
দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে সামুদ্রিক পরিবেশের ভারসাম্য নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। প্রজনন মৌসুমের শুরুতেই চলতি মাসে একের পর এক সামুদ্রিক মা কচ্ছপ ভেসে আসার ঘটনায় বিপন্ন এই প্রাণীর নিরাপত্তা ও সংরক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চলতি ডিসেম্বর মাসেই সেন্টমার্টিনদ্বীপের সমুদ্র সৈকতে মোট ১১টি সামুদ্রিক মা কচ্ছপ ভেসে এসেছে। এর মধ্যে ৮টি মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে এবং ৩টি মা কচ্ছপ জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। জীবিত কচ্ছপগুলো বর্তমানে সংরক্ষণে রাখা হয়েছে।
সেন্টমার্টিনদ্বীপের ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফয়েজুল ইসলাম জানান, মৃত কচ্ছপগুলোর কয়েকটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মাছ ধরার জাল, নৌযানের প্রপেলারের আঘাত কিংবা প্রতিকূল সামুদ্রিক পরিবেশের কারণে এগুলো আহত হয়ে তীরে ভেসে আসে এবং পরে মারা যায়।
সেন্টমার্টিনের পরিবেশকর্মী আবদুল আজিজ বলেন, ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সামুদ্রিক কচ্ছপের প্রজনন ও ডিম পাড়ার মৌসুম। এ সময় মা কচ্ছপগুলো উপকূলের কাছাকাছি চলে আসে। অবৈধ জাল ব্যবহার ও নৌযানের অনিয়ন্ত্রিত চলাচলের কারণে প্রতিবছর সেগুলো মৃত্যুর মুখে পড়ে। চলতি ডিসেম্বরের শুরু থেকেই সেন্টমার্টিনের বিভিন্ন বালিয়াড়িতে এক থেকে দুইদিন পরপর মা কচ্ছপ ভেসে এসেছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি এইচএম এরশাদ বলেন, সেন্টমার্টিনসহ দেশের উপকূলীয় এলাকায় সামুদ্রিক কচ্ছপ সংরক্ষণে নিয়মিত টহল, দ্রুত উদ্ধার ব্যবস্থা এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমামুল হাফিজ নাদিম বলেন, সেন্টমার্টিন সমুদ্র সৈকতে মৃত ও জীবিত কচ্ছপ ভেসে আসার বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এসেছে। জীবিত উদ্ধার হওয়া কচ্ছপগুলো নিরাপদ স্থানে রেখে শারীরিক অবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সুস্থ হলে এদের আবার গভীর সমুদ্রে অবমুক্ত করা হবে। মৃত কচ্ছপগুলো মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়েছে।
পূর্বকোণ/ইবনুর