যদি আমাকে মরতেই হয়
তোমাকে বাঁচতেই হবে
যেন বলতে পারো আমার গল্প
যেন আমার সবকিছু বেচে
এক টুকরো কাপড় আর দড়ি কিনে
একটা ঘুড়ি বানাতে পারো
যেন গাজার কোথাও
সব হারানো একটা শিশু
ঘুড়িটা দেখে মুহূর্তের জন্য ভাবে
ওখানে একজন ফেরেস্তা আছে
যে ভালোবাসা আনবে এই পৃথিবীতে।
যদি আমাকে মরতেই হয়
এই মৃত্যু যেন আশা আনে
এই মৃত্যু যেন আশার গল্প হয়।
(২০১১ সালে লেখা প্যালেস্টাইনি কবি রিফাত আলারীর কবিতার ভাবানুবাদ।)
রিফাতের জন্ম ১৯৭৯ সালে। গাজায় বড় হওয়া রিফাত জন্ম থেকে ইসরায়েলি বর্বরতা দেখেছেন, প্রতিবাদ করেছেন কলম দিয়ে। তিনি ভাবতেন প্রতিবাদের একটা শক্তিশালী উপায় হল কলম। ইংরেজি এবং সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছেন, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ গাজার প্রফেসর হয়েছেন। ২০২৩ এর ৭ অক্টোবরের পর তিনি ইসরায়েলি নৃশংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। তাঁর উপর মৃত্যুর হুমকি আসতে থাকে। তিনি বুঝতে পারেন তাঁর মৃত্যু আসন্ন। তিনি কবিতাটা সামাজিক মাধ্যমে আবার প্রকাশ করেন ৫ ডিসেম্বর। আশ্রয় নেন বোনের বাসায়। ভেবেছিলেন, বোনের বাসায় তো আর ইসরাইলিরা আক্রমণ করবে না। ৬ ডিসেম্বরের তারিখ ইসরাইলিরা তাঁর বোনের বাসা গুঁড়িয়ে দেয় নিখুঁত বোমায়। রিফাতের সাথে শহীদ হন রিফাতের ভাই, বোন এবং বোনের দুই শিশু সন্তান।
রিফাত চেয়েছিলেন তাঁর মৃত্যু যেন আশা আনে – শান্তির আশা, ভালোবাসার আশা।
রিফাত আর নেই। করুণ আকুতি চোখে আকাশ পানে চেয়ে ভালোবাসার আশা করা হাজার হাজার শিশু আর নেই।
আমরা আছি। অসহায় লাগে।
লেখক: নিউজিল্যান্ড প্রবাসী চিকিৎসক