চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

আজ মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর

রায়হান আজাদ

৬ এপ্রিল, ২০২৪ | ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ

আজ বহুল প্রতীক্ষিত লাইলাতুল কদর তথা কদরের রাত। এ রাতে আল্লাহ পাকের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ রাত এত বেশি ফজিলত ও বরকতময় যে, যার তুলনা তামাম মাখলুকাতের আর কোন কিছুর সাথে হয় না। এ রাতের সত্যায়নে সুরা কদর ছাড়াও সুরা দোখানে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “হামীম, শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের। আমি একে (কুরআন শরীফ) নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে,আমিই প্রেরণকারী। আপনার পালনকর্তার পক্ষ হতে রহমত স্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ” – (সুরা আদ-দোখান ১-৬)।

 

হাদিস শরীফে রেওয়ায়েত হয়েছে,“রাসুল (সা.)’র স্ত্রী হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা একবার নবীজীর খেদমতে আরজ করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ক্বদরের রাত তো মর্যাদার রাত। একটু বলেন কিভাবে এ রাতে প্রার্থনা করবো? জবাবে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, হে আয়েশা! আল্লাহর দরবারে অশ্রু সজল নয়নে কায়মনোবাক্যে দু‘আ করবে-“আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন করীম,তুহিব্বুল আফওয়া, ফা‘ফু আন্নি”- অর্থ : হে আল্লাহ আপনি তো মহান ক্ষমাশীল, ক্ষমা করাকে পছন্দ করেন। সুতরাং আমাকে ক্ষমা করুন।

 

আল্লাহর কাছে অঝর নয়নে কান্না করে তাওবা-ইসতিগফারের মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নিতে হবে। তবে সবসময়ের জন্য মনে রাখতে হবে, এ রাতের যাবতীয় ইবাদত কিন্তু সুন্নাত-নফল পর্যায়ের- এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কোন অবকাশ নেই। কিন্তু জীবনের কোন সময়েই যেন কোন মুসলমান ফরজ ত্যাগ না করে এবং হালাল ছাড়া আর কিছু গ্রহণ না করে সে ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, যার দৈনন্দিন ফরজে যথাযথ গুরুত্ব নেই এবং যিনি হালাল খাবার খান না, আল্লাহ পাক তার কোন আমলই গ্রহণ করেন না। এ রাতে ফেরেশতারা রহমতের সাওগাত নিয়ে মুসলমানের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ালেও যারা মুশরিক, যাদুকর, নেশাখোর, ব্যভিচারী, মা বাবার অবাধ্য, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী, কৃপণ, খুনী ও ঘুষখোরের ধারে কাছেও যান না।

 

আমাদের দেশে দেখা যায়, অনেকে এ রাতে আতশবাজি, আড্ডাবাজি ও শহরের অলিগলি ঘুরাফিরা করে সময় কাটায়, ঘরে ঘরে হালুয়া-রুটি ও হরেক রকমের খাদ্য ব্যঞ্জনার আয়োজন করা হয়, মসজিদ-মাজারে আলোকসজ্জা, কবর-মাজার ঘিরে মোমবাতি প্রজ্বলন,আগরবাতি জ্বালানো প্রভৃতি কর্মকান্ড ইসলাম সমর্থন করে না এমনকি এসবের অনেকগুলো শিরক-বিদআতের পর্যায়ে পড়ে।

 

আসুন, অত্যন্ত ভক্তি ও শ্রদ্ধা সহকারে সারারাত নফল ইবাদতের মাধ্যমে হাজার মাস থেকে শ্রেষ্ঠ রাত্রি লাইলাতুল ক্বদরের ফজিলত অন্বেষণ করি। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের হৃদয়কে ইবাদতের প্রতি রুজু করে দিন। আমিন।

পূর্বকােণ/এসএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট