চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫

কুতুবদিয়ার নিখোঁজ ২ জেলের সন্ধান মেলেনি এক মাসেও

কুতুবদিয়া সংবাদদাতা

১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ

সাগরে তখন প্রচণ্ড বাতাস আর ভাটার স্রোত। ঠিক সে সময় সাম্পান চালানোর দায়িত্বে ছিল প্রবীণ জেলে সিরাজ। হঠাৎ ঢেউ আর স্রোতের তোপে পড়ে অপর আরেকটি ফিশিং ট্রলারের বসানো খুটা জালের ভেতর ঢুকে যায় সাম্পানটি। মুহূর্তেই সাগরে ছিটকে পড়েন ৬ জেলে।এভাবে সাম্পান ডুবে জেলে নিখোঁজের ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন জীবিত ফেরা জেলে দেলোয়ার।

 

শনিবার (১৪-ডিসেম্বর) রাতে কুতুবদিয়া উপক‚লের অদূরে দুর্ঘটনার শিকার সেই সাম্পানে কর্মরত ৬ জেলের একজন তিনি। জাল ধরে সাগরে প্রায় ৪ ঘণ্টা ভাসার পর ভোরে কাপড়ের সিগন্যাল দেখে মহেশখালীর ধলঘাটার ছাবেরের মালিকানাধীন সেই ফিশিং ট্রলারটি এসে দেলোয়ার, জামাল ও সিরাজকে উদ্ধার করেন। তবে সেসময় কোনো সন্ধান পায়নি অপর তিনজনের।

 

ঘটনার চার দিন পর শাহরিয়ারের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও এখনো নিখোঁজ মো. আবু বকর ও মোহাম্মদ ইসহাক নামের ২ জেলে। শোকের মাতম চলছে তাদের পরিবারে। জীবিত না থাকলেও অন্তত দাফন-কাফনের জন্য মরদেহগুলো পেতে চায় স্বজনরা।

 

জামাল বলছে, আকস্মিক স্রোতে জালে ঢুকে যায় তার মালিকানাধীন সাম্পানটি। জীবিত ফেরা অপর দুই জেলের দাবি, সাগর থেকে উদ্ধারের পর মালিককে উপরে রাখলেও তাদেরকে ধলঘাটার ওই বড় ট্রলারের কেবিনে ঢুকিয়ে রাখে উদ্ধারকারী জেলেরা। তাই ডুবন্ত সাম্পান উদ্ধার ও নিখোঁজ জেলেদের তল্লাশির বিষয়ে কিছুই দেখেননি তারা।

 

দুর্ঘটনা হলেও এদিকে জেলে নিখোঁজের বিষয়ে সম্প্রতি নানা প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। উদ্ধারের পর কুতুবদিয়া ঘাটে না এনে কেনই বা সরাসরি ধলঘাটায় নেয়া হল তাদের, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে সরেজমিনে ধলঘাটার সুতুরিয়া বাজার সংলগ্ন সৈকতে যান এ প্রতিবেদক। যেখানে অন্যান্য জিনিসপত্রসহ সাগরে দুর্ঘটনার শিকার সাম্পানটি দেখা যায় সৈকতের বালিয়াড়িতে। এখানে কেহ কেহ মন্তব্য করছেন, ডাকাতি কিংবা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড না হলেও নিজেদের জালে আটকে মারা যাওয়ার দায় এড়াতে মরদেহগুলো সাগরে ভাসিয়ে দেয় উদ্ধারকারী জেলেরা।

 

জেলেদের উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে মহেশখালীর ধলঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম প্রকাশ বাঁশি পূর্বকোণকে জানান, ধলঘাটার একটি ফিশিং ট্রলার দুর্ঘটনার শিকার হলে সাম্পানসহ তিন জেলেকে উদ্ধার করে ধলঘাটা সৈকতে এনে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশকে অবগত করেন উদ্ধারকারীরা। পরে রহস্যজনক কারণে সাম্পান ডুবির ঘটনার বিবরণ সংবলিত তিনশত টাকার লিখিত স্ট্যাম্পে উদ্ধার তিন জেলের স্বাক্ষর নেয়া হয়।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট