চট্টগ্রাম বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪

ফাঁকা মাঠে কীটনাশক ছিটিয়ে অর্ধশত পাখি নিধন

লামা-আলীকদম সংবাদদাতা

২২ ডিসেম্বর, ২০২৩ | ৭:১৮ অপরাহ্ণ

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় ফাঁকা ধানের মাঠে কীটনাশক ছিটিয়ে অর্ধশতাধিক পাখি নিধন করেছে দুর্বৃত্তরা।

 

শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) ভোরে উপজেলার ২ নম্বর চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ঞোমং হেডম্যানের সদ্য কেটে নিয়ে যাওয়া আমন ধানের ক্ষেতে এই ঘটনা ঘটে।

 

স্থানীয়রা জানান, ভোরে ওদিকে গেলে ধানের ক্ষেতে অর্ধ শতাধিক পাখি মরে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কে এই কাজ করেছে জানি না। তবে কাজটা ভালো হয়নি। অবলা প্রাণিগুলো কি অপরাধ করেছে?

 

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বান্দরবানের নির্বাহী সদস্য ও চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের বাসিন্দা কবি এমডি জিয়াবুল বলেন, শীতকাল এলে আমাদের দেশে এক শ্রেণির মানুষ পাখি শিকারে তৎপর হয়ে ওঠে, যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। বিষয়টি আমাকে ব্যথিত করেছে। বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। ঞোমং হেডম্যানের ধানের জমিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে মরে পড়ে আছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখিগুলো। ব্যথিত মনে আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট করি। পাখি নিধনের সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে আমি লামা বন বিভাগ ও আলীকদম থানাকে অনুরোধ করছি।

 

লামা বন বিভাগের আলীকদম তৈন রেঞ্জ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, পাখিরা আমাদের পরিবেশের এক বড় সম্পদ। তারা শুধু পরিবেশের সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে না, বনের খাদ্যশৃঙ্খলে স্বাভাবিক ধারা বজায় রাখা, ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ, উদ্ভিদের পরাগায়ন ও বীজের বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে পাখির। এরা জলজ পোকা, ধানের পোকা খেয়ে কৃষকের উপকার করে থাকে। পাখি প্রকৃতি ও মানুষের পরম বন্ধু। পাখির ডাকে ভোর হয় আবার পাখির কলকাকলিতে পৃথিবীর বুকে সন্ধ্যা নেমে আসে। কোনো কোনো পাখি প্রহরে প্রহরে ডেকে আমাদের প্রকৃতির ঘড়ির কাজ করে থাকে। তাই যে করেই হোক পাখি বাঁচাতে হবে। যারা পাখি নিধন করছেন, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

 

শীত এলেই অতিথি পাখি বা পরিযায়ী পাখি জীবন বাঁচানোর জন্য বাংলাদেশেও আসে। কিন্তু প্রতিবছর দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে যে পাখিগুলো আমাদের দেশে বাঁচতে আসে, সেই পাখিদের নিরাপত্তা সরকারিভাবে দেওয়ার বিধান থাকলেও কার্যত তা হয় না। শিকারিদের শ্যেনদৃষ্টির কারণে প্রতিবছর এসব অতিথি পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে।

 

‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ অনুযায়ী পাখি শিকার, হত্যা, আটক ও ক্রয়-বিক্রয় দণ্ডনীয় অপরাধ। এর শাস্তি দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ২ লাখ টাকা জরিমানা। কিন্তু এর প্রয়োগ আমরা খুব একটা দেখতে পাই না বললেই চলে। তবে আইনের সঠিক প্রয়োগ, জনসচেতনতা এবং অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে বাংলাদেশও হতে পারে পাখির বড়ো অভয়াশ্রম।

 

পূর্বকোণ/রফিক/জেইউ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট