চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫

দুই বছর পর স্বস্তি আলুর বাজারে

আরাফাত বিন হাসান

২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১২:০৫ অপরাহ্ণ

অবশেষে কমেছে আলুর দাম। বন্দরনগরী চট্টগ্রামে পাইকারিতে ১৫ থেকে ১৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে সবজিটি। এর আগে সর্বশেষ ২০২৩ সালের শুরুর দিকে এমন দামে বিক্রি হয়েছিল আলু। মাঝের দুই বছরের অধিকাংশ সময় পাইকারিতে ৪৫ টাকার বেশি ছিল সবজিটির দাম। এর মধ্যে ২০২৪ সালের শেষদিকে পাইকারিতে সর্বোচ্চ ৭০ টাকা ছড়িয়েছিল। সেই হিসেবে আলুর দাম পাইকারিতে ২০ টাকার নিচে নামলো প্রায় দুই বছর পর।

 

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গেলো সেপ্টেম্বরের দিকে খুচরায় ৮০ টাকা ছুঁয়ে যায় আলুর দাম। সেসময় পাইকারিতেই ৭০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল সবজিটি। এরপর কাঁচাবাজারে শীতের সবজি বাড়তে থাকলেও চড়া ছিল আলুর দাম। তবে ডিসেম্বরের দিকে দাম কমতে শুরু করে পণ্যটির। ২০২৫ সালের শুরুর দিকে দাম কমে নামে ৫০ টাকায়। সেসময় খুচরায় ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল সবজিটি। এরপরের দুই সপ্তাহে কেজিতে আরও ২০ টাকা কমে দাম। গেলো সপ্তাহে পাইকারিতে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল নগরে। এরপর সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমে যায় আরও অর্ধেক।

 

বুধবার (২২ জানুয়ারি) নগরে সবজির সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার রিয়াজউদ্দিন বাজারে ১৫ থেকে ১৭ টাকায় সবজিটি বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি রশিদ আহম্মেদ জানান, গেলো দুই বছর ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা এবার বেশি পরিমাণে আলু চাষ করেছেন। উৎপাদনও ভালো হয়েছে। তাই সরবরাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাইকারিতে দাম কমেছে। আশা করি দ্রুত খুচরা বাজারেও দাম কমে যাবে।

 

রিয়াজউদ্দিন বাজারে প্রবীণ এই আড়তদারের ব্যবসার বয়স কয়েক যুগ। সর্বশেষ কবে এত কম দামে আলু বিক্রি করেছিলেন জানতে চাইলে রশিদ আহম্মেদ বলেন, আলুর দাম সর্বশেষ কবে ২০ টাকার নিচে নেমেছিল আমার মনে পড়ছে না। তবে গত দুই বছর বেশ চড়া ছিল আলুর বাজার। প্রায় দুই বছর আগে কিছুটা কম ছিল।

 

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে পাইকারিতে আলুর দাম ছিল কেজিপ্রতি ১২ থেকে ১৪ টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২২-২৫ টাকায়। ওই বছরের শেষ ছয় মাসে পাইকারি বাজারে ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে ছিল সবজিটির দাম। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে কিছুটা দাম কমলেও ফের চড়া হতে খুব একটা সময় নেয়নি। এরপর থেকে বছরজুড়ে চড়াই ছিল আলুর দাম।

 

নগরীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারের পাশাপাশি দেশে ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতনগঞ্জেও পাইকারিতে বেচাকেনা হয় আলু। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার-সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, আলুর ভালো সরবরাহ আছে এবার। গেলো এক সপ্তাহ আগেও পাইকারিতে ২৯ থেকে ৩০ টাকা দাম ছিল সবজিটির। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গেছে। রমজানের আগে সবজিটির দাম কমে যাওয়ায় ভোক্তারা এর সুফল ভোগ করবেন আশা করি।

 

ফের কমেছে পেঁয়াজের দাম: বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যাপক পেঁয়াজ আমদানির খবরে গেলো বছরের শেষ দিকে পাইকারিতে কয়েক ধাপে ৪০ টাকায় নেমে যায় দাম। এতে খুচরা বাজারেও দাম নেমে যায় ৫০ টাকার নিচে। সপ্তাহ ঘুরতেই ৫০ শতাংশ দাম বেড়ে যায় মসলাজাত পণ্যটির। এতে খুচরা বাজারেও ৭০ টাকা পেরিয়ে যায় দাম। তবে কয়েক ধাপে পাইকারিতে কেজিপ্রতি ফের ৫০ টাকার নিচে নেমেছে পেঁয়াজের দাম। এর মধ্যে গেলো সপ্তাহে কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা কমেছে সবধরনের পেঁয়াজের দাম।

 

গতকাল বুধবার খাতুনগঞ্জে ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০ ও দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৪০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা। চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম বলেন, ডিসেম্বরের শেষ দিকে দাম কমার পর জানুয়ারিতে আবারও বেড়েছিল পেঁয়াজের দাম। তবে এখন আবার কমেছে। শুধু পেঁয়াজ নয়, খাতুনগঞ্জে প্রায় সবধরনের পণ্যের দামই নিম্নমুখী।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট