চট্টগ্রাম রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

মফস্বলেও মিলছে এক ঘণ্টায় ফল

ইমাম হোসাইন রাজু

৪ জুলাই, ২০২১ | ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

নগরীর পর অবশেষে গ্রাম পর্যায়েও শুরু হয়েছে করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা। কোভিড পরীক্ষার এন্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে ফলাফল। ফলে রোগীদের সংক্রমণ শনাক্তে আর দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা পরামর্শ দিয়ে বলছেন, পরীক্ষা সংখ্যা আরও বাড়াতে পারলে দ্রুতই সংক্রমণ ঠেকানোও সহজ হবে। আর স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানানো হয়, ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের প্রতিটি উপজেলাতেই সরবরাহ করা হয়েছে র‌্যাপিড এন্টিজেন কিট। সবগুলো উপজেলাতেই এখন চালু রয়েছে এ পরীক্ষা। পর্যায়ক্রমে তা ইউনিয়ন পর্যায়েও পৌঁছানোর পরিকল্পনাও এঁকেছেন তারা।
এর আগে গত ২০ মার্চ থেকে এন্টিজেন টেস্ট কার্যক্রম শুরু করে চট্টগ্রামের প্রথম ডেডিকেটেড জেনারেল হাসপাতাল। এছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালেও এমন পরীক্ষা শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের। যা নিয়ে গত ৫ এপ্রিল দৈনিক পূর্বকোণে ‘নগরীতে এন্টিজেন টেস্ট শুরু, শীঘ্রই হচ্ছে গ্রামে’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরমধ্যে জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে গ্রামাঞ্চলে শুরু হয়েছে কাক্সিক্ষত এ পরীক্ষা।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলায় দুইভাবে সর্বমোট ১০ হাজার কিট বরাদ্দ দেয়া হয়। গত মাসের শেষ সপ্তাহে এসব এন্টিজেন কিট স্ব স্ব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি কিট বরাদ্দ দেয়া হয় হাটহাজারী, রাউজান, ফটিকছড়ি, মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও রাঙ্গুনিয়ায়। এ ছয় উপজেলায় ১ হাজার করে কিট সরবরাহ করা হয়। বাকি উপজেলাগুলোর মধ্যে বাঁশখালী ও পটিয়া উপজেলায় ৬ শ’ করে বরাদ্দ দেয়া হয়। এছাড়া সন্দ্বীপ উপজেলায় ৩ শ’ এবং আনোয়ারা, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, বোয়ালখালী ও চন্দনাইশ উপজেলায় পাঁচশ’ করে কিট বরাদ্দ দেয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিট আসার মাত্র দুই দিনের মাথায় শুরু হয় এন্টিজেন টেস্ট। গত মাসের শেষ সপ্তাহের দিকে সকল উপজেলাতেই কম-বেশি পরীক্ষা শুরু হয়। সবশেষ গতকাল শনিবার ১২ উপজেলায় এন্টিজেন টেস্ট করা হয়। এদিন সবমিলিয়ে এসব উপজেলায় ১৫২ জনের পরীক্ষা হয়। এরমধ্যে হাটহাজারী উপজেলায় সর্বোচ্চ ৩৬ জনের পরীক্ষা হয়। উপজেলাতে এখন পর্যন্ত এন্টিজেন পরীক্ষার সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। তবে এ সংখ্যা বাড়ানোর তাগিদ চিকিৎসকদের।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, প্রতিটি গ্রামে যদি এ টেস্টের পরিধি বাড়ানো যায়, তাহলে দ্রুত সময়ে সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব হবে। কেননা, উপসর্গ পাওয়া মাত্রই এন্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই ফল পাওয়া যাবে। যদি কেউ পজিটিভ হয়, তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে পৃথক করা যাবে। সংক্রমণও আর ছড়াবে না।
ল্যাব সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে বর্তমানে যে পদ্ধতিতে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয় সেটাকে বলা হয়, আরটি পিসিআর টেস্ট। এতে নমুনা দেয়ার পর ফল পেতে অন্তত ২৪ ঘণ্টা কিংবা তারও বেশি সময় প্রয়োজন হয়। কিন্তু এন্টিজেন টেস্টে নমুনা সংগ্রহের ২০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যেই পজিটিভ নাকি নেগেটিভ তা জানা যায়। তবে উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও কারও টেস্টের ফল যদি নেগেটিভ হয়, তাহলে পুনরায় তার আরটি পিসিআর পদ্ধতিতে পরীক্ষা করতে হবে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘কেন্দ্রীয়ভাবে কিট বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই আমরা উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ করে দেই। ইতোমধ্যে সব উপজেলাতেই কমবেশি এন্টিজেন টেস্ট শুরু হয়েছে। যার ফলে এখন দ্রুতই রোগী শনাক্ত করা যাচ্ছে। তবুও যে নমুনাগুলো আরটি পিসিআর পরীক্ষার প্রয়োজন হচ্ছে, তা সরকারি নির্দিষ্ট ল্যাবগুলোতে পরীক্ষা করা হচ্ছে।’

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট