চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪

কক্সবাজারে অস্তিত্ব হারাচ্ছে জিয়াউর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত পাতলী খাল

আরফাতুল মজিদ, কক্সবাজার

১৩ মে, ২০১৯ | ১:৫১ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ও পিএমখালী ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত পাতলী নদীর পানি সেচকাজে ব্যবহারের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন জিয়াউর রহমান নিজে এসে লোকজনকে নিয়ে খাল খনন করেছিলেন। কিন্তু কালক্রমে পাতলী খাল বলে পরিচিতি পাওয়া খালটি নানা কারণে ভরাট হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত কোন সরকার বা জনপ্রতিনিধি খালটি পুনঃখনন করার জন্য কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
নিয়মিত ড্রেজিং না করা, নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁধ দিয়ে পুকুরের মতো জলাশয় তৈরি করে মাছ চাষের কারণে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত এই নদী আজ বিপন্ন হয়ে উঠেছে। তাছাড়া নদীতে বাঁধের কারণে পানি না থাকায় হুমকির মুখে রয়েছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির আধা-পাকা ইরি ধানসহ বিভিন্ন শাক-সবজি। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, ভূমিদস্যুদের অবৈধ দখলের কারণে পাতলী নদী ও খালের গতিপ্রবাহ হারিয়ে যেতে বসেছে। ভূমিদস্যুরা সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়া মাস্টার পাড়া গ্রাম থেকে ছাগল কাটার টেক পর্যন্ত পাতলী খাল দখল করে একাধিক পুকুর তৈরি ও নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে।
সম্প্রতি মাস্টার পাড়া গ্রামের প্রভাবশালী জনৈক নজু মিস্ত্রী ও তার কয়েকজন সহযোগী মাস্টার পাড়া এলাকায় পাতলী খালজুড়ে ২টি বিশাল বাঁধ নির্মাণ করেছে। এতে পানি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পিএমখালী এলাকার বিভিন্ন বিলে পানির অভাবে কয়েক হাজার হেক্টর জমির আধা-পাকা ইরি ধানসহ সবজি চাষ হুমকির মুখে পড়েছে।
পিএমখালীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, এই নদীজুড়ে পুকুর খনন ও অবৈধ বাঁধ নির্মাণের কারণে বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি মোহসিনিয়া পাড়া ও পাতলী এলাকার ভাঙন দিয়ে ঢুকে পড়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
স্থানীয় কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান ও নজরুল ইসলাম বলেন, কিছু অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ীর কারণে প্রতিবছরই শুকনো মৌসুমে সেচের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। আবার বর্ষা মৌসুমে এ ভাঙন দিয়ে বিলে পানি ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পিএমখালী বিলের প্রায় লক্ষাধিক কৃষক। তাছাড়া নদীতে একাধিক ঘনমিটার পলি পড়ে ও অবৈধভাবে পুকুর খননের কারণে এই নদী নাব্য হারিয়ে ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঝিলংজার ইউপি চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলেন, ‘সরকারি খাল বা নদী দখল করা সম্পূর্ণ অবৈধ। পাতলী খাল অবৈধভাবে দখল করে মাছ চাষ করাও অপরাধ। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যারা খাল দখল করেছে, তাদেরকে ডেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট