালখানবাজার ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আবুল ফজল কবির আহমেদ মানিক বলেন, আমি এখন চট্টগ্রামে থাকি না এবং চট্টগ্রামের কোন বিষয় নিয়ে মাথা ঘামায় না। তবে একটা বিষয়ে বলতে পারি, অনিয়ম ও অন্যায় করে এই দোকানগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। এখানে কাউকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন সাবেক এই কাউন্সিলর।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে লালখানবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিদ্দিক আহমেদ বলেন, আমাদের আগের কমিটি নিয়ম বহির্ভূতভাবে দোকান নির্মাণ করে কিছু বরাদ্দও দিয়েছে। দোকান বরাদ্দের নামে সাধারণ মানুষ থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মত হাতিয়ে নিয়েছে, যা মসজিদ ফান্ডে দেয়ার কথা থাকলেও আর মসজিদ ফান্ডে দেননি। মসজিদের উন্নয়ন এবং যাবতীয় ব্যয় বহনের জন্য আমরা কিছু দোকান নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। এসব দোকান নির্মাণে সিডিএ’র অনুমোদন নেয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অনুমোদন নেয়া হয়নি তবে শীঘ্রই আমরা অনুমোদনের জন্য আবেদন করবো।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট