চট্টগ্রাম নগরীর একটি কলেজের শিক্ষার্থী জাবের হোসেন। কয়েকদিন আগে বাসায় ফিরছিলেন একেখানের এ বাসিন্দা। পথিমধ্যে নিজ এলাকার গলিতে আসতেই একটি কুকুর হঠাৎ তাড়া দিয়ে জাবের হোসেনের পায়ে কামড় দেয়। তাৎক্ষণাত স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে অদূরের ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেন এ শিক্ষার্থী।
শুধু জাবের হোসেন নয়, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালটিতে প্রতিদিনই কুকুর-বিড়ালসহ প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন অন্তত দশ থেকে পনের জন। এরমধ্যে শুধুমাত্র গেল বছরেই ছয় হাজারের বেশি মানুষকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এ হাসপাতালটিতে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় কুকুর-বিড়াল এবং অন্যান্য প্রাণীর আক্রমণের শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি। এ দুই প্রতিষ্ঠানের তথ্য- এক বছরেই চট্টগ্রামে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার মানুষ শিকার হয়েছেন প্রাণীর আক্রমণের। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রমণের শিকার কুকুরের।
বিআইটিআইডি’র ক্লিনিক্যাল ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘প্রতিদিনই কমবেশ প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়ে রোগীরা সেবা নিতে আসেন। সরকারিভাবে জলাতঙ্ক টিকা ও চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। শুধু চট্টগ্রাম নয়, অন্য জেলার রোগীরাও এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। গত বছরে ৬ হাজারের বেশি রোগীকে সেবা দেয়া হয়েছে। ’
এদিকে, চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার প্রাণী আক্রমণের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি আক্রমণের শিকার হয়েছেন বাঁশখালী উপজেলায়। এ উপজেলায় ৮৬০ জন কুকুরের এবং ৫৫৫ জন বিড়াল ও অন্যান্য প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, জলাতঙ্ক এখন পূর্বের মতো ভয়ের বিষয় নয়, বরং মানুষ সচেতন হলেই এর সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। জলাতঙ্ক একদিকে শতভাগ বিপজ্জনক হলেও তা শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য। আক্রান্তের পরপর চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক যথাসময়ে এন্টিরেবিস টিকা প্রদান করে প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধ নিশ্চিত করা যেতে পারে।
পূর্বকোণ/পিআর