চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

সীমান্তে সন্ত্রাস-চোরাচালান বন্ধের অঙ্গীকার বিজিবি-বিজিপির

টেকনাফ সংবাদদাতা

২৫ মে, ২০২৩ | ৯:৫৬ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের টেকনাফে বিজিবি-বিজিপির মধ্যে দুই দিনব্যাপী রিজিয়ন পর্যায়ের পঞ্চম সমন্বয় সীমান্ত সম্মেলন শেষ হয়েছে। পরে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ জানানো হয়েছে। এতে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, মাদক চোরাচালান ও আন্তঃসীমান্তের সন্ত্রাসবাদ দমনসহ উভয় দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ১০টায় টেকনাফের হোটেল সেন্ট্রাল রিসোর্ট হলরুমে সম্মেলন ২য় দিনের মতো অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজম-উস-সাকিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ১৫ সদস্য প্রতিনিধি দল এবং মায়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) রিজিয়ন-১ এর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হ্টট হ্ণউইনের নেতৃত্বে ১৬ সদস্য প্রতিনিধি দলের মধ্যে আলোচনা সম্পন্ন হয়।

 

বৈঠকে উভয় দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি আলোচনার পর উভয় প্রতিনিধি দল সীমান্ত চুক্তি স্মারকে স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলে বিজিবি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ছাড়াও স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

 

দুপুর ১২টার দিকে সীমান্ত সম্মেলন শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজম-উস-সাকিব এবং বিজিপির রিজিয়ন-১ এর কমান্ডার পুলিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হ্টট হ্ণউইন উপস্থিত হন।

 

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্ত চুক্তি-১৯৮০ অনুযায়ী সীমান্ত সুরক্ষার জন্য এটি একটি নিয়মিত বৈঠক। যা উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সম্মতিতে নির্দিষ্ট বিরতিতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ২দিন ব্যাপী এই সম্মেলন দুটি বন্ধুপ্রতীম সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে অত্যন্ত আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সম্মেলনে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। এর মাধ্যমে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে উভয় প্রতিনিধি দল সম্মিলিতভাবে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। ভবিষ্যতে নিয়মিত বিরতিতে এরূপ সভা আয়োজন, নিবিড় যোগাযোগের মাধ্যমে পারস্পরিক আস্থা, নির্ভরতা, সহযোগিতার ক্ষেত্র বৃদ্ধির লক্ষ্যে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে। এই সম্মেলনে সীমান্ত সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ, আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস দমন ও দুষ্কৃতিকারীদের প্রতিহতকরণ, মাদকদ্রব্য চোরাচালান প্রতিহতকরণ, (যেমন ইয়াবা ও আইস) সীমান্তে গুলিবর্ষণ, সীমান্তে আইইডি স্থাপন, অসতর্কতা/ভুলবশতঃ অথবা ঝড়ের কবলে পড়ে আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করে মায়ানমারের অভ্যন্তরে প্রবেশকৃত বাংলাদেশী নাগরিকদের সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী দ্রুত ফেরত প্রদানের বিষয়টি ত্বরান্বিত ও সহজীকরণ, উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ত্বরিত যোগাযোগ স্থাপনে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে যৌথ সমন্বিত টহল পরিচালনা ও সীমান্ত পিলার পরিদর্শনসহ নানাবিধ বিষয়ের উপর বিস্তারিত ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

 

বাংলাদেশের আহবানে এই প্রথম দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য বিজিপি প্রতিনিধিদলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান বিজিবির নাজম-উস-সাকিব। তিনি এরূপ সম্মেলনের মাধ্যমে দুটি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার ধারা অব্যাহত এবং প্রতিবেশী এই দুটি বাহিনীর সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় উন্নীত যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে ও পারস্পারিক সহযোগিতায় ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করেন।

 

এর আগে বুধবার সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য মিয়ানমার প্রতিনিধিদল নৌপথে শাহপরীরদ্বীপ জেটিঘাট হয়ে টেকনাফে আসে। মিয়ানমার প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে পৌঁছালে বিজিবি’র পক্ষ থেকে তাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভ্যর্থনা জানানো হয়। এ সময় বিজিবি’র একটি সুসজ্জিত দল মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের প্রধানকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে।

 

পূর্বকোণ/জেইউ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট