চট্টগ্রাম সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

পটিয়াবাসীর স্বপ্নপূরণ আজ

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন 

৪ মে, ২০২১ | ১:৩৪ অপরাহ্ণ

অনিশ্চয়তার দোলাচলের পর আশার আলো দেখছে পটিয়া উপজেলা বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প। ৫ বছর পর আজ মঙ্গলবার একনেক সভায় ওঠছে প্রতীক্ষিত প্রকল্পটি। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত বছর পরিকল্পনা কমিশন থেকে ফেরত আসে প্রকল্পটি। এরপর প্রকল্পটি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। স্থানীয় সাংসদ হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর প্রচেষ্টায় কাটছাঁট করে প্রকল্পটি ফের মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা পূর্বকোণকে বলেন, ‘প্রকল্পটি আজ একনেক সভায় উত্থাপিত হবে। আশা করছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই প্রকল্পটি অনুমোদন করবেন।’  একই কথা বললেন পটিয়া আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। তিনি পূর্বকোণকে বলেন, ‘পটিয়া হচ্ছে একটি দ্বীপের মতো। তিন দিকে নদী-খাল, একদিকে পাহাড়বেষ্ঠিত। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত মেরিন ড্রাইভের আদলে সুরক্ষিত হবে পটিয়া। বন্যা রোধ ও জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাবে কয়েক লাখ মানুষ।

এছাড়াও চাষাবাদের আওতায় আসবে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি।’ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পটিয়া পৌরসভাসহ উপজেলার ১২ ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ জলাবদ্ধতা নিরসন, ভাঙনরোধ ও সেচ সুবিধা পাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১১শ কোটি ৫৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ২০১৯ সালের ২২ জুলাই পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, প্রধান প্রকৌশলীসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। প্রকল্পের স্বপ্ন দেখিয়েছেন পটিয়াবাসীকে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, পটিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে আশিয়া, হাবিলাশদ্বীপ, ধলঘাট, বড়লিয়া, দক্ষিণ ভূর্ষি, জঙ্গলখাইন, নাইখাইন, ভাটিখাইন, ছনহরা, কচুয়াই, হাইদগাঁও, কেলিশহর ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ উপকৃত হবে।

প্রকল্পে যা থাকছে :

প্রকল্পে ২৫ দশমিক ৫১০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এরমধ্যে শিকলবাহা, চাঁদখালী ও বোয়ালখালী খালের ডান তীরে ২২ দশমিক ২০০ কিলোমিটার। চাঁদখালী খালের বামতীরে ৩ দশমিক ৩১০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হবে।

এছাড়াও ১১টি খালের ৩০ দশমিক ২০০ কিলোমিটার পুনঃখনন করা হবে। দুই দশমিক ৯৫০ কিলোমিটার নদী-খালের তীর সংরক্ষণ করা হবে। প্রকল্পে ২৬টি খালে রেগুলেটর বসানো হবে। ২৬ টি খালের রেগুলেটর নির্মাণ করার মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ৩২শ হেক্টর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আনা হবে।

চার দশমিক ১০০ কিলোমিটার ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ করা হবে। চাঁদখালী খালের ডান তীরে ২৩৫০ মিটার, বাম তীরে ৮৫০ মিটার এবং বোয়ালখালী খালের ডান তীরে ৯০০ মিটার। এর মাধ্যমে বর্ষায় বন্যা ও জলাবদ্ধতা থেকে ১৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ফসল রক্ষা করা হবে।

প্রকল্পে একটি সেতুও নির্মাণ করা হবে। খানমোহনা এবং ধলঘাট স্টেশনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য চাঁদখালী খালের উপর এই সেতু নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্প বাস্তবায়নে ৫৮ দশমিক ৯২৮ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এরমধ্যে ২৫ দশমিক ৫১০ কিলোমিটার নতুন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে।

প্রকল্পে বাঁধের ঢাল সংরক্ষণ, দুই পাশে ওয়ার্কও নির্মাণ, খালের তীরের যানবাহন চলাচল উপযোগী সড়ক ও ইকো-ট্যুরিজমে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পরিকল্পনা ছিল। তা বাদ দিয়ে প্রকল্পটি ছোট আকারে রূপ নিয়েছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট