চট্টগ্রাম শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

চট্টগ্রাম বিভাগ : ৪ কারণে বেড়েছে সাক্ষরতার হার

মরিয়ম জাহান মুন্নী 

৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ১২:১৯ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় সাক্ষরতার হার বেড়েছে। এ বিভাগে সাক্ষরতার হার এখন ৭৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ। বিভাগের মধ্যে এগিয়ে আছে চট্টগ্রাম জেলা। এ জেলায় সাক্ষরতার হার ৮০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। যা ২০১১ সাল থেকে ২৮ দশমিক ১৬ শতাংশ বেড়েছে। জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ সালের তথ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জেলায় সাক্ষরতার হার বাড়ার চারটি কারণ উল্লেখ করেছেন শিক্ষাবিদরা। এসব কারণ হচ্ছে-বাবা-মায়ের মধ্যে সন্তানদের নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে। ছেলে-মেয়েতে ভেদাভেদ কমেছে। নারীরা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়ায় নারী শিক্ষার হার বেড়ে গেছে। এছাড়া মেয়েরা কর্মমুখী হয়েছেন।

চট্টগ্রাম জেলায় সাক্ষরতার হারে এগিয়ে আছে পুরুষ। নারীরা রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে। তবে পিছিয়ে নেই হিজড়া জনগোষ্ঠীও। এজেলায় পুরুষ সাক্ষরতার হার এখন ৮২ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং নারী সাক্ষরতার হার ৭৯ দশমিক ০৭ শতাংশ। এছাড়া হিজড়া জনগোষ্ঠীর সাক্ষরতার হার ৫২ দশমিক ২৫ শতাংশ।

জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ সালের তথ্যে দেখা যায়, গ্রামের চেয়ে এগিয়ে আছে শহরাঞ্চল। শহরাঞ্চলে বর্তমানে পুরুষ সাক্ষরতার হার ৮২ শতাংশ ৪০ শতাংশ, নারী ৭৯ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং হিজড়া ৫১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ১১ বছর আগে পুরুষ ছিল ৬৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ ও নারী সাক্ষরতার হার ছিল ৬১ দশমিক ২১ শতাংশ। পুরুষের সাক্ষরতার হার বেড়েছে ১৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং নারী সাক্ষরতার হার বেড়েছে ১৮ দশমিক ০৯ শতাংশ।

একইভাবে চট্টগ্রাম জেলার আওয়াধীন গ্রামাঞ্চলে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। এরমধ্যে পুরুষ ৭৫ দশমিক ১৪ শতাংশ। ১১ বছর আগে এ জেলার গ্রামাঞ্চলে পুরুষ সাক্ষরতার হার ছিল ৪৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এসময়ের মধ্য পুরুষ সাক্ষরতার হার বেড়েছে ২৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ পর্যন্ত। এছাড়া নারী সাক্ষরতার হার ৪৮ দশমিক ৫২ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ হয়েছে।

শিক্ষাবিদ প্রফেসর হাসিনা জাকারিয়া বেলা বলেন, সাক্ষরতার হার বেড়েছে মূলত অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ায়। পাশাপাশি নারীরা তাদের শিক্ষা ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়েছেন। মা বাবারা এখন তাদের সন্তানদের ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানীসহ বড় বড় পদের জন্য তৈরি করতে চান। ছেলে মেয়েতে ভেদাভেদ কমেছে। এসব কারণেই দেশে সাক্ষরতার হার বেড়েছে। যদিও এখনো পুরুষ এগিয়ে, তবে দেশের বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল দেখলে বুঝা যায় নারীরা কতটা এগিয়ে আছে।  অল্প সময়ের মধ্যে নারীরা পুরুষদের ছাড়িয়ে যাবে। এসময় খুব একটা দূরে নয়। কারণ যেকোনো অসমতা সমান সমান হতে সময় লাগে।

আগ্রাবাদ মহিলা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ, শিক্ষাবিদ আনোয়ারা আলম বলেন, সাক্ষরতার হার বাড়ার একটি বড় কারণ হচ্ছে চট্টগ্রাম জেলার শহরটি দেশের দ্বিতীয় রাজধানী। বন্দর নগরীখ্যাত এ শহরে কর্মের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষ বসবাস করে। তাদের মধ্যে জীবনমান উন্নয়নের জন্য শিক্ষার গুরুত্ব বেশি দেখা যায়। এ কারণেই চট্টগ্রামে শিক্ষার হার বেড়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দাদের মধ্যে এখনো শিক্ষার হার কম। তবে এক্ষেত্রেও উন্নতি হয়েছে বলতে হবে। চট্টগ্রামের স্থানীয়দের মধ্যে কিছু ধর্মীয় গোড়ামির কারণে একটা সময় নারীরা শিক্ষায় পিছিয়ে ছিল।

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট