চট্টগ্রাম রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

সংগৃহীত

আজ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস

ভেজাল খাবারের কারণে দেশে বাড়ছে অটিজম শিশুর সংখ্যা

মরিয়ম জাহান মুন্নী 

২ এপ্রিল, ২০২১ | ২:৪০ অপরাহ্ণ

ভেজাল খাবারের কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর বাড়ছে স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার বা মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যায় (অটিজম) আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। এছাড়া বৈরি পরিবেশ ও জিনগত সমস্যার কারণেও একজন শিশু মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে।

সিডিসি আমেরিকা সংস্থাটির তথ্য মতে, গেল ১০ বছরের চেয়ে বেড়েছে অটিজমে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। সংস্থাটিও এর কারণ হিসেবে চিহিৃত করেছে ভেজাল খাবার, বৈরি পরিবেশ ও বংশগত সমস্যকে। ১০ বছর আগে প্রতি ১০৫ জন শিশুর মধ্যে একজন শিশু মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে জন্মগ্রহণ করতো। কিন্তু বর্তমানে প্রতি ৫৪ জন শিশুর মধ্যে একজন অটিজমে আক্রান্ত হচ্ছে।

যদিও এ নিয়ে সরকারি কোনো গবেষণা নেই। তবে মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যায় আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিষ্পাপ অটিজন ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে চট্টগ্রাম শহরের মধ্যে বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল ও থেরাপি সেন্টারে রেজিস্ট্রেশন করা অটিজমে আক্রান্ত প্রায় পাঁচ হাজার শিশু আছে। তবে অভিভাবকরা এ সত্য গোপন না করলে এর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা বাসনা মুহুরী বলেন, অটিজম মানসিক অসুস্থতা নয়। এটি এএসডির বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের দুই পাশের গঠনে এবং নিউরোট্রান্সমিটার লেভেলে অসংগতির কারণে এমনটা হয়। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের লক্ষণ ও উপসর্গের মাত্রা বিচিত্র। একজনের সঙ্গে আরেকজনের হুবহু মিল নেই। কেউ সবাক, কেউ বা বাক‌শক্তি থাকা সত্ত্বেও কথা বলে না। কার আচরণ অতি চঞ্চল, কেউ অতিরিক্ত গুটিয়ে থাকতে চায়। অটিজম বিষয়ে অনেকের মধ্যে কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। সেসব ভুল ধারণা থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে। অভিভাবকদের মধ্যে বাড়াতে হবে সচেতনতা। তিনি বলেন, অটিজমে আক্রান্ত শিশু ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে থেরাপি বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে ৮০ ভাগ সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে। এছাড়া অধিক বয়সে গর্ভধারণ  করলে অটিজমে আক্রান্ত শিশুর জন্ম হতে পারে। গর্ভধারণের পরবর্তী সময়ে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে ও ভেজাল খাবার এড়িয়ে চলা। পরিবারিক কলহসহ মানসিক চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে।

প্রবর্তক মোড়ে অবস্থিত অটিজন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সোমা চক্রবর্তী বলেন, আগে অভিভাবকরা তাদের শিশুকে লুকিয়ে রাখতো। কিন্তু বর্তমানে শহরের মানুষ অনেকটা সচেতস হয়েছে। তবে শহরের ক্ষেত্রে হলেও গ্রামে এখনো সচেতনতার অভাবে রয়েছে। বর্তমানে আমরা ৮৮ জন শিশু নিয়ে কাজ করছি। এরমধ্যে আমাদের ১০ জন অটিজমে আক্রান্ত শিশু সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক বাঁচাদের সাথে স্কুলে পড়াশোনা করছে। তারা এখন ৮০ ভাগ সুস্থ।

নিষ্পাপ অটিজম ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলি ঝুলন কুমার দাশ বলেন, করোনার মধ্যেও আমরা অনলাইনের মাধ্যমে শিশুদের যথাসম্ভব থেরাপির প্রশিক্ষণ দিয়েছি। কারণ থেরাপি বন্ধ হলেই এ শিশুরা আবার অসুস্থ হয়ে যায়। এছাড়া আমরা সামনেই বিশেষ এ শিশুদের জন্য নিষ্পাপ সমন্বিত বিদ্যালয় চালু করছি। যেখানে এ শিশুরা নিষ্পাপ থেকে থেরাপি নিয়ে সেখানে স্বাভাবিক শিশুদের সাথে মিলে মিশে পড়াশোনা করবে। এতে এ শিশুদের মানসিক বিকাশে ভালো কাজ করবে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট