শিল্পীদের নানা শিল্পকর্ম ইতিহাস বিকৃতি থেকে বাঁচাতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় নগরীর মেহেদীবাগ এলাকায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রদর্শনীতে এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, শিল্পীদের শিল্পকর্ম দিয়ে অনেক কিছু বলা যায়, অনেক কিছু করা যায়। আমরা যখন ঔপনিবেশিক নির্যাতনের শিকার হই, যখন ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের যাঁতাকলে পড়ি বা বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ হয়, তখন শিল্পীরা তাদের শিল্পকর্ম দিয়ে কথা বলতে পারে। তাদের তুলির আঁচড় দিয়ে সেটা তুলে ধরতে পারে। একটা চিত্রকর্ম একটা ইতিহাস। চিত্রকর্ম ইতিহাস বিকৃতি থেকে আমাদের বাঁচাতে পারে।
তিনি আরও বলেন, চিত্রকর্মগুলো শুধু ছবি না, সেগুলো রাজনৈতিক ইতিহাসের সাক্ষী। সমসাময়িক সংস্কৃতির, জনগণের চিন্তা-চেতনার সাক্ষী সেসব। কাজেই এখনকার শিল্পীরা যে কাজগুলো করবেন, সেগুলো যেন সমাজের প্রতিবিম্ব হয়। সেসব যেন একপেশে হয়ে না যায়। ইতিহাস বিকৃতি রোধের মাধ্যম হিসেবে আপনার শিল্পকর্ম কাজ করবে। আপনার আঁকা ছবি বলে দেবে সময়ের চিত্র। এ সময় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বছরে একবার হলেও শিক্ষকদের শিল্পকর্ম নিয়ে প্রদর্শনী আয়োজনের পরামর্শ দেন তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. ইকবাল শাহীন খান এবং বরেণ্য শিল্পী মর্তুজা বশীরের মেয়ে মুনিজা বশীর। অতিথিদের বক্তব্য শেষে শিল্পী রশিদ চৌধুরী আর্ট গ্যালারিতে শিক্ষার্থীদের শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার। এ সময় শিক্ষার্থীদের পেইন্টিং, প্রিন্ট মেকিং, ভাস্কর্য ও এপ্লাইড আর্ট বিষয়ক বিভিন্ন শিল্পকর্ম ঘুরে দেখেন তিনি।
উদ্বোধনের পর ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে প্রদর্শনী। ২০২৩ সালের এই বার্ষিক প্রদর্শনীতে পেইন্টিং, প্রিন্ট মেকিং, ভাস্কর্য ও এপ্লাইড আর্ট বিষয়ক শিক্ষার্থীদের ২৯৫টি শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে। চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী নাজনীন আহমেদ এবারের প্রদর্শনীতে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার হিসেবে শিল্পী রশিদ চৌধুরী সম্মাননা পেয়েছেন।
এছাড়াও শিল্পী মর্তুজা বশীর সম্মাননা পেয়েছেন ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী পল্লবী দাশ, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সম্মাননা পেয়েছেন ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অজয় ত্রিপুরা, শিল্পী কামরুল হাসান সম্মাননা পেয়েছেন ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নূসরাত আলম, শিল্পী নভেরা আহমেদ সম্মাননা পেয়েছেন ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আজরোফ আল সামি। বর্ষসেরা শিল্পকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন আরও ছয় শিক্ষার্থী।
পূর্বকোণ/ইব