চট্টগ্রাম রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

অফডকে রপ্তানি পণ্যের স্তূপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

৪ জুলাই, ২০২১ | ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ

সিঙ্গাপুর ও কলম্বো পোর্টসহ এশিয়ার ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্টগুলোতে অতিরিক্ত কনটেইনার জমে থাকার বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশের রপ্তানি খাতে। ইতোমধ্যে কনটেইনারের সংকট ও জাহাজ নির্ধারণ না হওয়া বেসরকারি অফডকগুলোতে স্তূপ পড়েছে রপ্তানি পণ্যের। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বেসরকারি অফডক মালিকদের সংগঠন বিকডা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের ১৯টি বেসরকারি অফডকে কনটেইনার ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৭৭ হাজার ৭০০ টিইইউস। তবে ধারণ ক্ষমতার ৮৫ শতাংশ কনটেইনারে ভর্তি হয়ে গেলে স্বাভাবিক কাজে ব্যঘাত ঘটতে শুরু করে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, অফডকগুলোতে রপ্তানি কনটেইনার রয়েছে ১৪ হাজার ১শ টিইইউস, আমদানি কনটেইনার আছে ৮ হাজার ৫০০ টিইইউস এবং খালি কনটেইনার আছে ৩৮ হাজার ৫০০টিইইউস। অর্থাৎ সবমিলিয়ে বর্তমানে অফডকগুলোতে মোট কনটেইনার আছে প্রায় ৬১ হাজার ১০০ টিইইউস।
এদিকে, গত ২ জুন চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে অফডকমুখী কনটেইনার রয়েছে ২ হাজার ৯২৪ টিইইউস। এছাড়া অফডকে যাওয়ার জন্য পাইপলাইনে বার্থিংয়ের অপেক্ষায় থাকা জাহাজে রয়েছে আরো ২ হাজার ৩৭ টিইইউস কনটেইনার। সব মিলিয়ে আরো ৪ হাজার ৯৬১ টিইইউস কনটেইনার অফডকে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে।
বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী অফডকে থাকা কনটেইনার খালাস না হলে এবং বন্দরের সব কনটেইনার অফডকে আনা হলে অল্প সময়ের মধ্যে এর ধারণ ক্ষমতার ৮৫ ভাগ পূর্ণ হয়ে যাবে। ফলে অফডকগুলোর কাজে মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।
এমন সংকট নিরসনে ইতিমধ্যে শিপিং এজেন্টস ও ফ্রেইট ফরোওয়ার্ডার্সদের সহযোগিতা চেয়েছে অফডক মালিকদের সংগঠন বিকডা। এই সংগঠনের পক্ষ থেকে শিপিং এজেন্টকে দ্রুত রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারগুলো জাহাজীকরণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া রপ্তানির উদ্দেশ্যে আসা ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের পণ্যের জন্য কনটেইনার এলটমেন্ট দিতেও অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এদিকে, শিপিং এজেন্টস সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুর বন্দরে জাহাজ সিডিউলে বড় বিপর্যয়ের কারণে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে করোনার কারণে সব সিডিউলে পরির্তন আনা হয়। যার কারণে সিঙ্গাপুর, কলম্বো পোর্টসহ এশিয়ার ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরগুলোতে কনটেইনার জমে যায়। এছাড়া, মাদার ভ্যাসেল বা বড় জাহাজেরও শিডিউল পাওয়া যাচ্ছে না। আগে যেখানে সপ্তাহে অন্তত তিনটি মাদার ভেসেলের সিডিউল পাওয়া যেত সেখানে এখন বড়জোর একটি পাওয়া যায়। এসব কারণে দেশের আমদানি-রপ্তানিতে জাহাজ ও কনটেইনারের বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।
সিডিউল দিতে না পারায় কোন কোন মেইন লাইন অপারেটর আবার তাদের চার্জও বাড়িয়ে দিয়েছে। আবার পোশাক শিল্পসহ দ্রুত রপ্তানিযোগ্য পণ্য সময়মতো কাক্সিক্ষত দেশে পাঠানোও যাচ্ছে না। ফলে বায়ারদের অর্ডার ধরে রাখতেও বিপাকে পড়ছে দেশীয় রাপ্তানিকারকেরা।
সংকট মোকাবেলায় দ্রুত জাহাজের সিডিউল ঠিক করে রপ্তানি পণ্য শিপমেন্টের ব্যবস্থার বিকল্প নেই বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট