চট্টগ্রাম শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

চকবাজার কাঁচাবাজার আট মাস ধরে অচল

ভাসমান হকারদের দখলে ফুটপাত ও সড়ক

চকবাজার কাঁচাবাজার আট মাস ধরে অচল

নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ আগস্ট, ২০২০ | ৬:০৮ অপরাহ্ণ

আট মাসেও চালু হয়নি সিটি কর্পোরেশনের চকবাজার কাঁচাবাজার। সড়ক ও ফুটপাত দখল করে ভাসমান হকারদের ব্যবসার কারণে পুরো দমে চালু হচ্ছে না মার্কেটটি। তবে নানান জটিলতা কাটিয়ে নিচতলার ব্যবসা শুরু করেছে মাছ ব্যবসায়ীরা। এদিকে মার্কেটটির দোতলার কাজ পুরোপুরি শেষ হলেও তিনতলা এখনো অর্ধনির্মিত অবস্থায় রয়েছে। সিটি করপোরেশনের এ মার্কেটটির নিচতলায় মাছ ও মাংসের বাজার, দোতলায় সবজি, মুদিসহ বিভিন্ন স্টেশনারির দোকান হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু নির্মাণের দীর্ঘদিন পরেও দোতলায় শুরু হয়নি কাঁচা বাজার।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিচতলায় মাছের বাজার বেশ জমজমাট। ক্রেতা বিক্রেতার ভিড়ও ছিল বেশ লক্ষণীয়। কিন্তু নিচতলায় ব্যবসা জমে উঠলেও সিটি করপোরেশনের এ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় এখনো খোলা হয়নি কোনো দোকানপাঠ। তবে প্রতিটি দোকানের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। তিনতলা বিশিষ্ট এ ভবনের তিন তলার ছাদের কাজ শেষ হলেও এখনো পর্যন্ত শেষ হয়নি দোকানের অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে সড়কের দুইপাশ দখল করে ব্যবসা করছে ভাসমান হকাররা। তন্মধ্যে সবজি বিক্রেতাই অধিক। পাশাপাশি রয়েছে মাছ বিক্রেতা, ফল, ও বিভিন্ন রকম প্রসাধনী সামগ্রীর কিছু ভাসমান হকার। সিটি করপোরেশনের নির্মিত বাজারের দোকানগুলো খালি পড়ে থাকলেও ফুটপাত ও সড়ক দখল করে ঠিকই চলছে রমরমা ব্যবসা। বর্তমানে ভাসমান হকারদের কারণে এলাকাটির এমন অবস্থা সড়কের উপর দিয়ে পথচারী হেঁটে চলার জায়গাও নেই। চকসুপার মার্কেট থেকে ফুলতলা পর্যন্ত প্রায় ২৫০টি ভাসমান দোকান রয়েছে। এসব দোকানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সবজির দোকান। এ ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সড়ক ও ফুটপাত দখল করেই ব্যবসা করছে। এতে অতিষ্ঠ চকবাজার এলাকার বাসিন্দারা। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। অনেক সময় হেঁটে যাতায়াত করার জায়গাও পায় না। পথচারীরা জানায় দোকানগুলোর কারণে সবসময় যানজট লেগে থাকে। এ পথ দিয়ে যাতায়াত করতে খুব কষ্ট হয় আর সময়ও নষ্ট হয়।

এ বিষয়ে চকবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজি মো. সোলাইমান সওদাগর বলেন, সিটি করপোরেশন চকবাজারের আগের পুরাতন বাজারটি পাকা করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণের পর তিনতলা বিশিষ্ট এ মার্কেটে দোতলা পর্যন্ত কাঁচাবাজার করার কথা রয়েছে। এখানে দোতলা পর্যন্ত সর্বমোট ১৮৮টি দোকান রয়েছে। নিচতলায় মাছ, মাংস ও দোতলায় সবজি ও মুদি দোকান হওয়ার কথা আছে। কিন্তু এখানে সড়ক দখল করে কিছু ভাসমান ব্যবসার কারণে মার্কেটটি চালু হচ্ছে না। এখানে সড়ক ও ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে ব্যবসা করছে প্রায় ৩শ হকার। তারা সেখানে পুলিশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের অবৈধভাবে কিছু টাকার বিনিময়ে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তাদের অনেক বুঝিয়ে বলার পরেও তাই ফুটপাত থেকে মার্কেটে আসতে নারাজ। আমি ব্যবসায়ীদের সুবিধায় টাকাও কমিয়ে রাখার বিষয় দোকানের মালিকদের সাথে কথা বলেছি। এতে মালিক পক্ষ রাজিও হচ্ছে না। তারা যদি এখানে আসতো তবে ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত হতো।

এ বিষয় ভাসমান হকাররা বলেন, এখানে প্রতিদিন একটি দোকানে ভাড়া বাবদ মালিককে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা দিতে হবে। তাছাড়া মানুষ দোতলায় গিয়ে কেনাকাটা করবে না। আমরা ভাড়া কোথায় থেকে দিব। তাই সিটি করপোরেশনের নির্মিত কঁাঁচাবাজারে এতো টাকা খরচ দিয়ে ব্যবসা করতে নারাজ ভাসমান ব্যবসায়ীরা।

এদিকে দোতলার এ দোকানগুলো সেলামির বিনিময়ে ক্রয় করা মালিকরাও বিপদে রয়েছেন। কারণ অনেকে নিজে ব্যবসা করতে চাইলেও পারছে না, আবার ব্যবসায়ীরা দোকান ভাড়া দিতে চাইলেও কেউ নিচ্ছে না। এদিকে মার্কেটটি নিয়ে সিটি করপোরেশনের এখনো পর্যন্ত নতুন করে কিছুই ভাবছেন না বলে জানা যায়।

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট