আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের মারধর করার অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) সুপারিশ করা হয়েছে।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের সচিব বরাবরে এক প্রতিবেদন এ সুপারিশ পাঠিয়েছেন ওই আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম অর্থ ঋণ আদালতের বিচারক যুগ্ম জেলা জজ মুজাহিদুর রহমান। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম।
ইসিতে দেওয়া নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ৩০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের সমর্থক ও অনুসারীরা জোরারগঞ্জ থানার ৬ নম্বর ইছাখালী ইউনিয়নের ৯নম্বর চরশরত এলাকায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে প্রতীক ভাঙচুর, পোস্টার ছেড়া ও কর্মী-সমর্থকদের মারধর করা হয়েছে মর্মে ৩১ ডিসেম্বর লিখিত অভিযোগ দেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহবুব রহমান রুহেল। এ বিষয়ে অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান গত ২ জানুয়ারি সরেজমিনে পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পান।
কমিটির চেয়ারম্যান সরেজমিনে জানতে পারেন, ওইদিন স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ঘটনাস্থলের আশপাশের লোকালয়ে গণসংযোগ করেন। গণসংযোগ শেষে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী ক্যাম্পে উপস্থিত সমর্থকদের উদ্দেশ্যে উসকানিমূলক বাক্য বিনিময় করেন। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার ভয়ভীতি দেখান। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের একপর্যায়ে গিয়াস উদ্দিনের অতি উৎসাহী সমর্থকরা নৌকার সমর্থক সবুজ চন্দ্র দাশ, আকাশ রায়কে মারধর করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে ভয়ভীতি সঞ্চার হয়, যা সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর ১১ (ক) ধারার পরিপন্থি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঘটনাস্থল ৬নম্বর ইছাখালী ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের চরশরত এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা হিন্দু ধর্মালম্বী এবং দরিদ্র জেলে ও কৃষক। এ ঘটনার কারণে এ প্রান্তিক শ্রেণির ভোটাররা নির্বাচন পরবর্তী নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের সমর্থকদের এরূপ সহিংস আচরণের কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক ভোটার ভোটদানে বিরত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ওই ভোটকেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে এবং ফৌজদারি অপরাধ সংঘটনের দায়ে প্রচলিত আইনে মামলা দায়ের করা যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়।
পূর্বকোণ/এএইচ